Web bengali.cri.cn   
থিয়ান আন মেন চত্বর
  2012-08-29 20:11:28  cri
ক.থিয়ান আন মেন ভবন থিয়ান আন মেন চত্বরের উত্তর দিকে অবস্থিত এবং পেইচিং শহরের সবচেয়ে দীর্ঘ রাস্তা ছানআন রাস্তার সামনে অবস্থিত।থিয়ান আন মেন ভবনের দক্ষিণ দিকে হচ্ছে থিয়ান আন মেন চত্বর এবং সেখানে চীনা গণ বীরদের স্মৃতি মিনার, মাও সে তুং স্মৃতি ভবন, মহা গণভবনসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থাপত্য দেখা যায়।

খ. থিয়ান আন মেন ভবন হল প্রাচীনকালে চীনের সবচেয়ে মহা ভবনের অন্যতম। ১৯৪৯ সালের পয়লা অক্টোবর মহান নেতা মাও সে তুং এখানে দাঁড়িয়ে নয়া চীন প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন। তখন থেকে এ ভবনের সামনে পঞ্চতারকা খচিত লাল পতাকা উড়ছে। থিয়ান আন মেন ভবন দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি ভিত্তির উচ্চতা ৩৪.৭ মিটার, থিয়ান আন মেন ভবনে ৬০টি লাল রঙয়ের গোলাকার স্তম্ভ দেখা যায়, ভবনের উপর দুটি স্তরের সোনালি ছাদ দেখা যায়, পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে পর্যন্ত মোট ৯টি রুম এবং দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে পর্যন্ত মোট ৫টি কক্ষ রয়েছে।

ক.প্রতিদিন অনেক পর্যটক থিয়ান আন মেন ভবনে আরোহণ করে থিয়ান আন মেন চত্বরের দৃশ্য উপভোগ করে। আমরা এ ভবনের দোতলায় দাঁড়িয়ে গোটা চত্বরের দৃশ্য উপভোগ করতে পারি। থিয়ান আন মেন চত্বরে ১০ লাখেরও বেশি লোক একসাথে সম্মেলন করতে সক্ষম।...

খ. ছোটবেলার স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে চত্বরে এসে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। যখন জাতীয় সংগীত বাজার সঙ্গে সঙ্গে লাল রঙয়ের পতাকা আস্তে আস্তে উড়তে থাকে তখন মনে দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত হয়। এখন এ সম্পর্কে শ্রোতাবন্ধুদের একটি গান শোনাতে চাই। গানের নাম আমি পেইচিংয়ের থিয়ান আন মেন ভালোবাসি। এটি একটি সুন্দর ছড়া গান। গানের কথায় বলা হয়েছে, আমি পেইচিং থিয়ান আন মেন চত্বর ভালোবাসি, এখানে লাল সুর্য ওঠে, মহান নেতা মাও সে তুং আমাদের উন্নয়নের পথ নির্দেশনা দেন.....

ক. সুন্দর ছড়াগানটি শোনার পর এখন থিয়ান আন মেন চত্বরের বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। এ চত্বর পেইচিংয়ের একদম কেন্দ্রীয় এলাকায় অবস্থিত, মোট আয়তন ৪৪ হেক্টর। পূর্ব থেকে পশ্চিম দিক পর্যন্ত এর বিস্তার ৫০০ মিটার এবং দক্ষিণ থেকে পশ্চিম পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য ৮৮০ মিটার। এর মেঝে হাল্কা রঙয়ের গ্রানাইট দিয়ে বানানো হয়েছে। প্রতিদিন ভোরবেলায় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় পতাকা নমিত করার অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

খ. থিয়ান আন মেন চত্বরে চীনা জনগণের বিপ্লবী চেতনা ও দুর্জয় সাহস লিপিবদ্ধ রয়েছে। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এ চত্বরে গণ বীরদের স্মৃতি মিনার নির্মিত হয়েছে এবং চত্বরের পশ্চিম দিকে মহা গণভবন, পূর্ব দিকে চীনের বিপ্লব জাদুঘর, চীনের ইতিহাস জাদুঘর আর দক্ষিণ দিকে মহান নেতা মাও সে তুং স্মৃতি ভবন নির্মিত হয়েছে।

ক.আসলে প্রাচীনকালে থিয়ান আন মেন চত্বরের আকার ইংরেজি অক্ষর Tর মতো, নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এ চত্বর বিস্তীর্ণ করে নির্মিত হয়েছে। চীনের ইতিহাসে এ চত্বরে অনেক আন্দোলন ঘটেছে। যেমন ১৯১৯ সালের ৪ মের আন্দোলন এবং ১৯৩৫ সালের ২৯ জানুয়ারির আন্দোলন ইত্যাদি। তাছাড়া, ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে অনেক কুচকাওয়াজ আয়োজিত হয়েছে।

খ. উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় চীনের ৫০তম জাতীয় দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে আমি অংশ নিয়েছি। তখন আমি এবং আমার সহপাঠীরা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের জনসাধারণের শোভাযাত্রায় ছাংআন রাস্তায় হাঁটতাম। আমরা এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের জন্য কয়েক মাস রিহার্সাল করেছি, তখন দিনের বেলায় আমরা স্কুলে লেখাপড়া করতাম, রাতে ছাংআন রাস্তা পরিস্কার করার পর আমাদের শোভাযাত্রা দল বিভিন্ন দিক থেকে চত্বরে এসে রিহার্সাল করতাম। এ গল্প বলতে গিয়ে আমার মনে আরেকটি সুন্দর গানের সুর বেজে উঠল। এর নাম হল পঞ্চতারকা খচিত লাল পতাকা। গানের শিল্পী চীনের বিখ্যাত গায়ক সুন নান।

ক. গানের কথায় বলা হয়েছে, পঞ্চতারকা খচিত লাল পতাকার রঙ সুর্যের লাল রঙয়ের মতো, সবাই এ রঙটি খুবই পছন্দ করে। এ পতাকা বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর চেহারার মতো, অনেকে তোমাকে ভালোবাসে। পঞ্চতারকা খচিত লাল পতাকা তুমি আমার কর্তব্য, আমার প্রিয়, আমি তোমার জন্য উল্লাস ও শুভকামনা করি, তোমার নাম আমার প্রাণের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ।

খ. প্রাচীনকালে থিয়ান আন মেন চত্বরের উত্তর দরজা ছিল মিং ও ছিং রাজবংশের রাজপ্রাসাদের প্রধান দরজা। ছিং রাজবংশের শুনচি আমলে থিয়ান আন মেন বলে ডাকা হয়। প্রাচীনকালে নতুন রাজার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান, বিবাহ অনুষ্ঠান আর বলিদান অনুষ্ঠান এ ভবনে আয়োজিত হতো। ভবনের দক্ষিণ দেয়ালে পাঁচটি অর্ধেক গোলাকার দরজা দেখা যায়। মাঝখানের দরজা দিয়ে শুধু মাত্র রাজা হাঁটতে পারেন। ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো ইতিহাসের থিয়ান আন মেন চত্বর হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম চত্বর। চীনা জনগণের গণতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য যে সকল প্রচেষ্টা এবং বিদেশী আগ্রাসন প্রতিরোধের যে সব সংগ্রাম এ চত্বর তার স্বাক্ষী ।

ক.চত্বরের বাইরে চিনশুই নদী আছে, নদীতে ৭টি ছোট সাদা মার্বেল পাথরের সেতু নির্মিত হয়, মাঝখানে একটি সেতু সবচেয়ে চওড়া, তা রাজার জন্য স্থাপন করা হয়, এর দু'পাশে রাজার আত্মীয়স্বজন বা সরকারের কর্মকর্তাদের জন্য সেতু নির্মিত হয় এবং নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা আর সেবকরা শুধু পাশের ছোট সেতু দিয়ে হাঁটতে পারে।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040