হাতিরঝিল-ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সই
2022-01-09 18:46:13

জানুয়ারি ৯: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের যোগাযোগ সহজতর ও যানজট মুক্ত করতে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে 'হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা' সড়ককে ৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার লক্ষ্যে চীনা কনোসোর্টিয়ামের সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

সরকারের এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করবে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) এবং চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) সমন্বয়ে গঠিত চীনা কনসোর্টিয়াম।

এ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের গ্র্যান্ড বলরুমে নতুন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের পক্ষে সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সহযোগী সংস্থা চীনা কনসোর্টিয়ামের পক্ষে ফ্যাং মিং চুক্তিতে সই করেন। 

সরকারের প্রাইভেট-পাবলিক-পার্টনারশিপ -পিপিপির আওতায় বাস্তবায়িত এই প্রজেক্টের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনবাবদ বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করবে ১২০৯ কোটি টাকা। অপরদিকে চার লেন বিশিষ্ট এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে চীনা কনসোর্টিয়াম ব্যয় করবে ২ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। 

হাতিরঝিল থেকে ডেমরা পর্যন্ত রুটটি ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটারের হলেও নতুন এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে তা নেমে আসবে সাড়ে ১৩ কিলোমিটারে। বর্তমানে এই রুটে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে এক ঘণ্টার লাগলেও এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে হাতিরঝিল থেকে ডেমরা যেতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট।

এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান। নতুন এই এক্সপ্রেসওয়ে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে জানান তিনি।  তিনি বলেন, ‘এই প্রজেক্টের মাধ্যমে হাতিরঝিল-আমুলিয়া-ডেমরা সড়কটি এক্সপ্রেসওয়েতে পরিণত হবে। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে রাজধানীর ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে যার ফলে মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময়ের সাশ্রয় হবে। পিপিপির আওতায় নতুন এই প্রজেক্টটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় আমি সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। ’

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসি) ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধি ফ্যাং মিং। তিনি বলেন, 'এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের রোড ও হাইওয়ে বিভাগ ও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ -পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ৯০ এর দশকে আমরা বাংলাদেশী মার্কেটে প্রবেশ করি। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কিছু প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছি। এর মধ্যে ষষ্ঠ চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ, চট্টগ্রামের কর্ণফুলিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলসহ উল্লেখযোগ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বেশ কিছু বছর ধরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপক সফল অর্জন করেছে। নতুন এই প্রজেক্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে।'

প্রকল্পের আওতায় দুটি ব্রিজ, চারটি ইন্টারসেকশন, দুটি কালভার্ট, একটি ওভারপাস, ফুটওভার ব্রিজ ও টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হবে। ২০২৬ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে রাজধানীর ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা নতুন উচ্চতায় পৌছাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তানজিদ বসুনিয়া/শান্তা