সুবর্ণা. অন্য পাশে পূর্ব মন্দির এলাকায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সহায়তায় নির্মিত মন্দিরগুলো দেখা যায়। এখানকার মন্দিরগুলো পশ্চিম অঞ্চলের মন্দিরগুলোর তুলনায় সমৃদ্ধ নয়; যাতায়াত ব্যবস্থাও তুলনামূলকভাবে খারাপ। এখানকার অনেক মন্দির কাঠ দিয়ে তৈরী। থাইল্যান্ডের পবিত্র মন্দির পুকুরের উত্তর দিকে অবস্থিত, যা তৈরি করা হয়েছে সাদা মার্বেল দিয়ে। এ মন্দিরে থাই বৈশিষ্ট্যের ছাপ স্পষ্ট। এর পাশেই দেখতে পাবেন জাপান ও ভারতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা যৌথভাবে নির্মিত 'মহামায়া বিশ্ব শান্তি' (mahamaya vishwa shanty) মন্দির। তার দক্ষিণ দিকে মিয়ারমারের সোনার মন্দির, যেটি পূর্ব মন্দির এলাকার সবচে পুরনো স্থাপত্যগুলোর অন্যতম। এই মন্দিরের ভিতরে তিনটি প্যাগোডা আছে। এগুলোর মধ্যে সবচে আকর্ষণীয় হল শিখারা (shikhara) প্যাগোডা। এর অদূরেই অবস্থিত 'লোকমানাপুলা' (lokamanapula) প্যাগোডা। এটি মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের স্টাইলে তৈরি সোনালী রঙের বড় প্যাগোডা। এই প্যাগোডার কাছেই রয়েছে শ্রীলংকানদের দ্বারা তৈরি মন্দির।
আলিম. সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লুম্বিনির আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম পর্যটন স্থানে পরিণত হয়েছে। এসব গ্রামে ভ্রমণ করে পর্যটকরা লুম্বিনির স্থানীয় অঞ্চলের লোকদের জীবনযাপন প্রণালী সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পারেন। স্থানীয় গাইডের সাহায্য নিতে হলে আপনাকে দৈনিক ৫০০ রুপি গুনতে হবে। ইচ্ছা হলে আপনারা সাইকেল ভাড়া করে ম্যাপ নিয়ে একা একাও বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করতে পারেন।
সুবর্ণা. উন্নয়ন এলাকায় কয়েকটি রেস্তোরাঁ আছে। লুম্বিনি গার্ডেন রেস্তোরাঁ একটি আধুনিক স্টাইলের লাল ইট দিয়ে তৈরি স্থাপত্য। এই রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। উন্নয়ন এলাকার লুম্বিনি বাজারে সস্তা হোস্টেল আছে। এখানকার খাবার তুলনামূলকভাবে সস্তা, এবং থাকার পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। এখানে আপনি নেপালি খাবার পাবেন। সাধারণ হোস্টেল ছাড়াও, এ এলাকায় উচ্চমানের হোটেলও আছে। লুম্বিনি বুদ্ধা হোটেলে প্রতিদিনের রুম ভাড়া ১৫ থেকে ২০ মার্কিন ডলার। এখানকার পরিবেশ খুবই শান্ত। হোটেলটি উন্নয়ন এলাকার দক্ষিণাঞ্চলের নিবিড় বনে অবস্থিত। মায়া গার্ডেন রিসোর্টে প্রতিদিনের কক্ষভাড়া ৭০ মার্কিন ডলার। এই রিসোর্টটি মন্দির এলাকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। হোটেলের রুমগুলো স্বাভাবিকভাবেই বেশ আরামদায়ক। হোটেলের রেস্তোরাঁর খাবারের স্বাদও খুবই চমত্কার। লুম্বিনি হোক হোটেল একটি দারুণ সুন্দর ও সমৃদ্ধ হোটেল। এখানে প্রতিদিন কক্ষপ্রতি ভাড়া ৯০ থেকে ১২০ মার্কিন ডলার। জাপানের ডিজাইনার জাপানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কথা মাথায় রেখে এ হোটেলের নকশা এঁকেছিলেন। বাহির থেকে দেখলে হোটেলটিকে একটি জাপানি গ্রামের মতো মনে হবে। হোটেলের ভিতরে অবশ্য পাশ্চাত্য ও জাপানি—উভয় স্টাইলে নির্মিত কক্ষ আছে। এখানে জাপানি খাবারও পাওয়া যায়।
আলিম. আচ্ছা, আমাদের বর্ণনার মাধ্যমে আপনারা খুব সম্ভবত লুম্বিনি সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছেন। তবে নিজের চোখে দেখা আর বর্ণনা শোনার মধ্যে পার্থক্য আছে। তাই, সুযোগ পেলেই বেড়িয়ে আসুন লুম্বিনি, গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান।
(সুবর্ণা/আলিম)