Web bengali.cri.cn   
২৫০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীন ও ভারতে শুরু হয়েছে জাতীয় পর্যটন বর্ষ
  2015-02-13 16:22:26  cri

গত ২ ফেব্রুয়ারি চীনে শুরু হয়েছে 'ভারত পর্যটন বর্ষ'। এটা দু'বছরব্যাপী চীন ও ভারতে পারস্পরিক পর্যটনবর্ষ কার্যক্রমের আওতায় চালু হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দুটো দেশের মধ্যে পর্যটনের বড় ক্ষেত্র উন্মুক্ত হওয়ার পূর্ব লক্ষণ। চীনের জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর প্রধান লি চিন জাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ২০১৬ সাল পর্যন্ত চীন ও ভারতের দ্বিমুখী পর্যটন আদান-প্রদানের সংখ্যা ১০ লাখ ছড়িয়ে যাবার আশা করছেন তিনি।

ব্রিকসের সদস্য দেশ হিসেবে চীন ও ভারত উভয়ই উন্নয়নশীল দেশ। দু'টো দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের লোকসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। চীন ও ভারতের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও গৌরবোজ্জ্বল সভ্যতা রয়েছে। দু'দেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান দীর্ঘদিনের। কিন্তু দু'টো দেশের জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতির তুলনায় দু'দেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগের মাত্রা অনেক কম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ভারত সফরে দু'দেশের নেতারা ২০১৫ সালে চীনে 'ভারত পর্যটন বর্ষ' এবং ২০১৬ সালে ভারতে 'চীন পর্যটন বর্ষ' আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২ ফেব্রুয়ারি 'ভারত পর্যটন বর্ষ' আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ইয়াং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে বলেন,

দু'দেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক দ্রুত উন্নয়ন এবং মানুষের জীবন যাপনের মান অব্যাহতভাবে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চীন ও ভারত পর্যটন উন্নয়নের স্বর্ণযুগ সামনে আসছে। গত বছর বিদেশে ভ্রমণকারী চীনা নাগরিকের সংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখ ছড়িয়েছে। আর ভারতের ১ কোটি ৭০ লাখ ছড়িয়েছে। অবশ্যই আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করি যে, আমাদের দু'দেশের পারস্পরিক সফরকারীর সংখ্যা খুব কম। গত বছর ছিল ৯ লাখেরও কম। বিশেষ করে, ভারতগামী চীনা মানুষের সংখ্যা শুধু ১.৭ লাখ। এটা দু'দেশের জনসংখ্যার মোট পরিমাণ, বাজারের মাত্রা এবং পর্যটন সম্পদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কিন্তু ব্যবধান হলো সুপ্তশক্তি ও চালিকাশক্তি। আমাদের সম্মুখীন অভিন্ন কার্যক্রম হলো দু'দেশের শীর্ষ নেতার মতৈক্য ভালোভাবে কার্যকর করে এবং দু'দেশের জনগণের প্রতীক্ষা অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যময়, কার্যকর উচ্চতর পর্যটন বর্ষ আয়োজন করা।

ভারতকে তুলে ধরার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশেষ করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ভারতে যাত্রী হচ্ছেন ঈশর। চীনা পর্যটকদের ভারতে বেড়িয়ে জ্যেষ্ঠ সন্ন্যাসী ফা সিয়ান ও হিউয়েন সাং-এর পদচিহ্ন অনুসরণ করা এবং গঙ্গা নদীর তীরে যোগ ব্যায়ামের জন্য স্বাগত জানান তিনি। এছাড়া মোদি বলেন, হিউয়েন সাং ছাং আনে ফিরে আসার আগে, মোদির জন্মস্থান গুজরাট রাজ্যে অনেক দিন ছিলেন।

চীনে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত আশোক কে কণ্ঠ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের জন্মস্থানের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন,

ভারত ও চীনের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে। যেমন, ভূগোল, ইতিহাস ও ধর্মীয় সংস্কৃতি ইত্যাদি। ভারত সবার জন্য পর্যটনের অনেক সুযোগ দিতে পারে। চীনের মতো ভারতও বৃহত রাষ্ট্র ও প্রাচীন সভ্যতার দেশ। সেখানে হিমালয়ের মতো অনেক পবর্ত, অনেক প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে। পাশাপাশি ইয়োগা চর্চা এবং কেনাকাটার ভাল জায়গা। ভারতে ভ্রমণ করলে বেশ ভালো বিনোদন হয়। ভারতের প্রতি আরো গভীর উপলব্ধি দেয়ার জন্য আমরা চীনের জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর সঙ্গে অনেক সহযোগিতামূলক প্রকল্প হাতে নেবো। চলতি বছর চীনের বিভিন্ন জায়গায় সে সব অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, চীন ও ভারতের জাতীয় পর্যটন বর্ষ কার্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গে চীন ও ভারত সুষ্ঠু পর্যটন সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, চলতি বছর চীন-ভারত পর্যটনমন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপ আয়োজন করা। একে অপরের পর্যটন প্রচার করা। গণমাধ্যম সম্পদ, বিজ্ঞাপনী চ্যানেল, প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা ও লেনদেন শুরু করা। চীনের জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর প্রধান লি চিন জাও বলেন, ২০১৫ চীনের আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার ভারতকে প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তিনি বলেন,

ইতিবাচকভাবে পর্যটক ভোগ্যপণ্যের চাহিদা পূরণ, সাইট পরিদর্শন, ছুটি কাটানো ও চিকিত্সা, ক্রীড়াসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যময় পর্যটন পণ্য উন্নয়ন করবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবেশী দেশের পর্যটনের দর্শনীয় স্থান, হোটেল ও রেস্তোঁরা এবং পর্যটন বাস ইত্যাদি পুঁজি বিনিয়োগে সহায়তা করবে। সমন্বিতভাবে পর্যটন সেবার মান উন্নত করবে। ভারতে চীনা ভাষায় পথনির্দেশ, চীনা ভাষার লোগো বা সনাক্ত, চীনা স্টাইলের খাবার তৈরিতেও সহায়তা দেবে চীন। এছাড়া পর্যটন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা জোরদার, সময়োচিতভাবে তথ্য বিনিময়, পর্যটন বীমা ও ত্রাণ সহযোগিতা চালিয়ে টুরিস্ট ভিসা ও বিমান চলাচল সহজ করবে। আমারা আশা করি যে, ২০১৬ সালের মধ্যে চীন ও ভারতের দ্বিমুখী পর্যটন ও আদান-প্রদান করা মানুষের সংখ্যা ১০ লাখ ছড়িয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, জাতীয় পর্যটন বর্ষ চলাকালে চীন ও ভারতের মধ্যে পর্যটকদের আগ্রহী বিষয় নিয়ে যোগাযোগ বাড়ানো হবে।

প্রেমা

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040