Web bengali.cri.cn   
বিভিন্ন দেশের নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর বিশেষ রীতিনীতি
  2015-01-05 18:50:29  cri


প্রথমেই আমরা যাবো জার্মানিতে। জার্মানির কিছু কিছু অঞ্চলে নববর্ষ উদযাপনে ৫০ বছর ধরে একটি রীতি প্রচলিত রয়েছে। তা হলো মিলনাত্মক নাটক 'একজনের রাতের খাবার'। জার্মানির অনেক টেলিভিশন কেন্দ্রে নববর্ষের আগের দিন রাতে এ নাটক প্রচার করা হয়।

নাটকের প্রধান বিষয় হলো সুফি নামের এক মহিলার বাটলার বা খানসামা এক এক করে সুফির বন্ধুদের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং এভাবে তার জন্মদিন উদযাপন করেন। এ নাটকটি জার্মানিতে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এ ছাড়া রুই মাছ জার্মানিদের নববর্ষের খাবারে থাকতেই হবে।

এখন আমরা ইতালিতে যাবো। ইতালির রাজধানী রোমে একটি বিশেষ এবং খুব সাহসী নববর্ষ উদযাপনের রীতি রয়েছে। তা হলো নদীতে ঝাঁপ দেয়া। এ রীতি সেখানে ৬০ বছর ধরে প্রচলিত আছে। শীতকালের রোম অনেক ঠাণ্ডা। বাইরের তাপমাত্রা শুন্য ডিগ্রি। এ ছাড়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে সেখানকার লোকেরা আরো অনেক ঠাণ্ডা বোধ করেন।

তবে যারা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন, তারা শুধু সাঁতার কাটার কাপড়ই পরেন, বেশি কাপড় পরতে পারেন না। তাই এ কারণে অনেকেই তাদেরকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। যারা অনেক বছর ধরে এ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তাদেরকে 'মিস্টার ওকে' নামে ডাকা হয়।

এখন আমি আরেকটি দেশের কথা বলবো, এ দেশটি হলো পোল্যান্ড। পোল্যান্ডের তরুণীরা নববর্ষ উদযাপনের সময় খরগোশের মত কাপড় পরেন এবং তারপর সবাই একত্রিত হয়ে খরগোশের মত করে কুটুর কুটুর করে যত প্রকার আর যত পরিমাণ পারা যায় তত শাকসবজি খান। কারণ তারা মনে করেন, শাকসবজি খেয়ে নতুন বছর শুরু করলে নতুন বছরের সব কাজ সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।

ফ্রান্সের নববর্ষের রীতিনীতিও কিন্তু বেশ মজার। নববর্ষে তাদের বাসায় থাকা সব মদ শেষ করতে হবেই হবে। কেন? তাদের মতে, বছরের শেষ দিনে যদি বাসায় পুরনো মদ থাকে, তাহলে তা নতুন বছরে সৌভাগ্য বয়ে আনবে না। তবে মদ ফেলে দিলেও চলবে না, ঘরে থাকা যত মদ সব খেয়ে শেষ করলেই তবে নতুন বছরটি সুন্দর আর শান্তিতে ভরে উঠবে। তাই শ্রোতারা, যদি আপনি ফ্রান্সের নববর্ষের সময় সেখানে থাকেন, আপনার মনে হবে ফরাসিরা যেন সবাই মাতাল, আর সেটা যেন খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কারণ একটু বেশি পরিমাণ খেয়ে ফেলেছে তো তাই।

এবার আমরা দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষবরণ উত্সব উদযাপন করে মজার মজার সব খাবার খেয়ে আসি, চলো। প্যারাগুয়ের লোকেরা বছরের ঠিক শেষ ৫ দিনকে 'ঠাণ্ডা খাবার খাওয়ার দিন' হিসেবে পালন করেন। এই ৫ দিনে দেশের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কেউই কোনো নতুন খাবার রান্না করেন না, এ সময়ে তারা সবাই শুধু ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন। নতুন বছরের ঘণ্টাধ্বনি বেজে উঠা মাত্রই তারা চুলায় আগুন জ্বালান এবং মজার মজার সব নতুন খাবার রান্না করে সবাই মিলে খান।

এখন আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবো। জানালা থেকে বাইরে কিছু জিনিস ফেলা, এভাবে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পদ্ধতি অনেকে দেশেই রয়েছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে এ রীতি অন্য দেশের চেয়ে আরো জনপ্রিয়। নতুন বছরের দিনের রাতে স্থানীয় লোকেরা জানালা থেকে বাইরে বিভিন্ন ধরনের জিনিস ফেলে দেন। যেমন মাইক্রোওয়েভ ওভেন, খাবার, কাপড়, এমনকি পুরো বিছানাও। কেউ কেউ অনেক উঁচু বিল্ডিং থেকে তা ফেলে দেন। আর এই রীতিটি স্থানীয় পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এতক্ষণ আমরা বিভিন্ন দেশের নববর্ষ উদযাপনের পদ্ধতি এবং তাদের খাবারের বিশেষ রীতিনীতি নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলাপ করলাম। আসলে যদিও বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম, ইতিহাস ও রীতিনীতি ভিন্ন, এবং এর কারণে নববর্ষ উদযাপনের পদ্ধতিও ভিন্ন হয়ে থাকে, তবে একটি বিষয় কিন্তু অভিন্ন, তা হলো নববর্ষে পরস্পর পরস্পরের মঙ্গল কামনা বা শুভকামনা করে থাকেন। তাই না?

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040