ছুংছিং-ডুইসবার্গ রেলপথ চালুর এক দশক
2021-03-19 14:09:00

২০১১ সালের মার্চ মাসে চীনের ছুংছিং থেকে জার্মানির ডুইসবার্গ পযর্ন্ত প্রথম চীন-ইউরোপ রেল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। গেল ১০ বছরে এ রুটে ৭,৬০০ বারের মতো ট্রেন আসা-যাওয়া করে এবং চীন-জার্মানি আর্থ-বাণিজ্য বিনিময় ও উভয়ের জন্য কল্যাণকর সহযোগিতায় নতুন চালিকাশক্তি যোগায়।

ডুইসবার্গ শহরটি নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলেন রাজ্যে অবস্থিত। এটি রাইন নদীর তীরে ইউরোপের বৃহত্তম স্থল বন্দর শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ সংযোগস্থল। সবচেয়ে আগে চীনের শহরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা ইউরোপীয় শহর এটি। ডুইসবার্গ শহরের মেয়র সরেন লিঙ্ক বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০১৪ সালে এখানে সফর করেছেন এবং স্বচোখে দেখছেন ছুংছিং- ডুইসবার্গ আন্তর্জাতিক রেলপথের উন্নয়ন। তখন থেকে চীনের অনেক শহরের সাথে ডুইসবার্গের বাস্তব সহযোগিতা গভীর হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে শহরে নিযুক্ত চীনা কোম্পানির সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। উল্লেখ্য, ওই রাজ্যে চীনা কোম্পানির সংখ্যা জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি এবং জার্মানির এক-তৃতীয়াংশ চীনা মানুষ এ রাজ্যে আছেন।

 

মেয়র বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও বেশি চীনা ও জার্মান কোম্পানি ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ নির্মাণে অংশগ্রহণ করেছে। ভবিষ্যতে দুদেশ লজিস্টিক, ই-বাণিজ্যসহ নানা ক্ষেত্রে যোগাযোগ জোরদার করবে এবং স্মার্ট শহর ও ডিজিটালকরণসহ নানা উচ্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিময় করবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। 

ডুইসবার্গ বন্দর কোম্পানির সিইও  বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব সত্বেও ২০২০ সালে ডুইসবার্গ ও চীনের রেল পণ্য পরিবহন অনেক বৃদ্ধি পায়। তা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩৫-৪০টি ট্রেন ডুইসবার্গ ও চীনের নানা শহরের মধ্যে আসা-যাওয়া করে এবং ২০২০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে ৬০টিতে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, “২০১১ সালে ছুংছিং-ডুইসবার্গ রেলপথ চালু হবার পর তার উন্নয়ন অপ্রত্যাশিত। আমরা খুব খুশি যে, ডুইসবার্গ চীন-ইউরোপ পণ্য রেলে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে পারছে।”

তিনি আরও বলেন, গেল ১০ বছরে তাঁর কোম্পানি চীনের নানা কোম্পানির সঙ্গে ‘এক অঞ্চল এক পথ’ প্রস্তাবের আওতায় অবকাঠামো ও শুল্ক সমন্বয়ের উন্নয়নে কাজ করে আসছে। তা স্থানীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি এশিয়া-ইউরোপ বাজারের যৌথ উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, “ছুংছিং-ডুইসবার্গ রেলপথ সফলতা অর্জন করেছে এবং ইউরোপে পৌঁছানো চীন-ইউরোপ রেলের অধিকাংশ ট্রেনগুলো ছুংছিং থেকে রওনা হয়। তাছাড়া, চীনা কোম্পানির সঙ্গে অন্য ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করছি আমরা। যেমন: আমরা এখন চীনের সাথে একটি ই-বাণিজ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি এবং এর সাহায্যে ছোট ও মাঝারি জার্মান কোম্পানিগুলো সরাসরি চীনা বাজারে প্রবেশ করবে।

রাজ্যের  আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের প্রধান মনে করেন, গেল ১০ বছরে চীন-ইউরোপ রেলের উন্নয়ন স্থানীয় এলাকায় একটি নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। চীনের সাথে রাজ্যের  আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগামিতে উচ্চতর গুণগতমান উন্নয়নের পর্যায়ে পৌঁছাবে।

তিনি বলেন,“গেল ১০ বছরে আমরা দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করেছি। ভবিষ্যতে উন্নয়নের সম্ভবনা বেশি। মহামারির সত্বেও রাজ্যটির সাথে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তা প্রমাণ করে যে, বাইরের  পরিবেশ কঠোর হলেও, আমরা বৃদ্ধি বাস্তবায়ন করেছি। আর আমরা বিশ্বাস করি যে, রেল পরিবহন ভবিষ্যতেও দুপক্ষের আর্থ-বাণিজ্য সহযোগিতায় চালিকাশক্তি যোগাবে। চীন ও জার্মানির মধ্যে আরও অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা তৈরির পথ দেখাবে। (শিশির/এনাম/রুবি)