Web bengali.cri.cn   
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় ফুল
  2015-03-24 15:31:27  cri

 


রাষ্ট্রীয় ফুল হল একটি দেশের প্রতীক হিসেবে নির্ধারিত ফুল। তা হল একটি দেশের ভূখণ্ড, সুদীর্ঘ ইতিহাস ও উজ্জ্বল সংস্কৃতির প্রতীক। রাষ্ট্রীয় ফুলের মাধ্যমে নিজ দেশের জনগণের গভীর ভালোবাসাও তুলে ধরা হয়। প্রায় সব দেশই নিজ দেশের খুব বিখ্যাত ফুলকে দেশের রাষ্ট্রীয় ফুল হিসেবে নির্ধারণ করে। যেমন আমাদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল হল শাপলা।

চীনের রাষ্ট্রীয় ফুল হল পিয়নি। লুও ইয়াং শহরকে বলা হয় পিয়নির শহর। কেন পিয়নি ফুলকে চীনের রাষ্ট্রীয় ফুল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে? এ নিয়ে খুব সুন্দর একটি গল্প আছে। কিংবদন্তীতে বলা হয়, চীনের থাং রাজবংশে চীনের ইতিহাসে রানী ছিলেন রাজবংশের প্রধান। তিনি হলেন উ চে থিয়ান। তিনি হলেন তখনকার সম্রাটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন মানুষ। শীতের সময় তিনি দেখেন সব ফুল ম্লান, দৃশ্য একদম সুন্দর নয়। একদিন তিনি মাতাল হন এবং অনেক রাগ করেন। তখন তিনি সম্রাটের সব ফুলকে এক রাতের মধ্যে আবার ফোটার নির্দেশ দেন। সব ফুল তার ভয়ে সত্যি ফুটে উঠে, তবে শুধু পিয়নি ফুল তাকে ভয় পায় নি এবং ফোটে নি। উ চে থিয়ান রাগ হয়ে পিয়নি ফুলকে রাজধানী থেকে লুও ইয়াং শহরে নির্বাসন করেন। তবে লোকজন পিয়নি ফুলের সাহসের প্রশংসা করেন এবং তাকে আরো পছন্দ করেন। এর ফলে পিয়নি ফুলকে 'প্রথম সুন্দর' ফুল নামে ডাকা হয়। এ থেকে বোঝা যায়, চীনাদের মতে, শক্তিকে বা বলকে ভয় না পাওয়া, নিজের আস্থায় অবিচল থাকা এমন চরিত্রকে অনেকে পছন্দ করেন এবং সম্মান করেন।

এখন শুনবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ফুলের কথা। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ফুল হল সূর্যমুখী ফুল। এ ফুলকে আলোর ফুল বা আশার ফুল বলা হয়। এ ফুল সম্বন্ধেও একটি সুন্দর রূপকথা রয়েছে।

প্রাচীনকালে এক কৃষকের মেয়ে ছিলেন, তার নাম মিংকু। তিনি ছিলেন খুবই সুন্দর চরিত্রের। তার বিমাতা ছিলেন। বিমাতা তাকে অনেক ঘৃণা করতে এবং খুব খারাপ আচরণ করতেন। সবসময় তাকে মারধর করতেন। একদিন এক ছোট কাজের কারণে বিমাতা মেয়েটির উপর অনেক রাগ করেন এবং রাতে মেয়েটি ঘুমানোর সময় মেয়ের চোখ কেটে ফেলেন। মেয়ে এত ব্যথা পান যে, তিনি বাসা থেকে বাইরে পালিয়ে যান। অল্প কয়েক দিন পর মেয়েটি মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার কবরের উপর একটি অতি সুন্দর হলুদ রং-এর ফুল ফোটে। ফুলটি সারা দিন সূর্যের দিকে তাকায়। আর তা হল সূর্যমুখী ফুল। তা মেয়েটির উজ্জ্বলতা খোঁজার অর্থের প্রতিফলন। এ কাহিনী লোকজনকে সহিংসতা দূর করায় উত্সাহ দেয়। তাই অনেকেই সূর্যমুখী ফুলকে অনেক পছন্দ করেন।

এখন আমি আপনাদের আরেকটি দেশের রাষ্ট্রীয় ফুলের কাহিনী বলবো। তা হল ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় ফুল গোলাপ। আসলে ব্রিটেনসহ অনেক ইউরোপীয় দেশ গোলাপকে রাষ্ট্রীয় ফুল হিসেবে নির্ধারণ করে। যাকে ভালোবাসার প্রতিফলন বলা যায়। আর গোলাপের গায়ে কাঁটা আছে, তা গুরুগম্ভীর বিষয়ের প্রতিফলনও। খ্রিস্ট ধর্মের একটি কাহিনীতে বলা হয়, যিশুকে বিশ্বাসঘাতকরা ক্রুশে বিদ্ধ করে। তার রক্ত মাটিতে পড়ে যায়। তারপর সেখানে গোলাপ ফুল ফোটে। লাল গোলাপ ভালোবাসার প্রতীক। তা বিশ্বে সবচেয়ে প্রচলিত কথা। রূপকথায় বলা হয়, ভালোবাসার দেবতা তার প্রিয় মানুষকে উদ্ধারের সময় অনেক তাড়াতাড়ি দৌড়ান। তখন গোলাপের কাঁটা তার হাত ও পায়ে বিদ্ধ হয়। তার রক্ত গোলাপকে লাল করে। তাই তখন থেকে লাল গোলাপ ভালোবাসার প্রতীকে পরিণত হয়। (ফেইফেই/টুটুল)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040