0731yin
|
বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ ভিয়েতনামের ঋণ, সরকারের গ্যারান্টি দেওয়া ঋণ এবং স্থানীয় সরকারের ঋণের মোট পরিমাণ প্রায় ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জিডিপিতে ঋণের মোট পরিমাণ ২০১১ সালের ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৪ সালের ৫৯.৬ শতাংশে পৌঁছেছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ভিয়েতনামের ঋণ বৃদ্ধির গতি বেশি দ্রুত। আশার দিক হলো, আন্তর্জাতিক ঋণ মানে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামের আন্তর্জাতিক ঋণ ২৭-২৮ শতাংশে ছিল। ফলে দেশটি গ্রিসের মতো গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েনি। পাশাপাশি অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক ঋণ রেয়াত সুবিধা পেয়েছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে ঋণের ছাড় ভিয়েতনামের অভ্যন্তরীণ বাজেটের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। আন্তর্জাতিক ঋণ ছাড়া অভ্যন্তরীণ অর্থ যোগানের জন্য ভিয়েতনাম সরকারকে সরকারি বন্ড বিক্রি করতে হয়েছে। যদিও অভ্যন্তরীণ ঋণের চাপ আন্তর্জাতিক ঋণের মতো এতো বেশি নয়, তবুও রাষ্ট্রীয় বন্ডের মেয়াদ কম হওয়ায় সরকারকে অন্যান্য পথ বেছে নিতে হয়। ফলে ভিয়েতনাম সরকারের বার্ষিক বাজেটে ঋণ একটি ভারি বোঝায় পরিণত হয়েছে।
এ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, এটি ভিয়েতনাম সরকারের ঋণ পরিশোধের সময় সংকট তৈরি করবে। বিশেষ করে ঋণের অর্থ দিয়ে অবকাঠামো খাতে পুঁজি বিনিয়োগ করার সময়। সুতরাং এই ঋণ পরিশোধ বাজেটের ওপর অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করবে।
তা ছাড়া, ভিয়েতনামের বাজেটে অন্তর্নিহিত ঋণ নিয়েও অনেক সমস্যা রয়েছে। বিশ্বব্যাংক উল্লেখ করেছে, এই ঋণের পরিমাণ খুবই বড়। যা সরকারের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। যদিও এসব বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে, তারপরও ভিয়েতনাম সরকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক বরাদ্দ দিয়ে ব্যাংক অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঋণ কাঠামো পরিবর্তনের পক্ষপাতি নয়।
বিশ্বব্যাংক আরো উল্লেখ করেছে, ভিয়েতনামের নীতি নমনীয়। পরিস্থিতি এখনও দেশটির সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। গ্রিস বা আইসল্যান্ডের মতো ঋণ সংকট সেখানে হবে না।
এর আগে হো চি মিন শহরে অনুষ্ঠিত 'ভিয়েতনাম সামষ্টিক অর্থনীতি ও আর্থিক বাজার বিষয়ক' সেমিনারে কোনো কোনো বক্তা বলেন, ভিয়েতনামের ঋণের বেশিরভাগই প্রধানত অভ্যন্তরীণ ঋণ। আন্তর্জাতিক ঋণের পরিমাণ খুব কম। সুতরাং ভিয়েতনাম অব্যাহতভাবে সংশ্লিষ্ট নীতিতে সমন্বয় করার মাধ্যমে আর্থিক পরিস্থিতি উন্নত করবে এবং বাজেটে ভারসম্যহীনতা দূর করার চেষ্টা করবে। ফলে ঋণ সংকটে পড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
প্রেমা/তৌহিদ