

1204shishang
|
ব্যায়াম করার ইচ্ছা ঠিকঠাক পূরণ হয় মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের। অন্যরা অনেক অজুহাত দেখান, যেগুলো শুনতে কিছুটা যৌক্তিকই মনে হয়। ব্যায়ামের ইচ্ছা না করলে কিছু দিন পর পর বিশ্রাম নেয়া যেতে পারে। কিন্তু একবারেই তা বন্ধ করে দেয়া ঠিক নয়। তবে, দীর্ঘদিন ব্যায়াম না করা একদম ভালো না। টানা ৩ দিন ব্যায়াম বন্ধ রাখলে পেশীতে অক্সিজেন চলাচলের পরিমাণ কমে যায়। এক সপ্তাহে বন্ধ থাকলে পেশীর শক্তি কমে যাবে। আর তখন এটাকে পুনরুদ্ধার করা খুব কঠিন। এ রকম ১০টি কারণ এবং তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা এবং অজুহাত থেকে দূরের বের করার জন্য তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। আসুন তাহলে পরামর্শগুলো জেনে নেই।
১. সময় না থাকার অজুহাত
প্রত্যেকের জন্যই দিন হলো ২৪ ঘণ্টার। এটা গুরুত্ব দেয়ার মতো বিষয়। বই পড়া, মুভি দেখা বা আড্ডা দেয়ার সময় কিন্তু ঠিকই পাওয়া যায়। কাজেই দিনে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করার সময় বের করা অসম্ভব, এটা আপনিও মানতে রাজি হবেন না, তাই না ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ি ও অফিসে একটি খেলাধুলার উপযোগী জুতা প্রস্তুত রাখুন। যে কোনো সময় যেনো জিমে বা বাইরে দৌড়াদৌড়ি করতে পারেন। টিভি দেখার সময় আপ-ডাউন ব্যায়াম করতে পারেন। সেগুলো করতে কিন্তু বেশি সময় লাগে না। গবেষণা থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন এমন ৫, ১০ বা ১৫ মিনিট করে এভাবে ব্যায়াম করলে আপনি যে ফলাফল পাবেন, দীর্ঘ সময় টানা ব্যায়ামের ফলাফল একই।
২ কাজের চাপ বেশি
এটি একটি দুর্বল অজুহাত। খুব বেশি কাজের তাড়া বা সময়ের অভাবের কারণে কেউ কখনো কি কাপড় ছাড়া অফিসে যায় ? যায় না। আসলে শারীরিক ব্যায়াম করাটাই চাপ কমানোর খুব ভালো উপায়। আবারো বলছি, ব্যায়াম করাটাই মানসিক চাপ কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়। ব্যায়াম শরীরের জীবনীশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি উদ্বেগের পরিমাণও কমাতে পারে।
৩. যুবক বয়সে অনেক করেছি, এখন আর করতে চাই না।
অতীতে গোসল করা, দাড়ি কামানো, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি কাজও আপনি প্রচুর করেছেন। তাই বলে সেগুলো কি এখন বাদ দিতে পারবেন? ব্যায়ামটাকেও ঠিক সে রকম একটি কাজ হিসেবে মনে করুন। আগে যেমন করেছেন, এখনো করতে হবে। যদি আপনার ব্যায়াম করতে বিরক্ত বোধ হয়, তাহলে ব্যায়ামের সময় ও ধরনে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। যেমন, অফিস যাওয়ার আগে ব্যায়ামের পরিবর্তে অফিসের পর ব্যায়াম, জিমে যেতে পারেন। দৌড়ানোর পরিবর্তে পার্ক ও খোলা জায়গায় ব্যায়াম করতে পারেন।
৪ সপ্তাহে দু-এক দিন ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট
এটা হয় না। আপনি ব্যায়াম বাদ দিতে পারবেন সেই দিনটিতে, যেদিন আপনি কিছুই খাবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, টানা ৩ দিন ধরে ব্যায়াম বন্ধ করা হলে পেশীতে পেশী অক্সিজেন বিষয়বস্তুর পরিমাণ কমে যাবে। প্রতিদিন খাওয়া-দাওয়া করলে পরিশ্রমও করতে হবে। ঠিক তার মতোই। ব্যায়াম করাটারও পরিশ্রম করতে হয়।
৫. বিভিন্ন রকমের ব্যথার অজুহাত
আপনার শরীরে বিভিন্ন রকম ব্যথার অজুহাতে অনেক সময় ব্যায়াম থেকে আপনি দূরে থাকছেন। অথচ ব্যথার জন্য আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। ডাক্তার যদি বলেন, ব্যায়াম বন্ধ রাখতে, তাহলে আপনি ব্যায়াম বন্ধ রাখুন।
৬. ঘরের অন্যান্য কাজের অজুহাতে ব্যায়াম থেকে দূরে থাকা
এ কথাটি প্রায় আমরা সবাই বলে থাকি। আসলে ব্যায়ামে অভ্যস্ত হতে হয়। তাহলে ঘরের অনেক কাজের পরও আপনি ঠিক হালকা শরীর চর্চার সুযোগ পাবেন। আর ব্যায়ামের জন্য আপনার শারীরিক শক্তির চেয়ে মানসিক শক্তি বেশি প্রয়োজন। তাই নিজের মনকে স্থির করুন। নিয়মিত শারীরিক চর্চার দিকে মনোযোগ দিন। যত গড়িমসি করবেন, তত ক্ষতির শিকার হবেন। ছোটখাটো বা হালকা ব্যায়াম দিয়েই শুরু করুন। ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। শিশুরা যেমন দোলনা থেকে শুরু করে একসময় ধাপে ধাপে সবকিছুই শিখে নেয়, সে রকম।
৭ অনেক তো বয়স হয়েছে, এখন আর শুরু করে কী হবে?
এটা আরো একটি অজুহাত আপনি এমন বুড়ো হয়ে যাননি যে নতুন করে শুরু করতে পারবেন না। নিশ্চয় অন্যান্য অনেক কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারছেন। কাজেই ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম থেকে পালানোর চেষ্টা না করাই ভালো।
৯. যখনই সময় পাই, হাঁটি অথবা সাঁতার কাটতে যাই
মনে করুন, আপনি একজন ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগ দেবেন। তিনি মেধাবী। কিন্তু যদি তিনি বলেন, 'যখন সময় পাই কাজ করতে আসব।'—তাকে কি আপনি চাকরি দেবেন?
১০. আগামীকাল থেকে শুরু করব
অবশ্যই আপনি সেটা করতে পারেন। কিন্তু, সত্য কথাটি হলো, সেই আগামীকাল কখনোই আসবে না।




