এসডিজি অর্জনে সহায়ক সি চিনপিংয়ের জিডিআই
2022-07-07 21:43:33

সাজিদ রাজু, ঢাকা: জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং এর প্রস্তাবিত বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে মত দিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। সম্প্রতি রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ফোরাম অন গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট সম্মেলনে এ মতামত জানান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। চীনা স্টেট কাউন্সিল ও চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সোশাল সায়ন্সের উদ্যোগে আয়াজিত এবারের সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয় ‘এক লক্ষ্য ও সমান অংশিদারিত্ব’।

করোনা পরিস্থিতির মতো মহামারি আর বহুমাত্রিক এতো পরিবর্তন এর আগে কখনো দেখেনি এ বিশ্ব। এর প্রভাবে বাড়ছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলার চাপ। আবার বিশ্বের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়ন বৈষম্যও ক্রমেই বড় হচ্ছে। ফলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও কোন বিকল্প নেই।

এমনই প্রেক্ষাপটে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ২০২১ সালে প্রস্তাব করেন ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ –জিডিআই। এর মূল উদ্দেশ্য ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথকে সহজ করা।

তাই তো বিশ্বের ৬০টি দেশ, অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অন্তত ২০০ প্রতিনিধি এক ছাদের নিচে। এক লক্ষ্য, সমান অংশিদারিত্ব স্লোগানে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বসে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এখানকার মূল উপজীব্য, এসডিজি অর্জনের সহায়ক পদক্ষেপ হিসেবে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং এর প্রস্তাব করা ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ’কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

হুয়াং কুনমিং, প্রচার কমিটির সদস্য, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটি

‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ সারা বিশ্বেই সমাদৃত হয়েছে এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো একে সমর্থন দিয়েছে। ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের প্রস্তাবনার পর ১শ’টিরও বেশি দেশ এই উন্নয়ন পরিকল্পনাকে বিস্তৃত পরিসরে সমর্থন করেছে। এই প্রস্তাবটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সহায়ক এবং বৈশ্বিক উন্নয়ন সহযোগিতায়ও ভূমিকা পালন করবে।‘

 

চীনের স্টেট কাউন্সিল তথ্য অফিসের আহ্বানে এগিয়ে আসে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সোশাল সায়েন্স, স্টেট কাউন্সিলের ডেভেলপমেন্ট রিসার্স সেন্টার এবং চায়না মিডিয়া গ্রুপ। অনলাইন ও অফলাইন, দুই ধরনের অংশগ্রহণের সুযোগ রেখে সম্মেলন শুরু হয়। জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের নির্বাহী সম্পাদক বলেন, এই উদ্যোগ এসডিজি অর্জনে সহায়ক হবে।

আরমিডা সালসিয়াহ আলিসজাহবানা, নির্বাহী সম্পাদক, এসক্যাপ

“আমি বিশ্বাস করি, যেসব বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে তা বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগের সঙ্গে মিল রেখে ও সমন্বিতভাবে করা হলে খুব কার্যকর ফলাফল বয়ে আনবে। এক্ষেত্রে বলতে চাই, উদ্যোগের ফলে অতিরিক্ত যেসব সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা বহুপক্ষবাদ ও আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আরো বাড়াবে এবং এই অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্য করবে।“

 

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের সঙ্গে উন্নয়ন কাজে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি আসে সম্মেলন থেকে। বিশেষ করে উদ্ভাবনী উন্নয়ন এবং মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় করার নানা পদক্ষেপের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে চীন। চীনের লক্ষ্য, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা।

চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সোশাল সায়েন্সের প্রেসিডেন্ট শি তাইফেং জানান, সবদেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে চায় বেইজিং।

করোনা মহামারির পর উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপের বিকল্প নেই বলে মত দেন অতিথিরা। বিশেষ করে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ভিত্তি ধরে কাজ করে যাওয়ার ঘোষণা আসে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।

 গিলবার্ট এফ হুয়াংবো, প্রেসিডেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট

“বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগে দারিদ্র্য দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সবুজায়নে বিনিয়োগকে প্রাধান্য দিয়েছে, ইফাদের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচিকে আমরা স্বাগত জানাই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সহযোগিতার মাত্রা বাড়ানোকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। পাশাপাশি আমাদের প্রত্যাশা, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এই উদ্যোগের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।“

সম্মেলনে উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ: আ পিপল সেন্টার্ড ইনিশিয়েটিভ টু প্রোমোট দ্য টুয়েন্টি থার্টি এজেন্ডা’ প্রকাশ করা হয়।