1013huanqi
|
প্রথমেই উল্লেখ করতে চাই সুটকেস থেকে সবচেয়ে কম সময়ে পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ড সম্পর্কে। মার্কিন নারী লেসলি টিপ্টন শুধুমাত্র ৭.০৪ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে একটি সুটকেস থেকে পালিয়ে যান, আর এর মাধ্যমে তিনি একটি নতুন রেকর্ডস সৃষ্টি করেন। এ রেকর্ডস ২০০৮ সালের ৩১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত একটি বই মেলায় সৃষ্টি হয়।
আরেকটি আশ্চর্য বিষয় আছে। তা একজন ফরাসি নাগরিকের সৃষ্ট রেকর্ডস। তার নাম মিশেল লোটিটো। তিনি একজন পেটুক। হ্যাঁ, সাধারণত আমরা যদি কাউকে পেটুক বলি, তার মানে এ মানুষ অনেক খাবার খেতে পারেন। তবে মিশেল অন্য রকমের জিনিস খান, যা আমরা সাধারণ মানুষ খাই না। তিনি ১৯৫৯ সাল থেকে ধাতু ও কাঁচ খেতে শুরু করেন। পাকস্থলী ডাক্তার জানান, মিশেলের একটি শক্তিশালী পাকস্থলী আছে। তার পাকস্থলী প্রতিদিন ৯ শ' কিলোগ্রাম ধাতু পরিপাক করতে পারে। তাই সবাই মিশেলকে "Magetout" ডাকে। এর ফরাসি ভাষার অর্থ হল "সব কিছুই খেয়ে ফেলা"। মিশেল বলেন, কলা ও ডিম খেলে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। তাই তিনি ধাতু খেতে পছন্দ করেন। ১৯৬৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ১৮টি বাইসেকেল, ১৫টি সুপারমার্কেটের হাতে-ঠেলা গাড়ি, ৭টি টিভি, ৬টি ঝাড়বাতি, দুটি বিছানা, একটি স্কিস, একটি হাল্কা ছোট বিমান এবং একটি কম্পিউটার খেয়ে ফেলেছেন।
তিনি যে কোনো জিনিস খেতে পারেন। জানা গেছে, তিনি হলেন বিশ্বের একমাত্র মানুষ যিনি শবাধারও খেয়েছেন। প্রাথমিক গণনা অনুযায়ী, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৯ টন ধাতু খেয়ে ফেলেন।
এবার তাহলে বন্ধুদেরকে অন্য আরেকটি ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কথা বলবো, যা মেয়েদের বিষয় সম্পর্কিত। তা হলো বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুলের মেয়ে। যদিও অনেক মেয়ে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে লম্বা চুল অনেক পছন্দ করেন।
তবে যদি প্রতিযোগিতা করি, কার চুল সবচেয়ে লম্বা, তাহলে এর চ্যাম্পিয়ন নিশ্চয়ই চীনা মেয়ে সিয়ে ছিউ পিং। তাঁর বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুল রয়েছে। ৪.৮৮ মিটার। লম্বা না? অনেক লম্বা চুলের কারণে বাইরে বেড়াতে যেতেও অন্যের সাহায্য দরকার হয় তাঁর। তিনি বলেন, শেষবার তিনি চুল কেটেছিলেন ১৯৭৩ সালে। তিনি বলেন, লম্বা চুল আমার জন্য কোনো অসুবিধা নয়। আমি ইতোমধ্যেই এমন জীবনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। যখন তোমার এত লম্বা চুল হবে, তখন তোমাকে ধৈর্য ধারণের পাশাপাশি খুব সাবধানে চুলের যত্ন নিতে হবে। যদিও তিনি "বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুলের" অধিকারী, তারপরও কেউ কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন। চীনের অন্য একজন মেয়ে ছেং সি ছুং ১৯৯৬ সাল থেকে চুল কাটা বন্ধ করেন। তবে এতে সিয়ে-এর কোনো চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ ছেং-এর চুল শুধু তাঁর অর্ধেক, মানে ২.৪৪ মিটার।
এখন আমি যে ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস সম্পর্কে বলতে চাই, তা হলো বিশ্বের সবচেয়ে 'দীর্ঘ সময়ের বক্তৃতা'।
২০০৪ সালে ফরাসি নাগরিক লুইস কোলেট বিশ্বের সবচেয়ে 'লম্বা বক্তৃতার' গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস সৃষ্টি করেন। সেবার তাঁর বক্তৃতার সময়সীমা ছিল ৪৮ ঘণ্টা।
কল্পনা করুন তো, ৪৮ ঘণ্টা ধরে না থেমে শুধু কথা বলা, ঘুম নেই, বিশ্রাম নেই। তবে তাঁর এ রেকর্ডস কিন্তু বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। পরে একজন ভারতীয় নাগরিক ১২০ ঘণ্টার বক্তৃতা দেয়ার মাধ্যমে এ রেকর্ডস ভেঙে ফেলেন।
বযদি কেউ আপনার রেকর্ডস ভেঙে ফেলেন,তাহলে কেমন লাগবে আপনার? নিশ্চয়ই খুশি হবেন না, তাই না? লুইসও খুশি হন নি। তাই একই দিন তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, আবার বক্তৃতা দেবেন এবং ভারতীয় নাগরিকের রেকর্ডস ভেঙে ফেলবেন।
ভারতীয় সেই নাগরিকের নতুন রেকর্ডস অর্জনের একই দিন ৬২ বছর বয়সী লুইস ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ছোট থানায় ৫ দিন ৪ রাত স্থায়ী একটি বক্তৃতা প্রদান করেন। হ্যাঁ, তিনি সফল হন এবং আবার এ রেকর্ডস নিজের কোলে তুলে নেন ।
এখন আমি আরেকটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কথা উল্লেখ করবো, এটি শুনে তোমার হয়তো একটু বিরক্ত লাগবে। কারণ তা সত্যি অনেক আশ্চর্যের।
এর আগে আমরা বলেছি যে, ফ্রান্সের একজন নাগরিক ধাতু খান। কিন্তু এখন আমি যে মানুষটির কথা বলবো, তিনি কিন্তু পোকা খান, আর এ পোকা হল তেলাপোকা। ২০০১ সালের ৫ মার্চ ব্রিটেনের কেন এডওয়ার্ডস লন্ডনে আয়োজিত 'বিগ ব্রেকফাস্ট' অনুষ্ঠানে এক মিনিটের মধ্যে ৩৬টি তেলাপোকা খেয়ে ফেলেন এবং গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস সৃষ্টি করেন। তিনি একজন সৌখিন অভিনেতা। ব্রিটেনের 'ওভার দ্য টপ' অনুষ্ঠানে তিনি প্রথমবারের মত টিভিতে তাঁর "তেলাপোকা খাওয়ার" প্রতিভা তুলে ধরেন এবং সে বছর তাঁর বয়স ৩৯ বছর। এ কারণে তিনি যেন এক রাতে সারা ব্রিটেনে বিখ্যাত হয়ে পড়েন। এখন তাঁর বন্ধু ও আত্মীয় তাঁর এমন আচরণকে স্বাভাবিক মনে করেন। তিনি বলেন, যদি আমি সাধারণ মানুষের মত আচরণ করি, তাহলে তারা অবাক হবেন।