Web bengali.cri.cn   
চীনের উন্নয়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ
  2010-04-08 19:11:17  cri
চীনের উন্নয়ন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বার্ষিক ফোরাম সম্প্রতি পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের ফোরামের বিষয় হলো "চীন ও বিশ্বের অর্থনীতিঃ উন্নয়ন, সুবিন্যাস ও সহযোগিতা"। বিশ্বের অর্থনীতি আর্থিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধারের দিকে পরিবর্তিত হচ্ছে, যদিও এ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া স্থিতিশীল নয়। এ পটভূমিতে চীনের অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তন ফোরামের প্রধান গুরুত্বের বিষয়ে পরিণত হয়। আজকের অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে কিছু বলবো।

বিশ্বের আর্থিক সংকট চীনের অর্থনীতির উপর, বিশেষ করে অর্থনৈতিক কাঠামো ও উন্নয়নের পদ্ধতি ক্ষেত্রে, নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ২০০৯ সালে চীনের রপ্তানির পরিমাণ ১৬ শতাংশ হ্রাস পায়। এ অবস্থা কয়েক দশকে হয়নি। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উত্সাহ দেয়ার জন্য বেশি পরিমানে ঋণ দেয়া হয়েছে। তবে এর ফলে চীনারা ফুলে উঠা অর্থনীতির হুমকির মুখে পড়েছে। তাছাড়া, চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায়ও গভীর অসংগতি ও সমস্যা আরোও স্পষ্ট হয়েছে। যেমন চীনের নিজস্ব উদ্ভাবনের সামর্থ্য ভাল না; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান ও আয় ব্যবধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধান করা দরকার।

সেকারণে চীন সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের গতি বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। উন্নয়ন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের ফোরামে উপপ্রধানমন্ত্রী লি কো ছিয়াং এ কথাই জোর দিয়ে জানিয়েছেন। তিনি বলেন,(১)

"জটিল পরিবেশের সম্মুখীন হওয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করা ও অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যস্ত করার বিষয়টি আমাদের জোরদার করা প্রয়োজন। এটি কেবল বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন প্রবণতার সঙ্গে খাপ খাওয়ায় চীনের অর্থনীতির ঝুঁকি প্রতিরোধের সামর্থ্য বাড়াবে তাই নয়, বরং দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকে সুসংহত করবে। আমাদের উচিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি উদ্ভাবনের গতি বেগবান করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাত্রা বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যস্ত করা।"

লি কো ছিয়াং বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানো হচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দীর্ঘদিনের কৌশল। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করা ও অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যস্ত করাই হলো প্রধান কর্তব্য। চীন অভ্যন্তরীণ চাহিদা, বিশেষ করে নাগরিকদের ভোগ্যপণ্যের চাহিদা, বাড়ানোর নীতি বরাবরই অনুসরণ করবে। এর পাশাপাশি কর্মসংস্থান, শিক্ষা, চিকিত্সা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কাজ আরো ভালোভাবে করবে। বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থসংস্থান কর্পোরেশন (আএফসি)-এর ভাইস-চেয়ারম্যান লু ওয়ান এ ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।

তিনি বলেন, সংকটের মধ্যেও চীনের অর্থনীতি ভালো করেছে। তবে বিশ্বের অর্থনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চীনের অর্থনীতি পরিবর্তিত পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছে। নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য চীনের দরকার নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি সুবিন্যস্ত করা । লু ওয়াং বলেন, (২)

প্রথমতঃ চীনের নতুন ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা বজায় রাখা দরকার, যাতে বিদেশের চাহিদা-ঘাটতি পূরণ করা যায়। অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহার, বিশেষ করে পরিসেবা ক্ষেত্রের ব্যবহার, ইতিবাচকভাবে বাড়ানো দরকার। পরবর্তী ১৫ থেকে ২০ বছরে এক বিলিয়ন মানুষ শহরে বসবাস করতে সক্ষম হবে। সুতরাং নগরায়ন চীনের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন চীনের।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পরিচালক হারুহিকো কুরোতা মনে করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তনের ব্যবস্থা কেবল চীনের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নকে বজায় রাখতে পারবে তাই নয়, বরং চীন এশিয়া এমনকি বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় আরো বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে। তিনি বলেন, (৩)

আঞ্চলিক সহযোগিতা ও একত্রীকরণ এশিয়ার উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীন এ প্রক্রিয়ায় প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে। চীনের সহযোগিতায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আরো টেকসই উন্নয়নের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তোলার চেষ্টা করবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040