Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কে কে স্ত্রৈণ চরিত্রের
  2015-02-02 15:38:32  cri


গত বছর ইসলামিক স্টেট বা আইএস দু'জন ব্রিটিশ জিম্মিকে শিরশ্ছেদ করে। তথ্যমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছিলেন, জিম্মিকে উদ্ধার করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ' সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তিনি তাঁর স্ত্রী সামানথা ক্যামেরনের সঙ্গে পরামর্শ করেন এবং তাঁর মতামত জানতে চান।

ক্যামেরন বার বার প্রশংসা করে বলেন যে, সামানথা তাঁর ভালো সহকারী। তিনি সাধারণ লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দিতে পারেন। তবে রাজনৈতিক নেতারা সবসময়ই রাজনৈতিক দলের স্বার্থের দিক থেকে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, তাইনা?

হ্যাঁ, অবশ্য সামানথা কতটা সুবুদ্ধিসম্পন্ন তা আমরা জানিনা, তবে ক্যামেরনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা থেকে আমরা বলতে পারি, একজন সফল পুরুষের পিছনে নিশ্চয়ই একজন অসাধারণ নারী রয়েছেন।

অনেক পুরুষ নেতাই রাজনীতিতে বা বিশ্বে অনেক শক্তিশালী। তবে বাসায় কিন্তু এসব নেতাদেরকে স্ত্রীর কথা মত কাজ করতে হয়, এটি সত্যিই অনেক মজার ব্যাপার, তাইনা?

এবার শুনবেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ও তাঁর স্ত্রী লরা বুশের কথা। আসলে জনগণের মধ্যে লরা প্রেসিডেন্ট বুশের চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কর্মকর্তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর মতামত ছিলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তিনি ইশারা করলেই বুশ অনেক ভয় পেতেন। তাদের এক পারিবারিক বন্ধু বলেন, মাঝে মাঝে লরা কিছুই না বলে শুধু বুশকে ইশারা করতেন, আর তাতেই বুশ অনেক ভয় পেতেন। বিশেষ করে বুশ যখন কোনো ভুল কথা বলতেন অথবা অভদ্রতার মতো কোনো কাজ করতেন তখন লরা অনেক রাগ করতেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেলের কথা সবারই জানা, তাইনা? বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি হলেন ওবামা। আর মিশেলের কথা তো বুঝতেই পারছেন। একবার ওবামা ও জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত আলাপচারিতা করছিলেন। এসময় ওবামা এ কর্মকর্তাকে ধূমপান ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন। যখন এ কর্মকর্তা ওবামার অবস্থা জিজ্ঞেস করেন, তখন ওবামা বলেন, তিনি ছয় বছর ধরে ধূমপান করেন না,কারণ তিনি তাঁর স্ত্রী মিশেলকে ভয় পান।

২০০৭ সালে মিশেল তথ্য মাধ্যমে বলেছিলেন, কেবল ধূমপান ছেড়ে দিলেই তিনি ওবামাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সমর্থন করবেন। অবশেষে ওবামা মিশেলের কথা মত ধূমপান ছেড়ে দেন এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট হন।

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুকুদা ইয়াসো ও তাঁর বাবা ফুকুদা তাকেউ (তিনিও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন) দু'জনের রাজনৈতিক জীবনে অনেক মিল রয়েছে। তারা দু'জনই অনেক বয়সে প্রধানমন্ত্রী হন। ৭১ বছর বয়সে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী হন। বিশেষ করে তাঁরা দু'জনই 'স্ত্রৈণ' প্রকৃতির।

সবাই জানেন যে, ফুকুদা তাকেউ স্ত্রীকে অনেক ভয় পেতেন। অনেক বার সেদেশের মন্ত্রিসভায় সভাপতিত্ব করার সময় তিনি বলেন, কি করবো, আমি স্ত্রীর উপহার কিনতে ভুলে গেছি। তবে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে, আমি কোনোমতেই স্ত্রৈণ নই, আমি আমার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসি। যদি স্ত্রীকে ভালোবাসার কোনো কমিশন থাকে, আমি নিশ্চয়ই এ কমিশনের প্রধান হবার যোগ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মহান, বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে আব্রাহাম লিংকনের নাম আমরা সবাই জানি। আমরা জানি তাঁর কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্ব প্রথা বাতিল হয়। তবে তিনি কিন্তু 'ভয়ে পরিপূর্ণ' এমন জীবন উপভোগ করেছেন।

জানা গেছে, লিংকনের সারা জীবনের সবচেয়ে বড় শোচনীয় বিষয় হলো তাঁর স্ত্রী মেরি টোড। মেরি টোড অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর মন নাকি অনেক ছোট ছিলো। লিংকন প্রেসিডেন্ট হলেও মেরি টোড সবসময় ঝাঁটা নিয়ে তাঁকে মারতে ছুটে যেতেন।

আসলে আমরা বুঝতে পারি যে, অধিকাংশ শীর্ষ নেতারা স্ত্রীর প্রতি সম্মান এবং ভালোবাসা থেকেই স্ত্রীর কথা মত কাজ করেন। হ্যাঁ, এটিও ভালোবাসা প্রকাশের একটি পদ্ধতি।

আসলে 'আমি তোমাকে ভালোবাসি' এমন কথাটি সবসময় বলার দরকার নেই। হ্যাঁ, মানুষ অনেক সময়ই মজা করে বলে থাকেন, ঠিক যত বেশি তোমাকে 'ভালোবাসি', তত বেশি তোমাকে ভয় পাই'। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে স্ত্রীর ভয়ে তাঁকে ভালোবাসা সেটা নিশ্চয়ই একটু অন্যরকম অনুভূতি। (ফেইফেই/টুটুল)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040