তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লিন চি , ই খা চও লাসাসহ বিভিন্ন স্থানের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , এসব স্থানে আবারো ১৩টি প্রশাসনিক গ্রামের কৃষক ও পশু পালকদের গড় বার্ষিক আয় দশ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে । এ পর্যন্ত তিব্বতের গ্রামাঞ্চলে এ রকম প্রশাসনিক গ্রামের সংখ্যা ১৫টিতে পৌঁছেছে ।
পূর্ব তিব্বতের ছাং তু মহকুমার থুং সিয়া গ্রামে পীচ ও আপিলের গাছের ছায়ায় ছড়িয়ে রয়েছে একের এক তিব্বতী ধরণের আবাসিক বাড়ি । গত ৬ বছরে থুং সিয়া গ্রাম কৃষি ও পশু পালন উন্নয়নের পাশাপাশি নির্মাণ দল সংগঠিত করে বিভিন্ন শহরে কাজ করেছে । ফলে এ গ্রামের কৃষক ও পশু পালকদের মাথাপিছু বার্ষিক আয় দশ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে । তিব্বতের ছাং তু এলাকায় থুং সিয়া গ্রাম বহু ক্ষেত্রে প্রথম স্থান দখল করেছে । এ গ্রাম সর্বপ্রথমে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ দশ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে , সর্বপ্রথমে সারা গ্রামে নিরাপদ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণ করেছে এবং সর্বপ্রথমে প্রতিটি পরিবারে টিলিফোন ও বায়ো গ্যাস চালু হয়েছে । পূর্ব তিব্বতের নতুন গ্রাম গড়ে তোলার কাজে থুং সিয়া গ্রাম একটি উজ্জ্বল মুক্তায় পরিণত হয়েছে । এ গ্রাম আগেকার ভিখারী গ্রাম থেকে এক লাফে উঠে পূর্ব তিব্বতের প্রথম স্বচ্ছ গ্রামে রূপান্তরিত হয়েছে ।
মুক্তির আগে থুং সিয়া গ্রামের ১৫টি পরিবারের আশিজন লোকের মধ্যে প্রায় সবাই ভিখারী ছিলেন । তাদের কেউ কেউ আশেপাশের গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে বেড়াতেন , কেউ কেউ দূরদুরান্তের গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করতেন । তাদের অনেকে এমন কি আর নিজের বাড়িতে ফিরেন নি ।
গণতান্ত্রিক সংস্কারের পর , বিশেষ করে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর কেন্দ্রীয় সরকার পর পর চারবার তিব্বতের কাজকর্ম সংক্রান্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে কৃষি ও পশু পালন কর-মওকুফ ওয়ান-টু-ওয়ান তিব্বত সহায়তাকারী কৌশল নির্ধারণ করে । কেন্দ্রীয় সরকার যথাক্রমে তিব্বতে বিপুল সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্মাণের কাজ হাতে নেয় । ফলে তিব্বতের অবকাঠামো লক্ষ্যণীয়ভাবে উন্নত হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারের তৃতীয় ও চতুর্থ তিব্বতের কাজকর্ম সংক্রান্ত আলোচনা সভায় আলাদা আলাদাভাবে ৬২টি ও ১১৭টি প্রধান প্রধান নির্মাণ প্রকল্প নির্ধারণ করা হয় । এগুলোর মোট পুঁজি যথাক্রমে ৪.৮৬ ও ৩২.০৯ বিলিয়ন ইউয়ান । কেন্দ্রীয় সরকারের এসব নীতি ও ব্যবস্থা তিব্বতের কৃষক ও পশু পালকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্যে সুষ্ঠু ভিত্তি স্থাপন করেছে ।
তিব্বতের ই খা চে শহরের তি না গ্রামের কৃষকরা অতীতে প্রধানত বার্লি চাষ ও গবাদি পশু পালন করতেন । চীনে বাজার অর্থনীতির বিকাশ এবং কৃষক ও পশু পালকদের ধারণের পরিবর্তনের সংগে সংগে আরো বেশি কৃষক ও পশু পালক শহরে গিয়ে যাত্রী ও মাল পরিবহনের কাজে যোগ দেন । ২০০৮ সালে এ গ্রামের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ দশ হাজার ১৬০ ইউয়ানে পৌঁছেছে । এভাবে তি না গ্রামে ই খা চে এলাকার একটি স্বচ্ছ গ্রামে পরিণত হয়েছে ।
তিব্বতের লিন চি এলাকার চিয়া তিং গা গ্রাম শিয়ারভিত্তিক পরিচালনা পদ্ধতি গ্রহণ করে দেশের অভ্যন্তরভাগ থেকে ৩৬টি উত্কৃষ্ট গরু টেনে এনে স্থানীয় গরুর সংস্কার করে । গত বছরে এ গ্রামের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৬০০ ইউয়ানে পৌঁছেছে । তার মধ্যে ৯ হাজার ইউয়ান ছিল নগদ অর্থ । গ্রামবাসী নি মা বলেন , সরকারের ভালো নীতি ও সহায়তার পাশাপাশি আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টার সুবাদে আমাদের গ্রামের আজকের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে ।
তিব্বতের লিন চি এলাকার ডেপুটি কমিশনার লিউ লাই সিং বলেন , তিব্বতের কৃষি ও পশু পালন এলকাগুলোতে স্বচ্ছ গ্রামের সংখ্যা স্বল্প হলেও তিব্বতের গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নের জন্যে দিকস্থিতি নির্দেশিত করেছে । বাস্তব অনুশীলন থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে , সরকারের নেয়া কৃষকদের আয় বাড়ানো ও অর্থনীতির উন্নয়ন দ্রুততর করার ব্যবস্থা এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে । |