20150806ruby.m4a
|
গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমে বাচ্চারা সহজে যেসব রোগে আক্রান্ত হয়, সেগুলো হলো:
ঘামাচি:
গ্রীষ্মকালে মাত্রাতিরিক্ত গরমে শিশুরা নাজেহাল হয় ঘামাচির যন্ত্রণায়। মা-বাবাকে একটু বেশি যত্নশীল হতে হয় এ সময়। গরমে ঘামাচি থেকে বাঁচতে নিয়মিত শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে সে না ঘামে। ঘাম ও ধুলাবালি থেকে ঘামাচির জন্ম হয়। শিশুর ত্বক খুব কোমল, আর ঘামাচি এই সুযোগে সহজে আক্রান্ত করতে পারে তাকে। সকাল-বিকেল দু'বার গোসল করাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে স্কুল বা বাইরে থেকে ফিরেই গোসল যেন না করে। ঘাম শরীরে সঙ্গে সঙ্গে পানি দিলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। ঘাম মুছে একটু জিরিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। যতটা সম্ভব রোদে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে। ঘামাচির জন্য ঘামচিরোধক পাউডার বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারে। এ সময় এক মাস থেকে ছয় মাসের শিশুদের ডায়াপার না পরানোই ভালো। গরমে শিশুর বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে ভেজা ডায়াপার। ত্বকে র্যাশ ও হতে পারে এ থেকে। ডায়াপার পরালে খেয়াল করে বার বার বদলে দিতে হবে।
জলবসন্ত:
অতিরিক্ত গরমে শিশুর জলবসন্ত হতে পারে। এর আরেক নাম হচ্ছে চিকেন পক্স। ১ থেকে ৫ বছরের যে কোনো শিশু এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। চিকেন পক্স হলে শিশুকে পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করুন। সুতি কাপড় পরান, যাতে আরাম বোধ করে। এ ক্ষেত্রেও বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াতে হবে। আর কোনো অবস্থাতেই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করবেন না।
ফুসকুড়ি :
গরমে শিশুদের ক্ষেত্রে ফুসকুড়ি একটি পরিচিত সমস্যা। এটা সাধারণত ঘামাচি বা চামড়ার ওপরে লাল দানার মতো ফুসকুড়ি হয়ে থাকে। ফুসকুড়ি চুলকানোর কারণে শিশুকে অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিবার কাপড় বদলানোর সময় শিশুকে নরম ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে বেবি পাউডার লাগিয়ে দিন।
ডায়রিয়া:
গরমে যত্নের একটু হেরফের হলেই শিশুর ডায়রিয়া হয়। এ সময় তাকে বারবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। ডাবের পানিও খাওয়াতে পারেন। শিশুকে তরল খাবারও দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন শিশুর পানিশূন্যতা না হয়।
পেটের পীড়া
আমাদের বয়স্কদের মতো শিশুরাও অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম ইত্যাদি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের পেটের পীড়ার মূল কারণ হলো কোন খাবার হজম না হওয়া অথবা খাওয়ার অযোগ্য কোন জিনিস মুখে দেওয়া। শিশুদের একটি সাধারণ অভ্যাস হলো, যা সামনে পায় তাই মুখে দেয়। মেঝের ময়লা অথবা আবর্জনা মুখে গেলে ব্যক্টেরিয়ার সংক্রমণ থেকে পেটের সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় শিশুরা পর্যাপ্ত পানি, শাক-সবজি, ফলমূল ইত্যাদি খেতে চায় না এসব থেকে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জাতীয় সমস্যা হতে পারে।
সর্দি-কাশি :
গরমে ঘেমে শিশুর সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশু ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার শরীর মুছে দিয়ে কাপড় বদলে দিতে হবে। এ সময় ঠাণ্ডা লেগে শিশুর টনসিলের সমস্যাও হতে পারে। এই সমস্যা অল্প দিনেই সেরে যায়, তবে বেশিদিন গড়ালে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
এসব সমস্যা থেকে শিশুকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন-
এসময় শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
বিশেষ করে দুপুরের রোদে শিশুকে মোটেও বাইরে নেওয়া যাবে না।
শিশু ঘেমে গেলে ঘাম মুছে দিতে হবে। শরীরে ঘাম শুকিয়ে গেলে শিশুর ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
গরমের সময় যতটা সম্ভব শিশুকে নরম খাবার খাওয়াতে হবে।
শিশুর ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, যেন র্যাশ বা অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা না হয়।
গরমে শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। (ওয়াং তান হোং/তৌহিদ)