Web bengali.cri.cn   
চীনে কৃষিজমি সংরক্ষণে কঠোরতম আইন বাস্তবায়নের তাগিদ দিলেন প্রেসিডেন্ট সি
  2015-06-01 17:05:32  cri

চীনে কৃষিজমি সংরক্ষণে ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করা হয়েছে কঠোরতম আইন। ক্রমবর্ধমান নগরায়ণের ফলে যাতে মহামূল্যবান চাষযোগ্য জমির পরিমাণ 'বিপদসীমা'র নীচে চলে না-যায়, তা নিশ্চিত করতেই এ ব্যবস্থা। তবে, এ আইন প্রণয়নের সময় নগরায়ণের প্রযোজনীয়তাকেও অস্বীকার কর হয়নি। আর তাই গ্রহণ করা হয়েছে 'জমির বদলে জমি' স্কিম। এ স্কিমের আওতায়, অকৃষিকাজে কৃষিজমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হলে, স্থানীয় সরকারকে আগে সমপরিমাণ কৃষিজমি সৃষ্টি করতে হয়।

এমনি এক প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দেশের কৃষিজমি সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিদ্যমান কঠোরতম আইন বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,

'চাষযোগ্য কৃষিজমি দেশের সবচে মূল্যবান সম্পদ…যেভাবে আমরা পান্ডাকে রক্ষা করেছি, ঠিক সেভাবেই আমাদের কৃষিজমিকেও রক্ষা করতে হবে।'

তিনি 'জমির বদলে জমি' স্কিম বাস্তবায়নে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দেন। নগরায়ণের প্রয়োজনে এ স্কিমের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি এক্ষেত্রে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার নীতি গ্রহণ করতে স্থানীয় সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, নগরায়ণের সুবিধা কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে, সম্পত্তির ওপর তাদের অধিকার আরও পোক্ত করা হবে। বিশেষ করে 'জমির বদলে জমি' স্কিমের আওতায় তারা যেন লাভবান হতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। অকৃষিকাজে কৃষিজমির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের ওপরও প্রেসিডেন্ট সি গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংও ভূমির কার্যকর ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশের আবাদযোগ্য ভূমির পরিমাণ সীমিত। তাই এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি অকৃষিজমির দক্ষ ব্যবহারের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

এদিকে, চীনের ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় দেশের মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ সম্পর্কিত একটি 'রেড লাইন' লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে, ২০১৫ সালে দেশে কমপক্ষে ১৮২ কোটি 'মু' বা ১২ কোটি ১২ লাখ হেক্টর আবাদযোগ্য কৃষিজমি সংরক্ষণ করা হবে, ২০১৩ সালে যেখানে দেশে মোট আবাদযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ২০৩ কোটি 'মু'।

মন্ত্রণালয় বলছে, 'রেড লাইন' লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে রয়েছে চীন।

দেশের ১৩০ কোটি মানুষের খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে। চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমি বলছে, চলতি বছর খাদ্যশস্যের উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ০.৫ শতাংশ বাড়বে। অথচ ২০১৪ সালে ২০১৩ সালের তুলনায় খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছিল ০.৯ শতাংশ। খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার এ প্রবণতাকে সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে একাডেমি।

চীনের কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০১৪ সালে কৃষিজমির মান উন্নত করতে এবং শস্য-উৎপাদন বাড়াতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৪৫৯ কোটি ইউয়ান বা ৩৯০ কোটি ডলার। এ ছাড়া, সরকার চেষ্টা করছে কৃষিজমির পরিমাণ বাড়াতে এবং নগরায়ণের জন্য বরাদ্দকৃত জমির পরিমাণ কমাতে। ২০১৪ সালে নয়া আবাদযোগ্য কৃষিজমি সৃষ্টি করা হয় ৩৮ লাখ 'মু'। অন্যদিকে, একই বছর নগরায়ণের কাজে ব্যবহারের জন্য ভূমি বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬০ লাখ 'মু', যা আগের বছরের তুলনায় ২৪.৪ শতাংশ কম।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে, চীনের ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ও আবাগযোগ্য কৃষিজমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করছে। পাশাপাশি, ভূমিদূষণ কমিয়ে আনার ওপরও নজর রাখছে মন্ত্রণালয়। (আলিম)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040