|
150411s.mp3
|
ক: বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো। বন্ধুরা, আপনারা জানেন যে, আমি কিছুদিন আগে অনেক অসুস্থ ছিলাম। সেসময় আমি সবসময় বাসায় বিশ্রাম নিয়েছি, বাইরে কোথাও যেতে পারি নি। তখন সময় কাটানোর জন্য বাসায় অনেক চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টরি দেখেছি। এদের মধ্যে একটি চলচ্চিত্র আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করে। মনে আছে আপনাদের? গত অনুষ্ঠানে আপনারা 'রেইনবো প্রমিজ' নামে একটি গান শুনেছেন, তাইনা? এ গান হচ্ছে আমার দেখা সেই চলচ্চিত্রের থিম সং। আজকে আমি আপনাদের কাছে এই চলচ্চিত্র সম্পর্কে কিছু বিষয় তুলে ধরবো।
ট: আরে, কি চলচ্চিত্র ভাই?
ক: এর নাম হচ্ছে 'সাটেক পালাই'।
ট: সাটেক পালাই! এর অর্থ কি ভাই?
ক: চীনের তাইওয়ান দ্বীপের একটি উপজাতির নাম হচ্ছে সাটেক পালাই। এর অর্থ হচ্ছে রিয়াল ম্যান।
ট: রিয়াল ম্যান? মজার তো । আসলে এ চলচ্চিত্রের মূল বিষয়টা কি?
ক: প্রায় বারো বছর ধরে এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়। একসাথে বিশ হাজার অভিনেতা-অভিনেত্রী এতে অংশ নেন।এর দু'টি অংশ। একটি অংশ হলো 'সান ফ্লাগ', আর দ্বিতীয় অংশটি হলো 'রেইনবো ব্রিজ'। দু'টি অংশই আসলে পৃথক দু'টি চলচ্চিত্র।
এর বিষয় হচ্ছে জাপানের আক্রমণের বিরুদ্ধে তাইওয়ান উপজাতির প্রতিরোধ যুদ্ধ। ১৯৩০ সালে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে জাপান তাইওয়ান দখন করে নেয়। পরে সাটেক জাতির মাত্র তিনশো গেরিলা যোদ্ধা জাপানের তিন হাজার সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
ট: কিভাবে ভাইয়া? তিনশো যোদ্ধা কিভাবে তিন হাজার সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন?
ক: ভাই,এর জন্য তীব্র সাহস দরকার, শক্তি দরকার, স্পিরিট দরকার। এই সাহস, শক্তি, স্পিরিট হচ্ছে বিশ্বের এক নম্বর শক্তি। সাটেক জাতির নেতা মোনালুটাও বলেন, সাটেক পালাই তাদের শরীর হারাতে পারে কিন্তু তাদের আত্মা সবসময়ই শক্তিমান।
ট: ভাই, একথা শুনে আমি ভীষণ অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। আসলে মানসিক শক্তিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। মানসিক শক্তি থাকলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। শারীরিক শক্তির চেয়ে মানসিক শক্তিটাই বেশি প্রয়োজন। ভাইয়া, আমিও সাটেক পালাই হতে চাই!
ক: অবশ্যই। আমরা যদি সাটেক পালাই অর্থাত রিয়াল ম্যান না হতে পারি, তাহলে জীবনের কোনো মানে আছে?
ভাইবোনেরা, আসলে এ চলচ্চিত্রটি একটি সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়। জাপানের নিষ্ঠুর শোষণ ও বৈষ্যম্যমূলক নীতিই এ যুদ্ধের কারণ। একটি কথা আছে, তুমি যেভাবে বিশ্বকে ব্যবহার করবে, বিশ্বও তেমনিভাবে তোমাকে তার প্রতিক্রিয়া দেখাবে। কিন্তু আসলে কোনো ঘৃণা প্রচারের উদ্দেশে এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়নি।
আমি বিশ্বাস করি সবাই এ চলচ্চিত্র দেখার পর সাটেক জাতির সাহস, স্পিরিট দেখে মুগ্ধ হবে। মানুষ মারা যাবে, কিন্তু কখনই তাদের স্পিরিট হারিয়ে ফেলবে না।
ভাইবোনেরা, এখন আমরা এ চলচ্চিত্রের একটি গান শুনবো, কেমন? গানের নান হচ্ছে 'ঘৃণা শেষ'। জাপানের সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় সাটেক গেরিলারা এ গান গাইতেন।
গানের অর্থ হচ্ছে: আমি রিয়াল ম্যান, আমি কে?
আমি তাদো মোনা, প্রকৃত যোদ্ধা।
যখন তোমার রক্ত বের হয়, তখন আমাদের ঘৃণা শেষ।
আমি প্রকৃত যোদ্ধা,
আমি সাটেক পালাই, প্রকৃত যোদ্ধা।
স্বাগত জানাতে চাই, তোমার আত্মা আমার বাসায় বাস করবে।
আমি ভাতের মদ ও খাবার তোমাকে দেবো,
আমাদের ঘৃণা শেষ।
যখন তোমার রক্ত বের হয়, তখন আমাদের ঘৃণা শেষ।
তুমিও আমাদের স্বজন হবে।
আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে এক সাথে থাকো, একসাথে আমাদের জাতির জনগণকে রক্ষা করো।
আমিও পূর্বপুরুষদের সাথে একসাথে থাকি, একসাথে আমাদের জাতির জনগণকে রক্ষা করি।
(গান)
ট: ভাইয়া, এ গান শুনে আমার সারা শরীরের রক্ত গরম হয়ে উঠেছে। আমি খুবই মুগ্ধ হয়েছি। আর সেই সঙ্গে সঙ্গে জীবনের জন্য নতুন প্রতিজ্ঞা করেছি।
ক: হ্যাঁ। তুমিও এখন সাটেক পালাই। তাহলে সাটেক পালাই, তুমি আমাদের ভাইবোনদেরকে আজকে কি ধরনের পরোটা খাওয়াবে?
ট: হাহা, আমি আজও স্যারের সাথে পেইচিংয়ে ঘুরে বেড়ানোর গল্প তুমিসহ শ্রোতাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, কেমন? (লাইভ)
ট: বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্তই। আপনারা যদি নিজেদের কোনো কথা আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান বা কোনো কথা বলতে চান, তাহলে আমাদের কাছে টেলিফোন করতে পারেন বা ইমেইল করতে পারেন। আমাদের টেলিফোন নম্বর হচ্ছে: ০০৮৬১০৬৮৮৯২৪২০ এবং আমাদের ইমেইল হচ্ছে enamulhoquetutul@yahoo.com.
ক: বন্ধুরা, এবার তাহলে বিদায়। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আপনারা সবসময়ই আমাদের মনে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের আত্মায়।
ট: হ্যাঁ বন্ধুরা, জীবনে মরণে আমরা কখনো পৃথক হবো না। চাই চিয়েন। (আকাশ/টুটুল)
