Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে প্রচলিত বাক্য-ব্রিটেন ও ভারত
  2015-01-19 16:09:02  cri


এমন দৃশ্য বা অবস্থা কল্পনা করুন তো, অস্ট্রেলিয়ার দু'জন হকি খেলোয়াড় সেল্ফি তুলছেন, ঠিক এ সময় ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাদের ক্যামেরায় ঢুকেছেন এবং হাসছেন। পুরো ছবিটা দেখতে অনেক লাভলি, তাইনা? আন্তর্জাতিক তথ্যমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাণী 'বোম্বড ইন' অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়ের সেল্ফিতে।

২০১৪ সালে ব্রিটেনের সবচেয়ে 'হট' বা সবচেয়ে প্রচলিত শব্দ হল 'ছবি বোমা' এর ইংরেজি অর্থ হল 'ফটোবোম্ব'। আসলে ২০০৮ সালে এ শব্দটি চালু হয়। কেন ২০১৪ সালে এ শব্দটি এত প্রচলিত ছিলো? কারণ এ বছর ব্রিটেনের রাজপরিবার এতে অংশ নেন। বন্ধুরা কল্পনা করুন, ব্রিটেনের রাণীকে ছবি তোলা অবশ্যই অনেক গুরুগম্ভীর ব্যাপার। সাধারণ মানুষের রাণীর ছবি তুলতে চাওয়াটা অনেক কঠিন। অবশ্য যদি কোনো ছবি তোলেন, তখন রাণী নিশ্চয়ই ছবির প্রধান জায়গায় থাকবেন, তাইনা? কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়ের সেল্ফির প্রেক্ষাপট হিসেবে একটি ছবি তোলা হয়েছে! বিষয়টি সত্যি মজার, তাইনা?

বলা যায়, এ দু'জন খেলোয়াড় খুবই মূল্যবান একটি ছবি তুলেছেন। আচ্ছা, এখন আমরা ভারতে যাবো। দেখি গত বছর ভারতের সবচেয়ে প্রচলিত শব্দ কোনটি?

২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 'ক্লিন ইন্ডিয়া' বা 'পরিচ্ছন্ন ভারত' নামে একটি আন্দোলন উত্থাপন করেন এবং মুহূর্তের মধ্যেই তা সারা দেশ ছড়িয়ে পড়ে। আর এরই সঙ্গে সঙ্গে 'পরিচ্ছন্ন ভারত'ও স্থানীয় লোকজনের সবচেয়ে বেশি বলা শব্দে পরিণত হয়।

এ আন্দোলনের উত্স হলো নির্বাচনের সময় মোদির দেয়া একটি প্রতিশ্রুতি। জনগণকে একটি পরিচ্ছন্ন ভারত, একটি সমৃদ্ধ ভারত উপহার দেয়া। ২০১৪ সালের মে মাসে পবিত্র শহর ভারানাসির গঙ্গা নদীর তীরে পঙ্কিল পরিস্কার করার কাজ করেছেন। এ শহরটি বিদেশি পর্যটকদের মতে ভারতের সবচেয়ে নোংরা শহরের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এরপর মোদি বলেন, যদি তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলে ২০১৯ সালের আগে, অর্থাত মহাত্মা গান্ধীর জন্মের ১৫০ বছর পূর্তির আগে গান্ধীর অন্তিম ইচ্ছা পূরণ করা –ভারতকে একটি পরিস্কার দেশে পরিণত করবেন তিনি।

ভারত একটি প্রাচীন দেশ, এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক গোষ্ঠী। তবে এমন একটি দেশের স্বাস্থ্যের সমস্যা সবাইকে মাথাব্যথা করে রাখে। বিভিন্ন বড় বড় শহরের বস্তিতে পাহাড়ের মত বড় আবর্জনা। রাস্তায় একটি আবর্জনার পাত্র খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন। পরিস্কার কর্মীর সংখ্যা অতি কম। এমনকি সরকারি ভবন এবং বিশ্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের কাছে সবসময় দেখা যায় অনেক আবর্জনা। পায়খানাও অনেক কম।

মোদি যে কথা বলেছেন, তা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করার চেষ্টা করেন। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর গান্ধীর জন্মদিনের ভোরে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে 'পরিচ্ছন্ন ভারত' আন্দোলন উত্থাপন করেন। এদিন তিনি নয়াদিল্লীর রাস্তায় পরিস্কারের কাজ করেন। আর আপনারা কি জানেন, তখন তিনি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বিমান থেকে নেমেছেন। মোদি বলেন, আমি প্রত্যেক নাগরিককে প্রতি বছর অন্তত ১শ ঘণ্টা পরিস্কার করার আহ্বান জানাই। একটি নোংরা ভারতকে আর সহ্য করবো না আমরা। এদিন তিনি সরকারের কর্মকর্তা এবং বলিউডের ৯ জনকে এ পরিস্কার কার্যক্রমে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান।

এ ছাড়া তিনি এ নয় জনকে আরো নয় জানকে আমন্ত্রণ জানানোর দাবি জানান। বিশেষ করে, সব অংশগ্রহণকারীদের উচিত তাদের পরিস্কার করার ভিডিও ফেসবুক বা টুইটারে আপলোড করা।

মোদি নিজের ফেসবুকে তাঁর রাস্তা পরিস্কারের ছবিও দিয়েছেন। তিনি সবাইকে বলেন, সবার নির্দিষ্ট চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করা অনেক কঠিন এবং অনেক সময় লাগবে। তা একটি কঠিন কর্তব্য। তবে এ লক্ষ্য পূরণ করতে আমাদের ৫ বছর সময় আছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে শুধু আমার উপর নির্ভর করলে হবে না। কারণ মোদি শুধু ১.২ বিলিয়ন জনসংখ্যার এক জন। তা আমাদের সব ভারতীয় নাগরিকের অভিন্ন দায়িত্ব।

তথ্য মাধ্যমও 'পরিচ্ছন্ন ভারত'-এর খবর প্রকাশ করে। সারা ভারত এর জন্য উত্তাপে টগবগ করে ফুটে উঠে। বলিউডের তারকা, ক্রিকেট তারকা থেকে শুরু করে সবাই এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। সবাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ কাজকে ব্যাপক প্রশংসা করেন। আমরা বিশ্বাস করি, সবার অংশগ্রহণ থাকলে এ লক্ষ্য নিশ্চয়ই পূরণ হবে। (ফেইফেই/টুটুল)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040