Web bengali.cri.cn   
পেইচিং থানচেন মন্দির-- ২
  2012-12-12 17:28:15  cri
প্রকাশ. আপনারা ইতোমধ্যেই জেনে গেছেন যে, থানচে মন্দিরের ইতিহাস ১৭০০ বছরেরও পুরনো এবং এটি পেইচিংয়ের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। সামনে দক্ষিণ দিক খোলা রেখে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে। আসলে চীনের অধিকাংশ মন্দিরই এভাবে স্থাপন করা হয়। মন্দিরের কাছে ৯টি বড় ও উঁচু পাহাড় আছে। উঁচু পাহাড়টি মন্দিরের গায়ে উত্তরপশ্চিম দিক থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস লাগতে দেয় না। এ-কারণে থানচে মন্দিরের আবহাওয়া পেইচিং শহরের চেয়ে গরম; এখানে বৃষ্টিও হয় তুলনামূলকভাবে বেশি। মন্দিরের ভেতরে পুরনো গাছ ও বৌদ্ধ ধর্মের প্যাগোডা আছে। সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো কাঠামো ও গাছ-ফুলের সংমিশ্রণে মন্দিরের দৃশ্য দারুণ সুন্দর লাগে।

সুবর্ণা. থানচে মন্দিরের দশটি সুন্দর দৃশ্য প্রাচীনকাল থেকে অতি বিখ্যাত। মন্দিরের স্থাপত্য মধ্য, পূর্ব ও পশ্চিম-- তিনটি দিক নিয়ে গঠিত। মধ্যরাস্তায় স্থাপত্যের দরজা, থিয়ানওয়াং হল, তাসিয়োং হলসহ বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন হল দেখা যায়; পূর্ব দিকে মঠাধ্যক্ষের কক্ষ, ইয়ানছিং ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপত্য আছে এবং পশ্চিম দিকে বৌদ্ধসাট্টভা হলসহ নানা স্থাপত্য স্থাপিত হয়েছে। তা ছাড়া, মন্দিরের আশেপাশে শান্ত কক্ষ, উপর ও নিচে প্যাগোডা প্রাঙ্গণ এবং পেছনে পাহাড়ের হ্রদের অবস্থান। মন্দিরের বাইরে পাহাড়ের প্রবেশ পথে তিনটি চার স্তম্ভবিশিষ্ট কাঠের তোরণ নির্মিত হয়েছে। তোরণের সামনে দুটি পুরনো পাইন গাছ। দুটি গাছের শাখা মিলেমিশে সবুজ ছাদের মতো তোরণটি পর্যটকদের জন্য ছায়া বিস্তার করে। তোরণের সামনে দুটি পাথরের সিংহ আছে; একটু স্ত্রী ও অন্যটি পুরুষ। সিংহের চুল, চেহারা ও আকার ভালভাবে খোদাই করা। দূর থেকে দেখলে দুটো প্রাণীকে পবিত্র ও সাহসী মনে হয়।

প্রকাশ. প্রিয় বন্ধুরা, এবার একটি গান শুনবো। গানের কথা এমন: যখন চাঁদের আলো আমার চেহারায় পড়ে/ কম সময়ের জন্য আমার মুখ অন্যরকম লাগবে/ একধরনের দুঃখ স্যুপ আছে, যা পান করে আমি শক্তি পাবো/ চোখ বুঝে স্বর্গ দেখি/ সেখানে তোমার হাসি দেখতে পারি/ তোমার জন্য আমি বণ্যভালুকে পরিণত হয়েছি/ হয়েছি পাগল/ আমাদের কি আবার দেখা হবে?/ আমি গৌতম বুদ্ধের মূর্তির সামনে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করি/ তোমার প্রেমের জন্য জীবনের আয়ু কমাতেও আমি রাজি ...

সুবর্ণা. সুন্দর গানটি শোনার পর এখন থানচে মন্দিরের অন্যান্য সুন্দর দৃশ্যের সাথে পরিচিত হবার পালা। মন্দিরে প্রবেশ করার পর আপনারা সহজেই খুঁজে পাবেন থিয়ানওয়াং হল। এ-হলের মাঝখানে আছে মৈত্রেয়া মূর্তি। হলের দু'পাশে আচে স্বর্গের চার রক্ষকের মূর্তি। হলে প্রবেশ করার পর মনে শান্ত ও পবিত্র ভাবের উদয় হয়। থিয়ানওয়াং হলের পেছনে 'তাসিয়োং হল'। চীনের বৌদ্ধ ধর্মের মন্দিরে সবসময় এধরনের হল দেখা যায়। এ-হলের ছাদে দুটি বড় আকারের সবুজ রঙয়ের উজ্জ্বল টালির পশুমূর্তি আছে। এ-পশুর চীনা নাম 'ছিওয়েন'। চীনের রুপকথার ড্রাগনের মোট ৯টি ছেলে আছে; প্রত্যেক ছেলে একেকটি বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। ছিওয়েন হল ড্রাগনের ৯ ছেলের এক ছেলে। কথিত আছে, সে আগুন প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এ-কারণে প্রাচীনকালের বাসভবনের ছাদে সবসময় ছিওয়েনের মূর্তি রেখে দেয়া হতো, আগুনের হাত থেকে বাঁচার আশায়। থানচে মন্দিরের দুটি ছিওয়েন ইউয়ান রাজবংশের উত্তরাধিকার। তাসিয়োং হলের মাঝখানে বড় সাইজের গৌতম বুদ্ধের মূর্তি আছে; মূর্তির পেছনে আলো দেখা যায়। মূর্তির পেছন দিকে সোনালী পাখার পাখি, মেয়ে ড্রাগন, সিংহ, হাতি ও ছাগলসহ বিভিন্ন ছবি অংকিত আছে।

প্রকাশ. থানচে মন্দিরের মাঝখানে একটি দোতলা কাঠের ভবন আছে। সেখান থেকে মন্দির ও দূরের পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। থানচে মন্দিরের পুরাকীর্তির সংখ্যা অনেক বেশি। এর মধ্যে রয়েছে রহস্যময় পাথর মাছ, বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র শোনার বাঘ মূর্তি, থিয়ানওয়াং হলের সামনে রাখা দুটি বড় সাইজের তামার পাত্র ইত্যাদি। থানচে মন্দিরের সন্ন্যাসীদের খাবার রান্না করার জন্য থিয়ানওয়াং হলের সামনে একটি ১.১ মিটার গভীর ও ১.৮৫ মিটার ব্যাসের একটি তামা পাত্র আছে। এ-পাত্রে সেদ্ধ ভাত রান্না করতে অল্প আঁচে প্রায় ১৬ ঘন্টা সময় লাগে।

সুবর্ণা. প্রিয় বন্ধুরা, এবার আবারো গান শোনার পালা। গানের নাম 'তিন সন্ন্যাসী'। এটি চীনের একটি জনপ্রিয় ছড়াগান। এতে দার্শনিক তত্ত্ব রয়েছে। গানের কথা এমন: একজন সন্ন্যাসী মন্দিরে এসে বালতি দিয়ে পানি পরিবহন করে/ দু'জন সন্ন্যাসী এসে একসঙ্গে বালতি দিয়ে পানি পরিবহন করে/ তবে তৃতীয় সন্ন্যাসী মন্দিরে আসার পর/ তাদের কেউ পানি আনার কাজ করতে চায় না.....। চলুন একসঙ্গে এ মজার গানটি শুনি।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040