হ্যাঁ বন্ধুরা, আমরা যদি বিভিন্ন দেশের আইন সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করি তাহলে আমরা এসব মজার মজার তথ্য খুঁজে পাবো।
ক: তাহলে প্রথমেই ব্রিটেনের একটি মজার আইনের কথা উল্লেখ করা যাক । তা হল: যে ডাকটিকিটে দেশের রাজার ছবি ছাপানো আছে, এমন ডাকটিকিট যদি উল্টোভাবে আঁটকানো হয়, তাহলে তা দেশদ্রোহীমূলক আচরণ হবে।
এবার যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের একটি আইনের কথা শ্রোতাদের সাথে ভাগাভাগি করবো। যারা মাতাল হয়েছে এবং নড়বড়েভাবে হাঁটাহাঁটি করে তাদের চলাফেরা এ রাজ্য একেবারেই অবৈধ। এটা খুবই কঠিন একটি আইন, না? মাতাল হয়ে নিশ্চয়ই অনেক সময়ই ঠিকভাবে হাঁটা সম্ভব নয়, তাইনা বন্ধুরা ? মনে হয় এ ভয়ে সে রাজ্যে অনেকেই বেশি বেশি মদ পান করবেন না। আর সেই সঙ্গে রাস্তায় মাতাল হয়ে নড়বড়েভাবে হাঁটাহাঁটিও করবেন না।
স্যানসালভাদর নামক দেশের কথা অনেকেই হয়তো শুনেছেন। স্যানসালভাদরে ফ্রিং স্কোয়াড যদি রাস্তায় কোনো মাতাল ড্রাইভারকে দেখে, তাহলে এমন ড্রাইভারকে হত্যা করার অধিকার আছে তাদের। এটি শুনতে অনেক ভয়ঙ্কর লাগছে, তাই না?
যুক্তরাষ্ট্রের ভারমোন্ট রাজ্যে কোনো নারী যদি নকল দাঁত পরতে চান, তাহলে স্বামীর লিখিত অনুমোদন নিতে হবে তাকে। কত আশ্চর্য, তাই না? আধুনিক যুগেও নারীদের এখনও অনেক ক্ষেত্রে এমন ছোট ছোট স্বাধীন অধিকারের অভাব রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যে একটি ভয়ঙ্কর আইন রয়েছে। সেখানে যদি কোনো অবিবাহিত নারী রোববার প্যারাসুট থেকে জাম্প করে, তাহলে তাকে কারারুদ্ধ করা হয়।
আমরা এখন দেখবো ব্রিটেনের একটি আইন। এ আইনের প্রধান বিষয় হল, সমুদ্রসৈকতে যদি কোনো মৃত তিমি পাওয়া যায়, তাহলে এ তিমির মাথা হল রাজার সম্পদ, আর লেজ হল রানীর সম্পদ।
তাহলে আমি জানতে চাই, এ তিমির শরীর নিশ্চয়ই সাধারণ লোকজনের, তাই না? মনে হয় রাজ পরিবার তিমির শরীর চান না।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের আইন এটি । দেখো, আবার ওহাইও রাজ্য। এখানে মাছকে মাতাল করা নিষেধ। খুবই মজার এবং আশ্চর্যের, না? মাছকে কি মাতাল করা যায় বন্ধুরা? মাছ কি ড্রিংক করতে পারে? হাহা।
মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রে এমন মজার মজার অনেক আইন রয়েছে। আমিও আরেকটি খুবই হাস্যকর আইন দেখেছি। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন কোনো নারীকে চুম খাওয়া অবৈধ।
যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডে কোনো দোকানের মালিক যদি রোববার একই ক্রেতার কাছে একইসঙ্গে টুথপেস্ট ও ব্রাশ বিক্রি করেন তাহলে তা অবৈধ। সেখানকার আইন লঙ্ঘন হবে এ কাজ করলে।
এখন আমরা আবারো ব্রিটেনের দিকে একটু দৃষ্টি ফেরাবো। ২০০৮ সালে ব্রিটেনের ইউকে টিভি "দেশের দশটি সবচেয়ে হাস্যকর আইনের"বিষয় নিয়ে একটি জনজরিপ করে।
তুমি কি জানো এই হাস্যকর আইনের এ তালিকায় প্রথম স্থানে কোন বিষয়টি রয়েছে? এ আইনের বিষয় হল: পার্লামেন্ট ভবনে মৃত্যু বরণ করা আইনত নিষিদ্ধ। খুবই অদ্ভুত একটি আইন, না?
আমি সত্যি কোনোভাবেই এ আইনটিকে বুঝতে পারছি না। বেশ অদ্ভুত মনে হচ্ছে আমার কাছে। এর অর্থ হচ্ছে যদি কেউ সত্যি সত্যি পার্লামেন্ট ভবনে মারা যান তাহলে তিনি প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছেন এবং তিনি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন, তাই না? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই মৃত্যুর জন্য তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অপরাধমূলক মামলা দায়ের করা হবে? যদি মৃত্যুর কারণে অপরাধী সাব্যস্ত হন তাহলে তিনি কিভাবে আদালতের মুখোমুখি হবেন? আবার তার অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াটাই বা কি হবে? এটা সত্যি খুব জটিল আর হাস্যকর মনে হয় আমার কাছে।
অনেকেই তোমার মত একই ধাঁধায় রয়েছে। কিছু কিছু আইন বিশেষজ্ঞ এই প্রসঙ্গে আরও বেশি হাস্যকর যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। তাদের যুক্তি এরকম যে, পার্লামেন্ট ভবন হচ্ছে একটি রাজপ্রাসাদ, তাই যদি কেউ এই রাজপ্রাসাদে অর্থাত পার্লামেন্ট ভবনে মারা যান তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ রাজকীয় মর্যাদায় সমাহিত করতে হবে, কেননা তখন এটা তাঁর একটি অধিকার। তাই আইন বিশেষজ্ঞ ঠাট্রা করে আরো বলেন- পার্লামেন্ট ভবনে যে মুহূর্তে আপনার কোনো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেবে, অবিলম্বে স্বেচ্ছাসেবক দল এসে আপনাকে পার্লামেন্টের বাইরে নিয়ে যাবে, যাতে রাজকীয়ভাবে সমাহিত হবার অধিকারটি আপনার ক্ষেত্রে আর প্রযোজ্য না হয় এবং একই সাথে মৃত্যুর কারণে শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হতে না হয়।
এটা শুধু হাস্যকরই নয়, মহা আজগুবি হাস্যকর আইন বটে। যদি কেউ ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ভবনে মারা যান, তাহলে তাকে কি ভাগ্যবান বলবেন, নাকি দূর্ভাগ্যবান বলবেন? নাকি তা সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে একদম বিরত থাকবেন?