Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত, পর্যটন শিল্প জোরদার করতে সরকারে আহ্বান
  2015-08-21 19:39:49  cri

সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় ছড়িয়ে পরা মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রিত। জনসাধারণ এখন স্বাভাবিক দৈনন্দিন কার্যক্রম, অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও বিনোদন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিন্তে চালু করতে পারে।

মার্স ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হোয়াং কিও-আহন।

দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ মনে করছে, প্রধানমন্ত্রী হোয়াং কিও-আহনের এ বক্তব্য হলো মহামারী শেষ হওয়ার ঘোষণা। গত ২৭ জুলাই সর্বশেষ সন্দেহভাজন রোগীকে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সরকার পরিচালিত ১৫টি হাসপাতাল থেকে সব সন্দেহভাজন রোগীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় পরবর্তী ২৩ দিনে নতুন কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় যে, ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ হয়েছে এবং এটি নির্মূল হয়েছে।

মহামারী পরবর্তী দু'মাসেরও বেশি সময়ে দেশটির পর্যটন শিল্প ও অভ্যন্তরীণ বাজার গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক সময়ের জনপ্রিয় সমৃদ্ধ সিউলের মিয়েংদোং সড়ক বর্তমানে জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে। শুল্কমুক্ত দোকানে কেনাকাটা করা বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা হঠাত্‌ করে কমে গিয়েছে। পর্যটন শিল্প নির্ভর জেজু দ্বীপের পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। জেজু দ্বীপের গভর্নর ওয়ান হিরিং বলেন, বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা আগের তুলনায় ১০-২০ শতাংশ কমে গেছে। আগে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মানুষ এখানে আসতো। এখন তা এক হাজারের কম। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভ্রমণকারী আছে। কিন্তু গ্রুপ ভ্রমণ কমে গেছে।

মহামারীর কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বাইরে থেকে মানুষ আসা একদম কমে গেছে। স্কুলও একসময় বন্ধ হয়ে যায়। ক্যাটারিং, খুচরা-বিক্রয় এবং অবসর বিনোদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। সিউল শহরে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা করা এক বেকারি দোকানের মালিক বলেন, আগে ব্যবসাটা খুব ভালো ছিল। কিন্তু মহামারী শুরুর পর ব্যবসার পূঁজি রক্ষা করায় দায় হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মতো বেকারির দোকান ভাসমান মানুষের ওপর নির্ভর করে। ভালো লাগার কারণে তাত্ক্ষণিক কেনাকাটা করা লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু এখন বাহিরমুখী মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দোকানের কেনাকাটা ৩০ শতাংশ কমেছে।

অর্থনীতিকে বেগবান করার জন্য সরকার ৪০০ বিলিয়ন ওঁন (প্রায় ২২৪ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি) বাজেট বরাদ্দ করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের জন্য জরুরি সহায়তা তহবিল ঘোষণা করেছে। ভোগ্যপণ্য কেনাকাটায় আগ্রহী করার জন্য সিউল শহর বড় ধরনের পণ্যদ্রব্য প্রদর্শনী ও বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সিউল পৌর সরকার পর্যটন জোরদারে বহুমুখী বিকল্প-ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছে। বিকল্প-ব্যবস্থা অনুযায়ী, শহরে প্রচার খরচ হিসেবে সরকার আরো ১৬ বিলিয়ন ওঁন (প্রায় ৮.৮ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি) বাজেটের প্রস্তাব দেবে। মহামারীর কারণে কমে যাওয়া চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য সিউল মেয়র পার্ক ওয়ান সুন আগামী মাসের প্রথম দিকে চীন সফরের পরিকল্পনা করেছেন, যাতে মহামারী সংকট থেকে উঠে আসা সিউলকে পুনরায় চীনা মানুষের সামনে তুলে ধরা যায়। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য জেজু দ্বীপ মূল্য হ্রাসের হার বাড়িয়েছে। জেজু দ্বীপের গভর্নর ওয়ান হিরিং একটি দল নিয়ে দেশে-বিদেশে জনসংযোগ ও প্রচারণার কাজ চালাবেন। তিনি বলেন, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ সফর করে চীনের পর্যটন কর্তৃপক্ষ ও পর্যটন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি বাইদু ও ফিনিক্স নিউ মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রধান ওয়েব-সাইট এবং সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক দলের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রচার বাড়াবে।

সম্প্রতি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পর মানুষের আতঙ্কও কমে আসছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া চীনা পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়াগামী পেইচিংয়ের একজন নারী মিস লি বলেন, মনে হচ্ছে মহামারী চলে গেছে। গত মাসে এ অবস্থা খুব গুরুতর ছিল। কিন্তু এখন অনেক বন্ধু দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছে।

প্রেমা/তৌহিদ

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040