Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের সবচেয়ে আরামের এবং মজার চাকরি
  2014-09-22 17:00:53  cri



বলতে পারেন, 'চাকুরী' এর অর্থ কি? চাকুরী মানে দীর্ঘ সময় একই কাজ করা। যেমন কারখানার শ্রমিক দীর্ঘ সময় ধরে একই রকমের পণ্য উত্পাদন করেন। আর সেই সঙ্গে কাজের মাধ্যমে মূল্যও সৃষ্টি করেন, তাই না? তবে বিশ্বে এমন কিছু চাকরি রয়েছে, যা সত্যিই অনেক মজার এবং তা করা একদমই বিরক্তিকর নয়।

এই বিশ্বে এমন একটি চাকরি রয়েছে যেটিকে আমরা সবচেয়ে মিষ্টির চাকরি বলে আখ্যায়িত করতে পারি।

১২ বছর বয়সী হ্যারি ভিল ব্রিটেনের একটি ছোট থানায় বসবাস করে। সমবয়সী ছেলেমেয়েদের মতো সুন্দরভাবে সাজানো এবং মিষ্টির বিভিন্ন ধরনের ক্যান্ডি খেতে অনেক পছন্দ করে সে। তবে অন্য ছেলেমেয়েদের চেয়ে তার আস্বাদনশক্তি অতি ভালো । সম্প্রতি ব্রিটেনের বিখ্যাত ক্যান্ডি কোম্পানি 'সুয়েজেল্সম্যাটলো' একটি স্বাদ গ্রহণের প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। এই প্রতিযোগিতায় ছোট হ্যারি ভিল হাজার হাজার অংশগ্রহণকারীকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।

হয়তো আপনারা বলবেন, এমন প্রতিযোগিতা যেন খেলার মত, তবে না, এ প্রতিযোগিতা অনেক তুমুল। যখন হ্যারির পালা, তখন সে প্রথমে বিচারককে বাউ করে এবং তারপর তার প্রিয় স্বাদের একটি ক্যান্ডি নেয়। সে প্রথমে ক্যান্ডির ঘ্রাণ নেয়, তারপর খেতে শুরু করে।

এরপর খুব অবাকের বিষয় হলো, ক্যান্ডি খাওয়ার পর বিচারককে এ ক্যান্ডির স্বাদ এবং এর উপাদান সব জানিয়ে দেয় সে। সব বিচারক তখন রীতিমতো অবাক।

আপনাদের জানতে হবে, ক্যান্ডির উপাদান হলো এ কোম্পানির সবচেয়ে গোপন বিষয়। এর ফলে কোম্পানি হ্যারিকে কোম্পানির "শীর্ষ স্বাদ গ্রহণকর্মী" হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। আর হ্যারিও এ কোম্পানির সবচেয়ে তরুণ স্বাদ গ্রহণকর্মী হওয়ার যোগ্যতা লাভ করে এবং বিশ্বের "সবচেয়ে মিষ্টি চাকুরী'টিও হাতিয়ে নেয়।

তার প্রধান কাজ হল প্রতি ৩ মাস পর পর একবার সর্বশেষ ক্যান্ডির স্বাদ গ্রহণ করা। তবে অন্য কারো কাছে এ ক্যান্ডি সম্পর্কিত কোনো তথ্য ফাঁস করতে পারবে না সে। কোম্পানি তার জন্য বিশেষ করে খুব সুন্দর নেম কার্ড ছাপিয়েছ এবং তাকে নিয়ে ক্যান্ডি কারখানা পরিদর্শন করেছে।

এখন শুনবেন "হোটেলের ঘুমের পরিচালক" নামের চাকুরীর প্রসঙ্গ।

যদি আমি বলি হোটেলে ঘুমানোর মাধ্যমে অর্থ পাওয়া যায়, হয়তো কেউ তা বিশ্বাস করবে না বা করতেও চাইবে না। তবে ব্রিটেনের 'ট্রাভেল লজ চেইন' হোটেলের ঘুমের পরিচালক লি ম্যাকলেন এমন একটি অবিশ্বাস্য চাকরি করছেন। তার প্রধান কাজ হল প্রতি সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার 'ট্রাভেল লজ চেইন' হোটেলের বিছানায় ৩ বা ৪ বার ঘুমান এবং হোটেলের বিছানা আরাম কি না, তা পরীক্ষা করা। যাতে এসব বিছানা 'ট্রাভেল লজ চেইন' হোটেলের "স্বাভাবিক মানদণ্ড" বহন করতে পারে, তা নিশ্চিত করা । অতিথিরা এমন বিছানায় শুয়ে থাকলে নিজের বাসার মত আরাম বোধ করবেন এবং খুব তাড়াতাড়ি নিদ্রায় চলে যাবেন । ম্যাকলেন বলেন, ঘুমের পরিচালক হিসেবে আমরা সবসময় বিভিন্ন ধরনের নতুন পদ্ধতি যাচাই করি, যাতে আমাদের অতিথি সবচেয়ে ভালো ঘুম পেতে পারেন। আসলে মাঝে মাঝে বিছানার চাদর পরিবর্তন করলে আপনার ঘুম ভালো হবে। জানা গেছে, তার এ চাকরির বার্ষিক বেতন ৬০ হাজার পাউন্ড।

এখন একটি চাকুরী নিয়ে করবো। তা হল "দক্ষিণমেরুর পানি ও বিদ্যুত মেরামত কর্মী।

একটু কল্পনা করুন তো শ্রোতাবন্ধুরা, অতি ঠাণ্ডা, চারপাশে কেবল বরফ আর বরফ, নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূর, তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রী, এমন পরিবেশে পানি ও বিদ্যুত মেরামতের কাজ করা, তা কি খুব আকর্ষণীয় কাজ হতে পারে?

আসলে অনেকেই এ কাজ পাওয়ার জন্য অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। যখন ব্রিটেনের দক্ষিণ মেরু বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষা কেন্দ্র বিবিসির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের তথ্য ঘোষণা করে তখন হাজার হাজার লোক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেন।

ব্রিটেন আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। এ চাকরির বার্ষিক বেতন ২৩ হাজার পাউন্ড এবং থাকা ও খাওয়ার কোনো খরচ নেই, মানে থাকা-খাওয়া একদম ফ্রি। তাই এ চাকরি সত্যিই অনেকের কাছে অনেক আকর্ষণীয়। অবশেষে ৪৯ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক টনি ম্যাকলোলান এ চাকুরী পান এবং গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ মেরু বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষা স্টেশনে পৌঁছে চাকরি শুরু করেন।

এ চাকরি পাওয়ায় টনি অনেক অনেক আনন্দিত। কারণ দক্ষিণ মেরুতে তার থাকা, খাওয়া, যাওয়া-আসার বিমান টিকিট সবই ফ্রি। এ ছাড়া দক্ষিণ মেরুতে কেনাকাটার কোনো জায়গা নেই, পানশালাও নেই, তাই তার সব বেতন ব্যাংকে জমা থাকে। সাংবাদিককে টনি বলেন, এখানে আমার সহকর্মীরা সবাই খুব চমত্কার। আমার কাজ অনেক উত্সাহব্যঞ্জক। স্টেশনটি বাবুর্চি, কর্মকার ও ছুতোরও নিয়োগ করতে চায়, তাই আমি সবাইকে বলতে চাই, আসুন আসুন, তাড়াতাড়ি এখানে আসুন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040