0327yin01
|
কোয়ালা হলো অস্ট্রেলিয়ার অনন্য একটি প্রাণী। লোমশ কোয়ালা আদুরে ও নিরীহ স্বভাবের। মানুষ কোয়ালাকে খুবই পছন্দ করে। কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তন এবং বাসস্থান সংকুচিত হবার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিলুপ্তপ্রায় কোয়ালার সংখ্যা দিন দিন কমছে। আরো কার্যকরভাবে কোয়ালা সুরক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা ইনফ্রারেড ক্যামেরা সংযুক্ত চালক-বিহীন বিমান দিয়ে অতিবিরল কোয়ালার সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি অধিকতরভাবে এ ধরনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর জীবনযাপনের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সাধারণত কোয়ালা ইউক্যালিপটাস গাছে বসবাস করে। তাদের খুঁজে পাওয়া অতটা সহজ নয়। গবেষকেরা সাধারণত ভূমি থেকে কোয়ালার সংখ্যা পর্যালোচনা ও পরিসংখ্যান করে আসছেন। কিন্তু এখন সময় এসেছে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের। কুইন্সল্যান্ড প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দল ইনফ্রারেড ক্যামেরা সংযুক্ত চালক-বিহীন বিমানে করে সুউচ্চ ইউক্যালিপটাস গাছে থাকা কোয়ালার অনুসন্ধান বেশ সহজেই করা যায়। তারপর কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে অন্যান্য প্রাণী থেকে কোয়ালার ছবি আলাদা করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রযুক্তিবিদ বলেন,
শুরুর দিকে ক্যামেরাটা কাজ করবে কিনা, এটা ছিল আমাদের সন্দেহ। কিন্তু যখন আমরা ছবিতে কোয়ালাকে গাছে দেখি এবং নিকটবর্তী পরিবেশের তুলনায় খুবই স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, তখন আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, আমাদের ধারণা পুরোপুরিভাবে ঠিক হয়েছে। আসলেই ক্যামেরার কাজ খারাপ না।
প্রাথমিক উড্ডয়ন পরীক্ষাটি কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের অস্ট্রেলিয়া চিড়িয়াখানার পাশের বনে করা হয়েছে। চালক-বিহীন বিমানে ইনফ্রারেড ক্যামেরা প্রাণীর শরীরের হিট ইমেজিং করার পাশাপাশি ছবিকে একই সময়ে গবেষণা কেন্দ্রে পাঠাতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার চিড়িয়াখানার একজন পশুচিকিত্সক মনে করেন, চালক-বিহীন বিমান দিয়ে আরো সঠিকভাবে কোয়ালার সংখ্যা হিসাব করার জন্য সহজ হবে। তিনি বলেন,
এটা বিপুল পরিমাণে শ্রমশক্তির অপচয় কমানোর পাশাপাশি কোয়ালার সংখ্যা অনুসন্ধানের কাজ সহজ করবে। এসব অঞ্চলে ঘনিষ্ঠ ঝোপঝাড় থাকার কারণে মানুষ এতে যাতায়াত খুবই কঠিন।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্য এবং নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে কোয়ালার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার কোয়ালা তহবিলের ধারণা অনুযায়ী, বর্তমানে অতিবিরল কোয়ালার সংখ্যা মাত্র ৪৫ হাজার। কোয়ালার সংখ্যা পরিসংখ্যান করা ছাড়া চালকবিহীন বিমানে করে সংগ্রহ করা ছবির পরিসংখ্যানও গবেষকেরা আরো ব্যাপকভাবে কোয়ালার জীবনধারা নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণা করবেন। পাশাপাশি এভাবে অস্ট্রেলিয়ার কোয়ালা প্রশাসন আরো কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।