0501yin02
|
তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে চীনের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি হলো তাঁর মনোযোগের প্রধান বিষয়। প্রতি বছর জাতীয় গণকংগ্রেসের অধিবেশনে সরকারি কার্যবিবরণী ঘোষণার সময় প্রকাশিত প্রবৃদ্ধির অভিষ্ট লক্ষ্য বিশ্ব গণমাধ্যমের মূল আকর্ষণীয় বিষয়ে পরিণত হয়। তিনি বলেন,
সর্বজনবিদিত কথা হলো, চীন দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং রপ্তানিকারক দেশ। দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বড় অংশ চীন থেকে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করার সময় আমি সবসময় দেশটির অর্থনৈতিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। তারা সবসময় বলতেন যে, ভবিষ্যতে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করবে, তা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
দুটো অধিবেশন শুরুর আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক বিশেষজ্ঞ পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, চলতি বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হবে ৭ শতাংশ। কিন্তু পাশাপাশি কিছু অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৭ শতাংশের কম হবে। মায়েং কিউংহওয়ান বলেন,
চলতি বছর চীনের দু'টো অধিবেশন পরিবেশ সমস্যা নিয়ে খবর প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার বাজার এবং ফোটোভোলটাইক বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ পরিবেশ সংরক্ষণ ক্ষেত্রের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম অল্প সময়ের মধ্যে লাফ দিয়ে বেড়েছে। বর্তমানে চীনের অর্থনীতির ভালমন্দ সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে। দক্ষিণ কোরিয়াকে চীনের অর্থনীতির ওপর মনোযোগ দিতে হয়। ভাগ্যক্রমে চলতি বছর সরকারি রিপোর্টে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৭ শতাংশ ধরা হয়েছে। এর আগে যারা ধারণা করেছিলো, তারা এখন নিশ্চিন্ত হতে পারে।
বর্তমানে অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার লেনদেন ও সহযোগিতা দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। দক্ষিণ কোরীয় গণমাধ্যমসহ বিদেশি গণমাধ্যমের জন্য সরকারের কার্যবিবরণী নিঃসন্দেহে চীনের অর্থনীতি, রাজনীতি, সামরিক, সংস্কৃতি ও সমাজসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। মায়েং কিউংহওয়ান বলেছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। সরকারের কার্যবিবরণীতে বিভিন্ন ধরনের নীতি ও পরিকল্পনা দক্ষিণ কোরিয়ার সব ক্ষেত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু সবচেয়ে প্রভাবিত ক্ষেত্র হলো অর্থনীতি। বিশেষ করে বাণিজ্যিক ক্ষেত্র। তিনি বলেন,
কিছু দিন আগে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ-বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনা সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক নীতি অনুসরণ ও কার্যকর করার পর্যায় পার হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের অর্থনীতি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিতে দেখলে, দু'দেশের একটি বড় অর্থনৈতিক বৃত্ত গড়ে তোলার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য প্রতি বছর চীনের দু'টো অধিবেশনে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিষয় হলো পররাষ্ট্রনীতি। মায়েং কিউংহওয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হলো দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী মিত্র দেশ। আর চীন হলো অন্যতম প্রতিবেশী বন্ধু দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা দুটোই দক্ষিণের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এছাড়া কোরীয় উপদ্বীপ সমস্যায় চীনের অবস্থানও দক্ষিণের মূল উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন,
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই চীনের পররাষ্ট্রনীতি এবং বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে দেশি-বিদেশি সংবাদদাতাদের দেয়া প্রশ্নের জবাবে দেখা গেছে, চলতি বছর চীনের বড় কূটনৈতিক কাঠামোতে আগের চেয়ে বড় ধরেনের পরিবর্তন হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দক্ষিণ কোরিয়া কিভাবে চীনের সঙ্গে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে, তা নির্ধারণ করা। তা ছাড়া আমার ব্যক্তিগত মনোযোগের বিষয় হলো, চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক। শুধুমাত্র আমি নয়, দক্ষিণ কোরিয়ার সব গণমাধ্যমই উত্তর কোরিয়ার গতিবিধি এবং চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্কের ওপর নজর রাখে। চলতি বছরের দুটো অধিবেশনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, 'চীন ও উত্তর কোরিয়া নেতাদের সাক্ষাত দু'পক্ষের সুবিধামতো সময়ে হবে। এ সম্পর্কে সবার ধারণা এক রকম নয়। কেউ কেউ মনে করেন, এটা শুধু নীতিগত কথা। কেউ ধারণা করছে, চীন ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের চলতি বছর সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে। আসলে কোনটা ঠিক। তা জানার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে।
প্রেমা/তৌহিদ