v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
প্রাকৃতিক পরিবেশ সংক্রান্ত পর্যটন শিল্প তিব্বতের লাং সে গ্রামকে ধনী করেছে
2009-06-05 20:49:35

বন্ধুরা, " তিব্বতের চিয়াং নান" এবং " প্রাচ্যের দেশগুলোর সুইজার্ল্যান্ড" এ খ্যাতি পেয়েছে চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লিন চি এলাকার ' লাং সে' নামক একটি ছোট্ট গ্রাম । যা তিব্বতের ' কুং পু চিয়া দা' জেলার 'পা হে' উপকন্ঠে অবস্থিত। এটিও সি ছুয়ান-তিব্বত সড়কের একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থান । শীতকালে ঠান্ডা হলেও বেশি গাড়ি যাতায়াতের কারণে এ গ্রাম বসন্তের মতই প্রাণবন্ত থাকে। তিব্বতীরা আজও বংশানুক্রমে প্রচলিত তিব্বতী পিঠা, ঘি চা ও বার্লির মদকে খুবই পছন্দ করেন। তবে তারা মাঝেমাঝেই বিভিন্ন রেস্তোঁরায় গিয়ে পেইচিংয়ের তাত্ক্ষনিকভাবে রান্না করা খাসির মাংস, উত্তর-পূর্ব চীনের চিয়াও চি বা ইয়ুন নান প্রদেশের স্থানীয় খাবার--ইয়ুন নান মি সিয়ান খান। উল্লেখযোগ্য, 'লাং সে' গ্রামে অনেক তিব্বতী অধিবাসীদের দোকানে তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পণ্য বেশ প্রদর্শিত হয়। এ সব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পণ্য স্থানীয় অধিবাসীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কল্যাণ বয়ে এনেছে।

' লাং সে' গ্রামের কথা উঠলে আগে এখানকার শুধু ৮ পরিবারের ২৭ লোকজন ছিল। শ্রমশক্তির সংখ্যা কমের কারণে সকল অধিবাসীদের সাধারণত খাওয়া সমস্যাই বেশি জরুরি ছিল। গত ৬ মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণ ও আর্থিক সাহায্যে জীবনযাপনে দিন কাটিয়েছিল। ১৯৯৫ সালে তিব্বতের 'পা সুং ছুও' পর্যটন এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এক কথা ' পা সুং ছুও' ও 'লাং সে' -এর মধ্যে বেশি দূর নয়। এমন কি, 'পা সুং ছুও' অঞ্চলে যাওয়ার পথে নিশ্চয় ' লাং সে'র মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেমন ভাবা তেমন কাজ স্থানীয় সরকার ' লাং সে' গ্রামের পর্যটন উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি এ ছোট্ট গ্রামের কাছে নতুন প্রাণবন্ত অস্থার সৃষ্টি করেছে। এ সম্পর্কে স্থানীয় কমান্ডার সোইনাম ওয়াংদু বলেন

" আগে এ গ্রামে বসতবাড়ি এবং গরুর খামার সব মিলে মাত্র কয়েকটি ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে সি ছুয়ান-তিব্বত সড়কের কাছাকাছি অঞ্চলে 'পা হে' জেলা স্থাপিত হয়। এভাবেই 'লাং সে' গ্রামের এখানে স্থানান্তরিত হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ১২ লাখ ইউয়ান বরাদ্দ দিয়েছে। এ সব অর্থ অধিকাংশ স্থানীয় অঞ্চলের অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ব্যবহার করেছে।"

'লাং সে' গ্রামের উপপরিচালক নিইমা আনন্দের সঙ্গে আমাদেরকে বলেন

" যোগাযোগ সুবিধার কারণে আমাদের গ্রামের অনেক অধিবাসী নিজেদের দোকান খুলেছেন। তারা পৃথক পৃথকভাবে তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পণ্য, তিব্বতী সংগীত, খাবার এবং সেবা শিল্প কাজে ব্যবসা করেন। এখন অনেক অধিবাসীর বেশ ধনী জীবনে দিন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ আয় প্রধানত স্থানীয় পর্যটনেরদিকে সৃষ্টি করা হয়।"

৪৪ বছর বয়সী ফহুর্পু টসামজোর হচ্ছেন ' লাং সে' গ্রামের একজন সাধারণ অধিবাসী। তাঁর পরিবারের অবস্থা পর্যটন শিল্পের কারণে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:

" ব্যক্তিগত পর্যটন শিল্প কাজে লাগানোর পর, এখন আমার নিজের বড় বসতবাড়ি রয়েছে। আমরা নিজের জাতিয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পোষাক পরি , পর্যটকরা আমাদের সঙ্গে একসাথে ছবি তুলেছেন। আমাদের অনেক আনন্দ লাগে। এভাবেই আমার আয় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।"

এ ছাড়া, তিব্বত জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছে। গত কয়েক বছরে তিব্বতে সৌর শক্তি ও বায়ো গ্যাসসহ দুষণমুক্ত জ্বালানি উন্নয়নের গতি দ্রুততর হয়েছে । তিব্বতে ইতোমধ্যে সৌর শক্তি , ভূগর্ভস্থ তাপ শক্তি , বায়ু শক্তি ও ক্ষুদ্র আকারের জলসেচসহ নতুন ধরণের জ্বালানির কাঠামো গড়ে উঠেছে । তিব্বত পর পর "তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্মাণ পরিকল্পনা"সহ ধারাবাহিক প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও নির্মাণ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে । ফলে তিব্বতের বনের আবৃতির হার বেড়েই চলেছে এবং কার্যকরভাবে প্রাকৃতিক ব্যবস্থার কারবন স্থিরীকৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ।

1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China