|
খ. প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সুন্দর গানের পর এবার হংকংয়ের আরও কিছু পর্যটন তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। আপনারা জানেন, হংকং একটি বড় শহর নয়, তবু এর লোকসংখ্যা অনেক বেশি। এ-কারণে হংকংয়ের পরিবহনব্যবস্থা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে এটি সহজে যানজটের কবলে না পড়ে। হংকংয়ে বাস, ট্যাক্সি, সাবওয়ে ও স্টার ফেরিসহ বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা আছে। তবে মনে রাখতে হবে যে, হংকংয়ে বেড়াতে আসলে ট্যাক্সতে না-বসাই ভালো। কারণ, এখানে ট্যাক্সি ভাড়া অনেক বেশি। এ সম্পর্কে আমাদের গাইড বললেন,
ক. 'হংকংয়ের ট্যাক্সির আরেক নাম 'হৃত্স্পন্দন গাড়ি'। কারণ প্রতি ২০০ মিটার পর পর ট্যাক্সি ভাড়া বাড়তে থাকে। এভাবে কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করলে আপনাকে কয়েক শত হংকং ডলার ভাড়া গুনতে হবে।'
খ. এটা খুবই সত্যি কথা। প্রথমবার যখন আমি হংকং ভ্রমণে যাই, তখন ট্যাক্সিতে বসে মাত্র ১৫ মিনিট যেতে না যেতেই দেখি মিটারে ৬০ হংকং ডলার উঠে গেছে। তখন থেকে যখনই হংকংয়ে বেড়াতে গেছি, ট্যাক্সির নামও মুখে নিইনি; যাতায়াতের জন্য শুধু সাবওয়ে ও বাস ব্যবহার করেছি। হংকংয়ের সাবওয়ে অবশ্য জালের মতো বিস্তৃত। সাবওয়েতে আপনি শহরের যে-কোনো স্থানে সহজেই যেতে পারেন। কোনো চিন্তা নেই।
ক. আচ্ছা, হংকংয়ে আর কী কী মজার পর্যটন স্থান আছে?
খ. আমার সবচে প্রিয় একটি স্থান হচ্ছে 'হংকং ওসেন পার্ক'। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ দারুণ সুন্দর। পার্কের ভেতরে নানা ধরনের পশুপাখি ও চিত্তবিনোদনের নানান ব্যবস্থা আছে। এটি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম ওসেন পার্ক। পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসেন আনন্দ করার জন্য। স্থানীয় লোকেরাও ছুটির দিনে বাচ্চাকে নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন। এখানে আছে রোলার কোস্টার, বাম্পার কার ইত্যাদি। পার্কে দুটি সুন্দর পান্ডা আছে। পান্ডাদুটির নাম ইং ইং এবং লে লে। ২০০৭ সালে চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা প্রতিষ্ঠার ১০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীন সরকার পান্ডা দুটি উপহার হিসেবে হংকংকে দিয়েছিল।
ক. আমি পান্ডা বেশ পছন্দ করি। আমি মনে করি, পান্ডা শুধু চীনের জাতীয় পশু নয়, বরং এটি সহজ-সরল সৌন্দর্যের প্রতীক। হংকংয়ে বেড়াতে আসলে, অবশ্যই পান্ডা দেখে যাবেন। সে যাক, এবার আবারও গান শোনার পালা। গানের নাম 'আমার ১৯৯৭'। এ-গানটি গেয়েছেন চীনের জনপ্রিয় গায়িকা আই চিং। ১৯৯৭ সালে হংকং চীনের অধীনে চলে আসার সময় তিনি নিজের জীবনের গল্প নিয়ে এ-গানটি রচনা করেছেন এবং গেয়েছেন।
খ. হংকংয়ের ওসেন পার্ক ছাড়া, তাইউ পাহাড়ের কাছে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ডও একটি খুবই মজার পর্যটন স্থান। হংকংয়ের ডিজনিল্যান্ড বিশ্বের সপ্তম ডিজনিল্যান্ড। এটি গড়ে উঠেছে তাইউ পাহাড়ের কাছে। ডিজনিল্যান্ডটি চারটি প্রধান এলাকা নিয়ে গঠিত। চারটি এলাকা হচ্ছে: মার্কিন স্টাইল স্ট্রিট ও জেলা, অনুসন্ধানের বিশ্ব, ফ্যানটাসি বিশ্ব ও ভবিষ্যত বিশ্ব। প্রতিটি এলাকায় আপনারা বিভিন্ন ধরনের মজার জিনিস উপভোগ করতে পারবেন। সেখানে আপনারা দেখতে পাবেন কৃত্রিমভাবে তৈরী আফ্রিকার তৃণভূমি, রহস্যময় এশিয়ার বন ও ছোট দ্বীপ, বিস্তীর্ণ নদী এবং রূপকথার স্নো ওয়াইট, ভালুক ভিনি ইত্যাদি।
ক. হংকংকে বিশ্বের 'কেনাকটার স্বর্গ' বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এখানে বলতে গেলে বিশ্বের সবধরণের পণ্যদ্রব্য পাওয়া যায়। আপনি হংকং থেকে সেসব পণ্য কিনতে পারেন কোনো শুল্ক না-দিয়েই। এ-জন্যে হংকংয়ে বেড়াতে আসলে আপনারা অবশ্যই শপিং করবেন। চিউলোং এবং চোংহুয়ানের বিভিন্ন রাস্তায় নানা ধরনের শপিং মল ও দোকান দেখা যায়। প্রসাধন সামগ্রী, কাপড়-চোপড়, জুতা ও ঘুড়িসহ বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য সস্তায় কেনা যায়।
খ. হংকংয়ের খাবারও কিন্তু সুস্বাদু। আপনারা দুধ চা, আম মিষ্টি, ফ্রাইড রাইস নুডলসসহ বিভিন্ন ধরনের মজার খাবার পাবেন এখানকার রেস্তোরাঁগুলোতে।
ক. আচ্ছা, হংকংয়ের বিভিন্ন পর্যটনতথ্য জানার পর আবারও গান শোনার পালা। তুমি বলেছো হংকংয়ের রাতের দৃশ্য দারুণ সুন্দর। আমরা এখন 'হংকংয়ের রাত' নামক একটি সুন্দর গান শুনবো।
খ. বন্ধুরা, সময় শেষ হয়ে এলো। আজকের ভ্রমণ শেষ করার আগে আমরা নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবো। আপনাদের সমর্থনে গেল বছর আমরা 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানটি প্রচার অব্যাহত রাখতে পেরেছি। আগামীতেও আপনাদের সমর্থন পাবো বলে আশা করছি। (সুবর্ণা/আলিম)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |