Web bengali.cri.cn   
যুদ্ধকবলিত ইয়েমেন থেকে চীনা নাগরিক ফিরিয়ে আনা
  2015-04-08 15:33:07  cri

প্রিয় শ্রোতা, এখন আমরা জিবুতিতে চীনা নাগরিকদের জন্য স্থাপিত অস্থায়ী আশ্রয়স্থলটি সম্পর্কে খানিকটা আলোচনা করবো।

৩১ মার্চ। জিবুতির রাজধানী জিবুতি সিটিতে খুব গরম পড়েছে। শহরের কেন্দ্রে চীন-নির্মিত স্টেডিয়ামে চীনা দূতাবাস ও চীনা কোম্পানিগুলোর স্বেচ্ছাসেবকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এদিন ভোরেই ইয়েমেন থেকে চীনা ফ্রিগেটযোগে জিবুতি এসে পৌঁছান শতাধিক চীনা নাগরিক। স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় জিবুতির ভিসা পেতে কোনো অসুবিধা হয়নি। চীনে ফিরে আসার জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা ইয়েমেন-ফেরত চীনা নাগরিকদের বিমান-টিকিট ক্রয়েও প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা দেয়। ইয়েমেন থেকে চীনা নাগরিক প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পরের কয়েকদিনের চিত্র অভিন্ন। স্টেডিয়ামে সবাই ব্যস্ত।

৪৩ বছর বয়সী লুও পিং হুই গত ৯ বছর ধরে ইয়েমেনে ব্যবসা করছেন। তিনি চে চিয়াং ইয়েমেন হুয়া লং আমদানি-রপ্তানি কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি জানালেন, যখন চীনা ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট আসার খবর শুনলেন, তখন তার মনের ভয় দূর হয়ে যায়। তিনি বলেন, "আমাদের ফ্রিগেট এসেছে। এখন আর কোনো ভয় নেই। গত কয়েক দিন রাতে আমি ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। বিমান আক্রমণের শব্দ শুনে বার বার ঘুম ভেঙেছে। ইয়েমেনের আকাশ অবরুদ্ধ। কোনো বিমান আসা-যাওয়া করছে না। এমনি এক প্রেক্ষাপটে আমাদের ফ্রিগেট এলো। এখান থেকে চীনাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজটি খুব সুশৃংখলভাবে চলেছে এবং স্বেচ্ছাসেবীরা প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে আমাদের যত্ন নিয়েছেন।"

লি চুং ইউরোও ২০ দিন আগে কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে ইয়েমেন আসেন। তখন তারা ভাবতেই পারেননি যে, কয়েকদিনের মধ্যেই যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। তিনি বিশ্বের নানান দেশে গিয়েছেন এবং আফগানিস্তান ও ইরাকের যুদ্ধও দেখেছেন। কিন্তু এবার ইয়েমেন থেকে তার ফিরে যাবার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তার চোখ অশ্রুতে ভরে গেল। তিনি বলেন, "অবশেষে আশ্বস্ত হলাম, আমি মাতৃভূমিতে ফিরতে পারবো। নিজের বাড়িতে ফিরে আসার অনুভূতি হতে লাগলো আমার। আমি অভিভূত হলাম। আমরা ফ্রিগেটে উঠলাম, সৈনিকরা আমাদের জন্য নিজেদের বিছানা ছেড়ে দেয়। তারা মেঝেতে ঘুমায়। নিজেরা খাওয়ার আগে আমাদের খাওয়ায়। আমাদের খাওয়া শেষ হলে তারা খেতে শুরু করে। আমি সত্যিই অভিভূত। আমি আমার দেশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।"

কান সু প্রদেশের তিং ইয়ং ইয়েমেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। তিনি বললেন, ফ্রিগেট আসার পর সবাই তাদের বিশেষ যত্ন নেয়। তিনি বলেন, "ফ্রিগেটে সৈনিক ও দূতাবাসের কর্মীরা আমাদের বিশেষ যত্ন নেন। খাদ্যসহ নানা বিষয়ে আমাদের সুবিধা দেন। খাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবকরা আমাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেন। বিশেষ এ পরিস্থিতিতে আমাদের যত্ন নেওয়ায় অনেক ধন্যবাদ।'

ছাং হুই হুং ইয়েমেনে মাসাজের কাজ করতেন। স্টেডিয়ামের অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে তার বিছানার পাশে সাংবাদিক একটি চীনা জাতীয় পতাকা দেখেন। ছাং হুই হুং বলেন, "এ অভিজ্ঞতা আমি সারাজীবন ভুলতে পারবো না। আমি চীনা মানুষ এবং আমি এ জন্য গর্বিত। মাতৃভূমিকে অনেক ধন্যবাদ। শিগগিরই তার কোলে ফিরে যাবো আমি।"

1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040