

1127ruby
|
বিশেষজ্ঞদের মতে বিয়ের আগে বা বিয়ের সময় আপনি নিজের ধারণা পরিবর্তন করুন। অনেকেই বিয়ের আগে অসাধারণ সঙ্গী পাওয়ার কথা চিন্তা করেন। তারপর বিয়ের পর তার ধারণা ভেঙ্গে গেলে কষ্ট পান। শুরু হয় দাম্পত্য জীবনের অশান্তি পর্ব। আর এভাবে চিন্তা করলে কিন্তু আপনার জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন হয়ে পড়বে।
অসাধারণ মানুষ বলে বোঝানো হয় যে, তারা খুব হ্যান্ডসাম, কমপক্ষে ছয় ফুট লম্বা, অনেক টাকাপয়সার মালিক। তারা হয় কৌতুকবোধসম্পন্ন, দয়ালু এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে আরও ভালো। এই অসাধারণ মানুষ একশ' জনেরও মধ্যে একজন পাওয়াই অসম্ভব। যদি একজনও থাকে তাহলেও তো আপনার জন্য তা পাওয়া কঠিন। কারণ, সে অসাধারণ মানুষকে পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা কত বেশি, তা ধারণা করলেই বুঝতে পারবেন। আসলে টাকা-পয়সা ও সৌন্দর্য বিবাহিত জীবনকে সুখী করতে পারে না। বিয়ে পরবর্তী ভালোবাসাময় সুখী সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সুখ ধরে রাখার জন্য সবার মধ্যে যে গুণ থাকা উচিত, তা হলো, দু'পক্ষের আন্তরিকতা। আন্তরিক মানে হলো, আপনার জীবন সঙ্গীটি হবেন বিনীত, নমনীয়, বিশ্বাসযোগ্য, ভালো স্বভাব, সহযোগী মনোভাবাপন্ন, ক্ষমাশীল, উদার ও ধৈর্যশীল।
সেজন্য যদি আপনি এমন কাউকে খুঁজে পান, তাহলে আপনাকে জানাই অভিনন্দন। কারণ, আপনিই জিতেছেন। দেরি না করে জলদি বিয়ে করুন এবং সুখী হোন।
এ পর্যায়ে অনেকে হয়তো জিজ্ঞেস করবেন, এরপর আমি কি সুখী বিবাহিত জীবন কাটাতে পারি? জি-না। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, পারস্পারিক ভালোলাগা থেকে জন্ম নেয় ভালোবাসা। আর ভালোবাসার শুভ পরিণতি হলো দীর্ঘস্থায়ী সুখী জীবন। দু'জনের পারস্পরিক ভালোলাগা, ভালোবাসা পর্যন্ত গড়াতে ১৮ মাস লেগে যেতে পারে। এর পর থাকবে বিভিন্ন ধরনের মিশ্রিত অনুভূতি। সেজন্য বিয়ের পর সামাজিক রীতি অনুযায়ী এই সম্পর্ক স্থায়ী ও সুখী করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে দুজনকেই। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন যে, বিবাহিত জীবন আরও সুখী ও সুন্দর করতে চাইলে, কিছু বিষয় চর্চা করা উচিত।
প্রথম বিষয়টি হলো সততা।
সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ হচ্ছে সততা। প্রতিটি সম্পর্কের বিষয়ে সততা থাকতে হবে। একজনকে অন্যজনের অনেক কাছে আসবে তখন, যখন দুজনের মধ্যে অস্বচ্ছ কোনো পর্দা থাকবে না। যখন একজন আরেক জনকে বলতে পারবে, 'যাই হোক তুমি আমার সম্পর্কে সত্যটাই জানবে।'
এরপর হলো ক্ষমা
একদিনেই কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। কোনো ভুল হলে প্রথমেই সে ভুল ভেঙ্গে দেয়া উচিত। কারণ ভুল বোঝাবুঝি দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। তাই সম্পর্ক অটুট করতে ভুল ভাঙ্গানো এবং ক্ষমা করার শক্তি অর্জন করা উচিত।
বোঝাপড়া
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া থাকাটা খুব জরুরি।
বিশ্বাস
এমন কিছু কখনো করা যাবে না যাতে করে দু'জনের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। শুধুমাত্র অবিশ্বাসই একটি সম্পর্ক ধ্বংস করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
সময় কাটানো
একসঙ্গে সময় কাটাতে আগ্রহী হতে হবে। দু'জনের একান্ত সময়টুকু আনন্দময় করে তুলতে নতুন নতুন পরিকল্পনা করতে হবে।
ধৈর্য
দাম্পত্য জীবনের পুরো সময়টাই হানিমুন মুডে থাকতে পারবো...এটা ভাবাটা বোকামি এবং এটা ভাবলে বড় ধরনের ধাক্কা খেতেই হবে। জীবনে দুঃসময় আসবে, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়গুলো পার হতে হবে। তাই এমন অবস্থায় ভেঙ্গে পরবেন না। ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে।
এক সঙ্গীর সঙ্গেই জীবন কাটানো
এক সঙ্গীর সঙ্গেই সারাজীবন কাটানোর জন্য মনস্থির করতে পারেন। সেক্ষেত্রে জীবন সুখের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুখী বিবাহিত জীবন ধরে রাখা বা ভালোবাসা অটুট রাখার ক্ষেত্রে প্রতিদিন যে বিষয়গুলো মেনে চলার প্রতি উৎসাহ দেন বিশেষজ্ঞরা, সেগুলো হলো:
একে অপরের জন্য ছোট ছোট বিষয়গুলো করা। এতে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা বোধ অটুট থাকবে। যেমন, দুধ গরম করে দেয়া, চা তৈরি করে দেয়া।
'হার্ড ওয়ার্ক' কথা বলা।
প্রতি সপ্তাহে যেগুলো করা উচিত, সেগুলো হলো:
প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু'ঘণ্টা করে আপনার চিন্তা-ভাবনাগুলো আদান-প্রদান করতে পারেন। টানা দু'ঘণ্টা সময় বের করতে না পারলে প্রতিদিন অন্তত অবসর সময়টুকো একত্রে বসে কথা বলুন। সব সময় প্রয়োজনীয় কথাটুকোই বলতে হবে, তা কিন্তু নয়।
দু'জনেই দুজনের জন্য সময় বের করুন। দু'জনেরই ভালোলাগা বা শখের বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিন। দু'জন এক সঙ্গে পছন্দের রেস্তোরায় খেতে বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। এক সঙ্গে সময় কাটানোও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিমাসে যে কাজগুলো করা উচিত। সেগুলো হলো,
মাঝে মধ্যেই একে অপরকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন। একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন। তাঁকে নিয়ে বিশেষ একটি রেস্তোরায় খেতে যান। সাপ্তাহিক ছুটির দিন সুন্দর কোথাও বেড়াতে যাবার জন্য বিমান টিকিট কিনে আনুন।
প্রতি বছর যে কাজগুলো করা উচিত, সেগুলো হলো,
সঙ্গীকে প্রেমপত্র লিখতে পারেন। নতুন প্রেমপত্র লিখে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার না বলা কথাগুলো প্রকাশ করুন। এসব পত্রে থাকতে পারে পরবর্তী রোম্যান্টিক নানা পরিকল্পনার কথা। এ পত্র শেষ করে পোস্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন, যদিও এক সঙ্গেই থাকছেন আপনারা।




