Web bengali.cri.cn   
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ
  2012-09-17 10:29:30  cri
ইন্টারনেট জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি ওয়েবসাইট তরুণ-যুবদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়েছে। সেটি হলো ফেসবুক। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ, তাঁর বিয়ে ও জীবন নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র 'সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট' জাকারবার্গ সম্পর্কে জানতে মানুষের আগ্রহও অনেক বেড়েছে।

জাকারবার্গ মানুষদের জন্য ব্যক্তিগত তথ্য বিনিময়ের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন। তবে তিনি নিজেই নির্ভৃতে থাকতে পছন্দ করেন এবং নিজের ব্যক্তিগত জীবন মানুষের সামনে তুলে ধরতে পছন্দ করেন না। যদিও তিনি বিলিয়নিয়ার হয়েছেন, তবে তিনি অনেকদিন ভাড়া বাড়িতে থেকেছেন এবং সবসময় জিন্স ও টি-শার্ট পরেন।

তিনি অবশ্য একটি নতুন বাড়ি কিনেছেন। বাড়িটি স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সান ফ্রান্সিস্কোর কাছাকাছি একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিউনিটিতে। বাড়ির মূল্য ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। তিনি ও তাঁর স্ত্রী প্রিসিলা চান এবং বিস্ট নামে তাঁদের পোষা কুকুর এই নতুন বাড়িতে থাকে। তথ্যমাধ্যমের সামনে তিনি ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব এড়ানোর চেষ্টা করেন সবসময়। এর আগে একটি ম্যাগাজিন তাঁর আগের জীবন নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছে, যার জন্য তিনি আদালতে মামলা দায় করেছেন। এখন ফেসবুকের অংশীদাররাও এই ওয়েবসাইটের ভবিষ্যত্ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারেন না। কেন সেটা? কারণ এই কোম্পানির বৃহত্তম অংশীদার ও কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ নিজের চিন্তাধারা অন্যকে জানাতে পছন্দ করেন না।

ডেভিড কির্কপ্যাট্রিক নামের একজন লেখক 'ফেসবুকের ভূমিকা' শীর্ষক একটি বই লিখেছেন। লেখকের মতে, ফেসবুক পুরো ওয়েবসাইট জাকারবার্গের নিজের হাতে আকড়ে ধরা আছে। এটা সবচেয়ে মজার বিষয়। এই কোম্পানির উন্নয়ন হল তাঁর নিজের অভিনয়। তাঁর নিজের মঞ্চ।

জাকারবার্গের বিশ্ববিদ্যালযের সহপাঠী স্মরণ করে সাংবাদিককে জানান, জাকারবার্গ সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অনেক পছন্দ করতেন। তবে ২০০৪ সালের প্রথম দিকে সহপাঠীর মধ্য থেকে হঠাত্ তিনি এক মাসের জন্য অদৃশ্য হয়ে যান। যখন তিনি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন, তিনি বন্ধুদেরকে 'ফেসবুক' নামের একটি ওয়েবসাইটে সাইন-আপ করার উত্সাহ দিতে শুরু করেন।

প্রথম দিকে তাঁর এই আচরণ অন্যদের বিরক্তকর লাগতো। স্টিফেন নামে একজন ছাত্রী বলেন, তিনি হলেন ৯২তম সাইন-আপ কারী। তিনি জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই অনেকে জাকারবার্গের আচরণকে খুব বিরক্তিকর বলে মনে করতে থাকে। স্টিফেনের মনে আছে, একটি ক্লাসে শিক্ষক সবাইকে নিজের পরিচয় দেওয়ার অনুরোধ জানান। জাকারবার্গ যখন নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন, সবাই ভ্রু কুঞ্চিত করেন। তখন কেউ চিত্কার করে বলে, পরিচয় না দাও, আমরা সবাই তোমাকে জানি, ফেবুক ভাই। তখন জাকারবার্গের জন্য সত্যি খুব বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তখন তিনি সত্যি ফেসবুক ওয়েবসাইটের কারণে সহপাঠীর অবজ্ঞা কুড়িয়েছেন।

জাকারবার্গের সহপাঠী জেমস স্মরণ করে বলেন, জাগারবার্গ এর আগে তাদেরকে বলেছিলেন যে, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে দু'বছর সময় লেগেছে। আমার ফেসবুক তৈরি করার গতি দেখে তিনি লজ্জা পাবেন। যদিও শুরুতে জাকারবার্গের আচরণে সবাই খুব বিরক্তি বোধ করেন, তবে ওই বছর শেষে তিনি একটি রেকর্ড সৃষ্টি করেন। ফেসবুকের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৬ হাজারে। এটা সত্যি সহজ ব্যাপার নয়।

এখন বিশ্বে জাকারবার্গ প্রতিষ্ঠিত ফেসবুকের সদস্য সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং এই কোম্পানির মূল্য ১০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। অনেকে জাকারবার্গকে এখন 'দ্বিতীয় গেইজ' বলে ডাকেন। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ ধনীদের অন্যতম। কিভাবে তিনি এমন সাফল্য অর্জন করেছেন। হয়তো তিনি মানুষের সঙ্গে সামাজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পছন্দ করেন এবং লোকজনও তাঁকে পছন্দ করে। লেখক ডেভিড কির্কপাট্রিক বলেন, জাকারবার্গের সফল হওয়ার কারণ হলো তিনি জানেন, বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষ ও কম্পিউটারের মধ্যে কিভাবে সম্পর্ক গড়ে দিতে হয়।

জাকারবার্গ মনে করেন, তথ্যের আদান-প্রদান ভবিষ্যত বিশ্বের প্রধান ভূমিকা পালন করবে। তিনি এমন একটি মঞ্চ স্থাপন করবেন, যাতে মানুষ আরো ভালোভাবে ভাবনা বিনিময় করতে পারে এবং আরো ভালোভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040