Web bengali.cri.cn   
কৃষিখাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীন ও কানাডা
  2015-07-13 17:54:12  cri

কৃষি খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে চীন ও কানাডা। দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫তম বার্ষিক উপলক্ষ্যে এ ব্যাপারে দু'পক্ষই আন্তরিক বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন দু'দেশের বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তারা।

কৃষিপণ্য, কৃষিখাদ্য, সামু্দ্রিক খাদ্য ও কোমল পানীয়র ক্ষেত্রে চীন হচ্ছে কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। ২০১৪ সালে এ ক্ষেত্রে দেশটির মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৬০০ কোটি ইউয়ান বা ৫৩০ কোটি কানাডীয় ডলার।

তবে, কানাডার কৃষিপণ্য উত্পাদক ও পরিবেশকদের সমিতি 'ক্রপলাইফ কানাডা'র ভাইস প্রেসিডেন্ট স্টিফেন ইয়ারো মনে করেন, চীন কানাডার কাছ থেকে আরও বেশি কৃষিপণ্য আমদানি করতে পারে। তিনি গত জুনে কানাডার একটি প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে চীন সফর করেন। সফরকলে তিনি বলেন, "আমরা চীনে কৃষিপণ্য রফতানি বাড়াতে চাই। আমাদের এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, চীনের সাথে বাণিজ্য বাড়ানো। আমরা কানাডার যেসব কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে চাই সেগুলোর মধ্যে আছে গবাদিপশু, মাংস, ব্লুবেরি, সয়াবিন ইত্যাদি।"

কানাডীয় প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন দেশটির কৃষি ও কৃষিখাদ্য উপমন্ত্রী আন্দ্রেয়া লিয়ন। সফরকাল ছোংছিংয়ে এক ভাষণেতিনিকানাডার কৃষিখাতের শক্তি-সামর্থ্য সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি জানান, তার দেশ চীনের বাজারের চাহিদা মেটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

১৭ জুন তিনি পেইচিংয়ে বৈঠক করেন চীনের উপ-কৃষিমন্ত্রী ছেন সিয়াওহুয়ার সঙ্গে। বৈঠকে সিয়াওহুয়া বলেন, তার দেশ কৃষিপ্রযুক্তি খাতে কানাডার সাথে সহযোগিতা বাড়াতে চায়। তিনি এসময় কৃষিখাতে টেকসই উন্নয়নের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, চীন দু'দেশের মধ্যে কৃষিখাতে পারস্পরিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারেও আগ্রহী।

'ক্রপলাইফ কানাডা'র ভাইস প্রেসিডেন্ট স্টিফেন ইয়ারোবলেন, কৃষিখাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে হলে উভয় দেশকেই পরস্পরের কৃষিনিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। তিনি বলেন,"কৃষিখাতে কানাডায় গত ২০ বছর ধরেই একটি নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত আছে। চীনেও তেমন ধারা নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা আছে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে দুই দেশকে পরস্পরের ভাল দিকগুলো গ্রহণ করতে হবে এবং একে অপরের কাছ থেকে শিখতে হবে।"

অবশ্য দু'দেশের মধ্যে কৃষিখাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর পথে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচে' বড় চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে জিএম খাদ্য ইস্যু। জিএম তথা জেনিটিকেলি মডিফায়েড পণ্যের ব্যাপারে চীন বরাবরই স্পর্শকাতর। দেশটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেবল জিএম তুলা ও জিএম পেপে উত্পাদনের অনুমতি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"আমি মনে করি চীনের আছে বিশ্বসেরা উদ্ভিদ প্রজনন-প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানী। শুধু কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই দেশটি খানিকটা পিছিয়ে আছে। কেন এমনটি ঘটছে আমরা তা বোঝার চেষ্টা করছি এবং জানার চেষ্টা করছি কীভাবে আমরা দেশটিকে এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারি।"

তিনি জানান, কানাডায় উত্পাদিত কৃষিপণ্যের অধিকাংশই জিএম পণ্য। কানাডার মানুষের খাদ্যের বড় অংশই জিএম খাদ্য। দেশটির মানুষ বহুবছর ধরে এসব খাবার খাচ্ছেন; কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, জিএম খাদ্যের উত্পাদন ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে কানাডার যে অভিজ্ঞতা আছে, তা চীনের সাথে ভাগাভাগি করা যায়। তিনি বলেন,"ভুল তথ্যের কারণে আমাদের কোনো কোনো ভোক্তাও একসময় জিএম খাদ্যের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। চীনে বর্তমানে ঠিক একই ধরনের ঘটনা ঘটছে।"

ইয়ারো বিশ্বাস করেন, জিএম খাদ্য সম্পর্কে অহেতুক ভয় দূর করতে সরকার পক্ষ, শিল্প-মালিক ও বিশেষজ্ঞদের সাথে সাধারণ মানুষের আরও কার্যকর যোগাযোগ হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন,"সাধারণ মানুষকে প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। চীনের ৫৩ শতাংশ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বাস করে। কৃষিপণ্য সম্পর্কে এসব মানুষকে পর্যাপ্ত তথ্য জানাতে হতে পারে।"

তিনি আশা প্রকাশ করেন, চীন অদূর ভবিষ্যতে জেএম প্রযুক্তিসহ কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার ও গবেষণায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশে পরিণত হবে। তিনি বলেন,"জিএম প্রযুক্তিসহ উদ্ভিদ প্রযুক্তি চীনের খাদ্যসমস্যা আরও কার্যকরভাবে সমাধান করতে পারে। এতে কৃষকরা বৈচিত্র্যময় কৃষিপণ্য উত্পাদনের সুযোগ পাবে এবং তাদের আয়ও বাড়বে।"(আলিম)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040