Web bengali.cri.cn   
দোহায় ২০১৪ শিক্ষার জন্য বিশ্ব নতুনত্ব শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  2014-12-30 15:16:23  cri

২০১৪ (WISE বা World innovation summit for education) ওয়াইজ বা শিক্ষার জন্য বিশ্ব নতুনত্ব শীর্ষ সম্মেলন গত ৪ থেকে ৬ নভেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি বছর গ্রুপ শিক্ষা পুরষ্কারের ফলাফল প্রথম দিনে ঘোষণা ও বিতরণ করা হয়েছে।

২০০৯ সালে কাতারের রাজ পরিবারের উদ্যোগে ওয়াইজ স্থাপন করা হয়। শীর্ষ সম্মেলন সৃজনশীল ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানের আহ্বান ও উত্সাহিত করার পাশাপাশি উৎকৃষ্ট শিক্ষার ব্যবহারিক দিক তুলে ধরা হয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে ২০১১ সাল থেকে শীর্ষ সম্মেলনটি প্রতি বছর "ব্যক্তিগত ও গ্রুপ শিক্ষা পুরষ্কার" বিতরণ করে আসছে। যাতে শিক্ষাবিদরা সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন মহলের বিশিষ্ট মানুষরা স্বীকৃতি অর্জন করে। পুরষ্কার বিজয়ীদের ৫ লাখ মার্কিন ডলারের পুরষ্কার এবং একটি বিশেষ স্বর্ণ পদক দেয়া হয়।

চলতি বছরের বিজয়ীরা হচ্ছেন নারী শিক্ষা কার্যক্রম সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা আন কটন। গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বড় হবার পর আমি অধ্যাপক হবো। আমি ডাক্তার হতে চাচ্ছি। আমি বিমানচালক হতে চাই।

আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একশ' কোটি মেয়েকে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেয়া। কল্পনা করুন, আফ্রিকার দরিদ্র গ্রামাঞ্চলীয় একশ কোটি মেয়ে বেশ ভালোভাবেই জানে যে, দারিদ্র্য ডেকে আনে দু:খ ও ব্যর্থতা। কল্পনা করুন, তারা শিক্ষা, চিকিত্সা, রাজনীতি, তথ্য, আইন এবং প্রকল্প ও বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী ধরনের অবদান রাখতে পারে।

আন কটন গভীরভাবে জানেন, মেয়ে শিশু তাদের বসবাসরত কমিউনিটির সমর্থনে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারলে, তারা নিজেদের ভাগ্য গড়া এবং পুরো কমিউনিটিকে দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে। আগামী পাঁচ বছর দশ লাখ মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেবে। এটা তাদের বর্তমান পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে আন কটন বলেছেন,

প্রত্যেক মানুষই কিছু জিনিস পরিবর্তন করতে পারে। যারা প্ল্যাটফর্মের অধিকারী নয়। ঠিক আমার প্ল্যাটফর্মের মতো। আসলে প্রতিটি মানুষই পারে। আপনার চিন্তা ও বুদ্ধি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। চূড়ান্তভাবে আপনি কিছু জিনিস পরিবর্তন করতে পারবেন।

পুরষ্কার বিতরণ ছাড়া বিশ্বের শিক্ষা ও সৃজনশীলতা মহলের ব্যক্তিদের আদান-প্রদানও ছিলো শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চলতি বছর শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের ১ হাজার ৫শ'রও বেশি অতিথি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন চীনের বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিত। সম্মেলনে "চীন ও বিশ্বায়ন; থিঙ্ক ট্যাঙ্ক" শীর্ষক ভাষণে অধ্যাপক ওয়াং হুইইয়াও বলেন,

আমার মনে হয়, কাতারের এ ধরনের চেতনা রয়েছে। সারা বিশ্বের শিক্ষা ও মেধাশক্তিপ্রেমী বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত, নীতি গবেষক এবং শিল্পপতি শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে সমন্বিত হয়েছে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ তহবিল গঠিত হয়েছে। তার মানে হলো তাদের বিশ্বব্যাপী নজর রয়েছে। এছাড়া তারা মনে করে, ভবিষ্যৎ বিশ্বের উন্নয়নের জন্য শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

চীনের সৃজনশীল শিক্ষার বাস্তবায়ন সম্পর্কে অধ্যাপক ওয়াং হুইইয়াও মনে করেন,

যদি আমরা সে বছর তেং শিয়াপিং অর্থনীতি উন্মুক্ত করার মতো আমাদের শিক্ষা উন্মুক্ত করতে পারি এবং আরো বেশি সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা আমদানি করি, তাহলে শিক্ষার আরো ভালো উন্নয়ন হবে। তা না হলে, বর্তমানে আরো বেশি বাবা-মা নিজের ছেলেমেয়েদের বিদেশে লেখাপড়া করতে পাঠাবে। প্রতি বছর বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। যাদের মধ্যে অধিকাংশ স্নাতকের নিচে। এর মানে চীনের শিক্ষা উন্নত না হলে, বিরাট সংখ্যক ছাত্রছাত্রী বাইরে চলে যাবে।

অধ্যাপক ওয়াং হুইইয়াও পাশাপাশি হচ্ছেন ওয়েস্টার্ন রিটার্নড স্কলার্স এ্যাসোসিয়েশন বা ডাব্লিউ আর এস এ এবং বিদেশে অর্ধ্যয়নরত চীনা ছাত্র এসোসিয়েশনের উপপ্রধান। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, বর্তমানে প্রতি বছর চীনের পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ স্নাতক পাস করে না। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, চীনের শিক্ষা উন্নত না হলে, আরো বেশি ছাত্র বিদেশে চলে যাবে। শিক্ষার বিষয়ে চীনের আরো বেশি চেষ্টা চালানো উচিত।

প্রেমা

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040