v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
তিব্বতের রাজা সোংত্সান গামবো ও রাজকুমারী ওয়েংছেং
2009-03-04 15:18:38

খ্রীষ্টিয় ৬১৮ সালে চীনের যে বিশাল থাং সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় তা অত্যন্ত শক্তিশালি । বস্তুত: থাং সাম্রাজ্য ছিল তদানীন্তন পূর্ব এশিয়ার সভ্যতার কেন্দ্র । তার আশেপাশের সংখ্যালঘু জাতিগুলো থাং রাজ দরবারের সংগে সুসম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টাকে তাদের স্বার্থের সংগে সংগতিপূর্ণ বলে মনে করতো ।

প্রায় একই সময় তিব্বতের খ্যাতনামা রাজা সোংত্সান গামবো তিব্বতে তোবো রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং সক্রিয়ভাবে থাং রাজবংশের সংগে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেন ।

খ্রীষ্টিয় ৬৩৪ সালের পর থাং রাজবংশের একজন রাজকুমারীকে বিয়ে করার জন্য তিনি পর পর দু'বার তাঁর বিশেষ দূত গার টংটসানকে থাং সাম্রাজ্যের রাজধানী ছাংআনে পাঠান ।

সাত বছর পর সম্রাট থাংথাই জং সোংত্সান গামবোর বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং তাঁর সংগে রাজকুমারী ওয়েংছেংয়ের বিয়ে দিতে রাজী হন ।

এক শুভদিনে থাং রাজবংশের একজন বিশেষ দূতের সমভিব্যহারে রাজকুমারী ওয়েংছেংয় রাজকর্মচারী ও সখীদের নিয়ে রাজধানী ছাংআন ত্যাগ করে দীর্ঘ যাত্রাপথে রওয়ানা হন ।

সোংত্সান গামবোর বিশেষ দূত গার টংটসান ছাংআনে গিয়ে কীভাবে সম্রাট থাংথাই জংয়ের একটার পর একটা কঠিন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছিলেন এবং কীভাবে সোংত্সান গামবোর সংগে সুন্দর ও দয়ালু রাজকুমারী ওয়েংছেংর বিয়ে দিতে রাজী করিয়েছিলেন তার উপর রচিত হৃদয়গ্রাহী গল্প এখনো তিব্বতীদের মুখে মুখে শোনা যায় ।

সোংত্সান গামবো গার টংটসানের কাছ থেকে সুসংবাদ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত । রাজকুমারী ওয়েংছেংকে বরণ করার জন্য তিনি সেনা দল নিয়ে বর্তমান ছিনহাই প্রদেশে হোয়াং হো নদীর উত্পত্তি স্থানে যান । এক নিরিবিলি হ্রদের তীরে স্থাপিত রাজপ্রাসাদে তিনি রাজকুমারী ওয়েংছেংয়ের সংগে প্রথম রাত কাটান ।

সোংত্সান গামবো ও রাজকুমারী ওয়েংছেং যথাসময় বর্তমান ছিনহাই প্রদেশের ইয়ু সু তিব্বত স্বায়ত্ত শাসিত বিভাগের ইয়ু সু এলাকায় পৌঁছান ।

সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনোরম এবং আবহাওয়া আরামদায়ক । তাঁরা এক উপত্যকায় প্রায় এক মাস অবস্থান করেন ।

রাজকুমারী ওয়েংছেং ও তাঁর সহচররা শস্য ও শাকসবজির বীজ বপন ,জাঁতা দিয়ে গম পেষণ এবং মদ তৈরীর কলাকৌশল স্থানীয় অধিবাসীদের শিখান। এ জন্য স্থানীয় অধিবাসীরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ।

লাসার উদ্দেশ্যে রাজকুমারী ওয়েংছেং যখন সেখান থেকে চলে যান ,তখন তারা কৃতজ্ঞতার অশ্রু-ভরা চোখে তাকে বিদায় জানায় ।

রাজকুমারী ওয়েংছেং যেখানে তাবু খাটিয়ে থাকতেন স্থানীয় তিব্বতীরা যুগ যুগ ধরে সেই স্থান সযত্নে সংরক্ষণ করেছে । তারা রাজকুমারী ওয়েংছেংয়ের পায়ের চিহ্ন ও প্রতিকৃতি প্রকাণ্ড পাথরে খোদাই করে প্রতিবছর তা শ্রদ্ধার সংগে পুঁজা করেন ।

( পাই খাই ইউয়ান )

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China