খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সংগীতের সুর বাজালে মানুষের মনকে খুব আকর্ষণ করে । একসময় অন্যতম প্রধান বাদ্যযন্ত্র হিসেবে খৌ স্যুয়ান সংখ্যালঘু জাতির মধ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতো । খৌ স্যুয়ান চীনের সংখ্যালঘু জাতির এমন একটি বাদ্যযন্ত্র , যার ইতিহাস সুদীর্ঘকালের । চীনের অতি প্রাচীন সমাজে মানুষ খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সংগীত বাজাতে শুরু করতেন । সেকালে খৌ স্যুয়ানকে 'হোয়াং' অর্থাত্ 'রীড' বলা হতো ।

খৌ স্যুয়ানের চীনের বেশ কিছু অঞ্চলে বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে । তার রকমারিতাও বিভিন্ন ধরনের । খৌ স্যুয়ান তৈরির জন্য বাঁশ বা ধাতব ব্যবহার করা হয় । রীডের দিক থেকে খৌ স্যুয়ানকে একটি রীড বিশিষ্ট খৌ স্যুয়ান ও বেশ কয়েকটি রীড বিশিষ্ট খৌ স্যুয়ান-এ দু' ধরনের খৌ স্যুয়ানে বিভক্ত করা হয় । খৌ স্যুয়ান বাজানোর ব্যাপারে কেউ কেউ হাতের আঙ্গুলি এবং কেউ কেউ রেশমী তারের সাহায্য খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন ।

ইউননান প্রদেশে ই জাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে বাঁশ দিয়ে তৈরি খৌ স্যুয়ানের খুব জনপ্রিয়তা রয়েছে । বাঁশ দিয়ে তৈরি ই জাতির জনপ্রিয় বাঁশি তৈরির জন্য সাধারনতঃ শক্ত বাঁশ ব্যবহার করা হয় । বাঁশ দিয়ে তৈরি বাঁশির চেয়ে তামা ও লোহা দিয়ে তৈরি খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্রের অন্য ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে । এ দু' ধরনের ধাতু দিয়ে তৈরি বাঁশির বাজানো সংগীতের সুর শুনতে আরো স্পষ্ট ও মধুর । বাঁশ দিয়ে তৈরি বাঁশির চেয়ে ধাতু দিয়ে তৈরি খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্র একটু ছোট । যেমন চিং ফু সংখ্যালঘু জাতির মধ্যে প্রচলিত ধাতু দিয়ে তৈরি খৌ স্যুয়ান মাত্র ৩ সেন্টিমিটার লম্বা ।

যেমন আকার , ডিজাইন ও তৈরি তেমনি সংগীত বাজানোর ব্যাপারেও খৌ স্যুয়ান বাদ্যযন্ত্রের অসাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে । বাঁশির রীডের কম্পনের সাহায্যে খৌ স্যুয়ান বাজানো হয় । তা থেকে সংগীতের স্পষ্ট ও চড়া সুর শোনা যায় । কিছু কিছু খৌ স্যুয়ান রেশমী তারের সাহায্যে সংগীতের সুর বাজানো হয় । সংগীতের সুর ও শব্দ আরো বাড়ানোর জন্য শিল্পীর মুখের পরিবর্তন ও শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণও খুব গুরুত্বপূর্ণ । ফলে বৈচিত্র্যময় ও পরিবর্তনশীল সংগীতের সুর বাজানো যায় । (থান ইয়াও খাং)