Web bengali.cri.cn   
তথাকথিত বিশ্বের শেষ দিনে সংঘটিত মজার মজার বিষয়
  2012-12-24 16:33:14  cri

যদিও এখন আমরা সবাই জানি গত ২১ ডিসেম্বর ছিল পৃথিবীর শেষ দিন - এমন কথা সত্যি নয়, তবে তা সত্যি বিশ্বে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। কেউ কেউ তা বিশ্বাস করে বেঁচে থাকার জন্য অনেক ব্যবস্থা নেয়। কেউ কেউ এ ব্যাপারটিকে হালকা করে এবং বিনোদনের নিয়ে দেখেন।

ল্যাটিন আমেরিকার দেশ চিলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গণজরিপ থেকে জানা গেছে, এ দেশের ২৫ শতাংশ নাগরিক ২১ ডিসেম্বর বিভিন্ন অজুহাতে অফিসে না যাওয়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া তাদের মধ্যে অর্ধেক লোক নিজের বসকে জানাতে চায়, নিজে কুসংস্কারে বিশ্বাস করে বলে সেদিন অফিসে যেতে পারবে না। আরো ৩০ শতাংশ মানুষ আশা করে, নিজের কোম্পানি পৃথিবীর শেষ দিনের আগে তাদেরকে বেতন দিতে পারে। আচ্ছা শিহাব, এ খবর পড়ার পর চীনের একটি কোম্পানির কথা আমার মনে আসে। এ কোম্পানি ওই দিন কর্মীদের ছুটি দেয়।

সেটি চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের একটি আই-টি কোম্পানি। কোম্পানির এ সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই কর্মীদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। ছুটি ছাড়া কোম্পানি কর্মীদের প্রতি কয়েকটি আহ্বানও জানিয়েছে।

ছুটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছুটির দিন ভালোভাবে নিজের নিরাপত্তা রক্ষা করবে, জ্বালাতন এড়ানোর জন্য মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা যাবে। আর সবাই যেহেতু সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকে, তাই ছুটির দিনে পরিবারকে বেশি সময় দেবে।

এ ছাড়া আরো একটি কোম্পানি ছুটি দেওয়া ছাড়া সব কর্মীকে 'উপহার ব্যাগ' দিয়েছে। সেটা দেওয়া হয়েছে পৃথিবীর শেষ দিনের জন্য প্রস্তুতি নিতে।

এ ব্যাগে ছিল: লাইফ জ্যাকেট, মোমবাতি, ইন্সট্যান্ট নুডলস ইত্যাদি। জরুরি অবস্থায় এসব জিনিস কাজে লাগানো যাবে।

একই সঙ্গে মেক্সিকোর শিল্পপতিরা 'পৃথিবীর শেষ' নামে 'সেট মিল' তৈরি করে। তারা মনে করে, সময়টি ব্যবসার ভালো সুযোগও বটে। তাদের এ সেট মিলে ছিল ম্যাচ, ছুরি, চকোলেট, একটি নোটবুক, বোতলজাত পানি এবং মেক্সিকোর বিশেষ মদ। এ সেট মিলের উত্পাদনকারীরা মনে করেন, পৃথিবীর শেষ যদি সত্যিই আসে, তাহলে এসব জিনিস প্রস্তুত করলে খুব ভালো হবে।

এখন আমরা রাশিয়ার দিকে ফিরি একটু। যদিও রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, তিনি পৃথিবীর শেষ এমন কথা একদম বিশ্বাস করেন না এবং আশা করেন সবাই আনন্দের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে, তবে অনেকেই এমন মনে করে না। ২১ তারিখের আগে অনেকেই খাদ্য ও মোমবাতি কেনে। এ ছাড়া রাশিয়ার একটি কারাগারে অনেক নারী বন্দী বিশ্বাস করতো পৃথিবী সত্যিই শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুধু বিশ্বাস করা তো বড় ব্যাপার না, তাই না? আরো গুরুতর বিষয় হলো তাদের মধ্যে মনোস্নায়ু রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এ কারাগারের পরিচালকদের নিশ্চয়ই এটা নিয়ে মাথাব্যথা হয়েছে।

এখন আমরা ইন্টারনেটে লোকজন কীভাবে এ বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করেছে, সে বিষয় নিয়ে কিছু বলবো। এইমাত্র আমরা বলছিলাম যে, বিশ্বে বিভিন্ন দেশে কিছু লোক সত্যি পৃথিবী শেষ হচ্ছে এমন কথা বিশ্বাস করেছে, তবে আসলে অধিকাংশই তা বিশ্বাস করে নি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ওদিনটিকে আসলে একটি উত্সবের দিন হিসেবে দেখে।

চীনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মিস্টার লি বলেন, তার বন্ধু তাকে একসাথে রেঁস্তোরায় সুস্বাদু খাবার খাওয়ান এবং কে টি ভিতে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, সবাই যেহেতু কাজে খুব ব্যস্ত থাকে, তাই এমন সুযোগে মজা করাটা খুব ভালো ব্যাপার।

পৃথিবী শেষ হচ্ছে – এ ধারণা আসলে অনেক তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদের উত্সাহ যুগিয়েছে। নিজের প্রিয় মানুষকে ভালোবাসা জানানোর উত্সাহ

এটা খুব মিষ্টির ব্যাপার। আরো একটু রোম্যান্টিক বোধ আসে পৃথিবী শেষ হবে মনে আসলে। আসলে সত্যি অনেক তরুণ-তরুণী এদিন প্রেমে পড়েছে।

কিছু কিছু লোক চলচ্চিত্র '২০১২' মতো নকল আর্ক টিকিট তৈরি করেছে। খুবই প্রতিভাবান, তাই না?

টিকিটে লেখা আছে টিকিটের দাম ১ বিলিয়ন ইউরো। আর্ক ওঠার ঠিকানাও চলচ্চিত্রের মতো চীনের তিব্বতে। আসলে অনেকেই এ টিকিট কিনেছে, তবে লেখা দামে নয়। এটা আসলে এক রকমের মজা। হয়তো অনেকেই এমন জিনিস স্মারকবস্তু হিসেবে রাখতে চায়।

এ পৃথিবী দীর্ঘজীবী কিনা, তা আসলে নির্ভর করে বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন অঞ্চল কীভাবে প্রকৃতি ও মানবজাতিকে ব্যবহার করে – তার ওপর। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, যে কোনো বিষয়কে সব সময় বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করতে হয়। সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040