Web bengali.cri.cn   
২০১৪ শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার দক্ষিণ এশিয়ার বৈশিষ্ট্যময় সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন
  2014-11-14 15:11:01  cri

 


গত ১০ অক্টোবর নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি ঘোষণা করেছে, চলতি বছর ভারতের শিশুশ্রম প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা কৈলাস সত্যার্থী এবং ১৭ বছরের পাকিস্তানি মেয়ে শিশু অধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাইকে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়। এ পুরষ্কারের মাধ্যমে নোবেলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল জয়ীর গৌরব অর্জন করলো মালালা।

এবারের পুরষ্কার বিজয়ী একজন বয়স্ক এবং একজন তরুণ, এক জন পুরুষ, এক জন মেয়ে, এক জন ভারতীয় এক জন পাকিস্তানী। এতে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যময় সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন হয়েছে। পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ওয়াং স্যুই চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সংবাদদাতাকে বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেন,

এ পুরষ্কারটি তাদের অঞ্চলে প্রভাব ফেলবে। আমরা জানি যে, দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে শিশুশ্রম তুলনামূলকভাবে একটি সাধারণ ঘটনা। শিশুদের বিক্রি, পাচার ও জোর করে শ্রমিকে পরিণত করা হয়। এসব পরিস্থিতি শিশুদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এর পাশাপাশি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে লোকসংখ্যা বেশি, স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার বেশি। সুতরাং শিশু শিক্ষার অধিকার এসব অঞ্চল ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। পুরো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে শতাধিক কোটি লোক রয়েছে। যদি শিশু শিক্ষার অধিকার রোধ করে জোর করে শ্রমিকে পরিণত করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে দেশের এবং সমাজের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার উপর বিরাট প্রভাব পড়বে।

নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির পুরষ্কারের ঘোষণায় বলা হয়, এ দুজনকে পুরষ্কার দেয়ার মাধ্যমে শিশুদের অধিকার আদায়ে লড়াই করার জন্য তাদের ধন্যবাদ ও প্রশংসা জানানো হয়েছে। এবারের বিজয়ীর প্রসঙ্গে ওয়াং স্যুই বলেন,

স্থিতিশীলতা হচ্ছে সামাজিক শান্তির ভিত্তি। কিন্তু সামাজিক স্থিতিশীলতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মানব সন্তানের শিক্ষা গ্রহণ ও সভ্যতার মাত্রার ওপর নির্ভর করে। নারী ও শিশু সবসময় সমাজের অরক্ষিত শ্রেণী। তাদের অধিকার ও কার্যক্রমের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়নি। সুতরাং আমি মনে করি, এবার নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থাত্ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি পরিবর্তিত হলেও, শান্তির ওপর প্রভাব বিস্তারকারী বিষয়গুলো থাকে অপরিবর্তিত। যেমন নারী অধিকার এবং শিশু শিক্ষার বিষয়টি।

এবার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার দেয়ার সময়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওয়াং স্যুই মনে করেন, এবার আলাদা আলাদাভাবে ভারত ও পাকিস্তানের দু'জন শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়াটা পাক-ভারত সম্পর্ক এবং বিশ্ব শান্তি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,

পাকিস্তানি মেয়ে মালালার পুরষ্কার পাওয়ার খবর শুনে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী অর্থাত্ পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। এটি দু'দেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি শান্ত করতে কিছুটা ভূমিকা পালন করেছে। এ দেশ দু'টো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। দু'দেশের সংঘাতে জড়ানো ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ। সুতরাং আমার মনে হয়, এটা সম্ভবত কোন এক দিক থেকে ভারত পাকিস্তানের উত্তেজনাময় পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করবে।

প্রেমা/তৌহিদ

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040