জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিয়েছেন ওয়াং ই
2022-09-25 15:44:28

সেপ্টেম্বর ২৫: গতকাল (শনিবার) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থার সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা,  সংহতি ও অগ্রগতির জন্য দায়িত্ব পালন’ শীর্ষক এক ভাষণ দিয়েছেন।

 

ভাষণে ওয়াং ই বলেছেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জ-পূর্ণ যুগ। বিশ্ব নতুন দাঙ্গা ও বিপ্লবী সময়কালে প্রবেশ করেছে। শত বছরে অদেখা পরিবর্তন দ্রুত ঘটছে। আবার এটি একটি আশাপূর্ণ যুগ। শান্তি ও উন্নয়ন যুগের প্রতিপাদ্যের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। বিভিন্ন দেশের জনগণের অগ্রগতি অর্জন ও সহযোগিতা জোরদারের সদিচ্ছা আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছে। এ যুগের চাহিদা মেটাতে, ঐতিহাসিক প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলাতে এবং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র উত্থাপিত মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠন করতে চীন দৃঢ়তার সঙ্গে স্পষ্টভাবে নিজের উদ্যোগ উত্থাপন করেছে। আর সেগুলো হলো: শান্তি চায়, যুদ্ধ নয়। উন্নয়ন চায়, দারিদ্র্য নয়। উন্মুক্তকরণ চায়, রুদ্ধদ্বার নয়। সহযোগিতা চায়, বৈরিতা নয়। সংহতি চায়, বিচ্ছিন্নতা নয়। এবং সমতা চায়, আধিপত্য নয়।

 

ওয়াং ই বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ও বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীন দৃঢ়ভাবে সংহতি ও সহযোগিতা, যুগের প্রবণতা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থের পাশে আছে। চীন বরাবরই বিশ্ব শান্তির প্রতিষ্ঠাতা, বিশ্ব উন্নয়নে অবদানকারী, বিশ্ব শৃঙ্খলা রক্ষাকারী, গণপণ্য প্রদানকারী এবং চরম সমস্যার মধ্যস্থতাকারী।

 

ওয়াং ই আরও বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ উত্থাপন করেছেন এবং উন্নয়নকে কেন্দ্র করে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এ উদ্যোগে শান্তির ঘাটতি দূর করতে চীনা মেধা প্রদান করেছে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য চীনা প্রস্তাব প্রদান করেছে।

 

তাইওয়ান সমস্যা নিয়ে ওয়াং ই বলেন,  তাইওয়ান অতীত থেকেই চীনা ভূখণ্ডের একটি অংশ। চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা কখনও বিচ্ছিন্ন হয়নি। একান্ন বছর আগে এই  হলে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়; তাতে জাতিসংঘে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বৈধ আসন পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং তাইওয়ানের প্রতিনিধির আসনকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রস্তাব রাজনীতি, আইন ও প্রক্রিয়াসহ সম্পূর্ণভাবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় চীনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে।  চীন অব্যাহতভাবে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে তাইওয়ান প্রণালীর দু'তীরের শান্তি ও ঐক্য বাস্তবায়ন করতে চায়।

 

ওয়াং ই আরও বলেন, সিপিসি’র আসন্ন বিংশতম জাতীয় কংগ্রেস সকল চীনাদের সদিচ্ছায় আগামী ৫ বছর এবং আরও দীর্ঘকালীন সময়ের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রণয়ন করবে। ইতিহাসের নতুন আদি-স্থলে দাঁড়িয়ে চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা এবং সংহতি ও অগ্রগতির জন্য দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আরও সুন্দর বিশ্ব সৃষ্টি করতে চায়।

 

একেই দিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের চেয়ারম্যান, মালদ্বীপ ও মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নানা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেছেন ওয়াং ই।

 

(রুবি/এনাম/শিশির)