ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্ডে শহরের বহুমুখী জিমনেসিয়ামের রূপালি ছাদে সকালে রোদ পড়ে ঝলমল করছে। চীনের সাহায্যে ক্যামেরুন জিমনেসিয়াম প্রযুক্তিগত সাহায্য প্রকল্প গ্রুপের ৭ জন প্রযুক্তিবিদ এখানে এসে টহল পরিদর্শন ও রক্ষা কাজ শুরু করেন।
জিমনেসিয়ামটি শহরের কেন্দ্রীয় প্রধান লটে অবস্থিত এবং শহরের ল্যান্ডমার্ক স্থাপত্যগুলোর অন্যতম। ২০০৯ সালে চালু হওয়া থেকে এ পর্যন্ত বহুমুখী জিমনেসিয়ামটির অপারেশন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত এটি দেশটির এমনকি মধ্য আফ্রিকান অঞ্চলে শ্রেষ্ঠ জিমনেসিয়ামগুলোর অন্যতম। এর প্রধান হেনরি এমবাপ্পে দিবাঙ্গেত বললেন, জিমনেসিয়ামটি বিরাটভাবে দেশটির জনগণের জীবনযাপন সমৃদ্ধ করেছে।
সকালে ৮টার দিকে খেলোয়াড় ও ক্রীড়া অনুরাগীরা পর্যায়ক্রমে জিমনেসিয়ামে আসেন। ৫ হাজার আসনের প্রধান হলটিতে প্রযুক্তিবিদরা প্রশিক্ষণ নিতে আসা ক্যামেরুনের জুডো খেলোয়াড়দের জন্য মাদুর পাতছেন। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে এখানে অনুষ্ঠেয় ২০২৪ সালের আফ্রিকান ওপেন জুডো চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
“আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন এবং আফ্রিকান জুডো ফেডারেশন এখানে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করবে। এটি সংস্থা দুটির ক্যামেরুনকে আস্থায় নেয়ার প্রতিফলন। এটি বহুমুখী জিমনেসিয়ামের সুসম্পূর্ণ স্থাপনার চমৎকার সুবিধার কারণে। ক্যামেরুনের জুডো ফেডারেশনের প্রশিক্ষক অ্যালাইন ক্রিশ্চিয়ান ক্যাঙ্গার বললেন, ক্যামেরুন-চীন সহযোগিতার কারণে তিনি দেশটিতে এতো উচ্চমানের ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন।
ইয়াউন্ডের বহুমুখী জিমনেসিয়ামে আফ্রিকান জাতীয় ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপের মতো আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজন ছাড়াও ক্যামেরুন জাতীয় দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠানের মতো বৃহত্ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। জিমনেসিয়ামটি ব্যবহারের হার খুব উচ্চ।
রাত পড়ছে, সন্ধ্যার সংগীতানুষ্ঠান অবিলম্বে শুরু হবে। দর্শকরা ধীরে ধীরে জিমনেসিয়ামে প্রবেশ করছেন। তিন ঘন্টা পর, দর্শকরা চলে গেছে। চীনা প্রযুক্তি গ্রুপ স্থানীয় কর্মীদের নিয়ে সর্বশেষ টহল পরিদর্শন করেন। আলো ও সরঞ্জাম ইত্যাদি সবই স্বাভাবিকভাবে বন্ধ নিশ্চিত করার পর তারা জিমনেসিয়াম ত্যাগ করেন।
বহুমুখী জিমনেসিয়াম ছাড়া ইয়াউন্ডে আরো বেশ কয়েকটি চীনা সাহায্যে ল্যান্ডমার্ক স্থাপত্য আছে। নকুনকানা পাহাড়ের শীর্ষে চীনের সাহায্যে নির্মিত ইয়াউন্ডে কনফারেন্স বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে। এ পর্যন্ত বিল্ডিংটি দেশটির বহু ইনডোর প্রদর্শনীর প্রথম বাছাই। পৌরসভা লেকসাইডে চীনা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ দল ক্যামেরুন জাতীয় পরিষদ ভবনে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা করছেন। ১৪ তলা ভবনটি শহরের নতুন ল্যাণ্ডমার্কে পরিণত হবে।
ক্যামেরুনের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি-স্পিকার থিওডর দাতুও জানান, চীন ক্যামেরুনের “আন্তরিক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক অংশীদার।”
ক্যামেরুন-চীন সহযোগিতার কারণে রাজধানী সত্যিকার অর্থে পরিবর্তিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চীনের কার্যকর জলবিদ্যুৎ স্টেশন, হাসপাতাল, পথ ও জিমনেসিয়ামসহ বিভিন্ন প্রকল্প ক্যামেরুনের জাতীয় চাহিদা মেটায়। এ জন্য চীনা অংশীদারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
(প্রেমা/হাশিম)