আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির অবৈতনিক চেয়ারম্যান সামারান্ছ বলেছিলেন , গণ মাধ্যমগুলো অলিম্পিক গেমসের সাফল্যের চুড়ান্ত রেফারী । পেইচিং অলিম্পিক গেমস শেষ হয়েছে ,বিদেশী গণ মাধ্যমগুলো এ গেমসের সাংগঠনিক কাজের কী মূল্যায়ন করে?এ উত্তর পাওয়ার জন্য সি আর আইয়ের সংবাদদারারা বিদেশী সাংবাদিকদের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । সাক্ষাত্কারে অনেক বিদেশী সাংবাদিক বলেছেন , পেইচিং অলিম্পিকের সাংগঠনিক কাজ চমত্কার , এটা তাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে ।
জার্মান টেলিভিশন কেন্দ্র এ আর ডি'র সাংবাদিক ক্রেমার বলেন , আমরা পেইচিংয়ে আন্তরিক অভ্যর্থনা পেয়েছি । পেইচিং অলিম্পিক সম্প্রচার কেন্দ্র -বি ও বি ও পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটি- বি ও সি ও জি'র সহকর্মীরা আমাদের খুব সাহায্য করেছেন ।
এ পির সাংবাদিক ডেনিস আকার্ড বলেছেন , পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পরিবেশ খুব ভালো । স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীরা সবসময় হাসিমুখে আমাদের সেবা করেন । আমরা কোনো সাহায্য চাইলে তারা যথাশীঘ্র সম্ভব আমাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন । এতে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি ।
গেমসের নতুন খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকদের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে যেতে হবে। কোনো কোনো সাংবাদিক এই প্রথমবার চীনে এসেছেন । কাজেই এক সুবিধাজনক ও কার্যকর যাঁতায়াত ব্যবস্থা সাংবাদিকদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইন্দোনেশিয়ার সাংবাদিক পিপিয়েট ইরিয়ানটো পেইচিংয়ের যাঁতায়াত ব্যবস্থার উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন । তিনি বলেন , পেইচিংয়ের যাঁতায়াত ব্যবস্থা সুবিধাজনক । বিদেশী সাংবাদিকরা সুবিধা মনে করেন । পেইচিংয়ের সকল স্টেডিয়ামে যাওয়ার বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে,এ সব বাস অলিম্পিক গ্রাম ও স্টেডিয়ামের মধ্যে চলাচল করে , এতে খেলোয়াড় ও সাংবাদিকরা ইচ্ছামতো সব স্টেডিয়ামে যেতে পেরেছেন ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ১৬ দিনে ২৮টি ইভেন্টের ৩০২টি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে । বিদেশী সাংবাদিকরা পেইচিং অলিম্পিক কমিটির চমত্কার ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছেন । জাপানের কিয়টো বার্তা সংস্থার মুরায়ামা জুন বলেন , আমি সাংবাদিক হিসেবে বেশ কয়েকটি অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছি । আমি মনে করি , পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ব্যবস্থাপনা ভালো । আমি বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করেছি , তারাও একই কথা বলেছেন । অলিম্পিক গেমসের আকার আগের চেয়ে বড় হচ্ছে । তবুও পেইচিং অলিম্পিক গেমসে কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় নি ।
অলিম্পিক গেমসের একটি শ্লোগান হলো ' আরো দ্রুত ,আরো উচ্চ ও আরো শক্তিশালী হও ' । এই শ্লোগানের প্রেরণায় বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা গেমসে চমত্কার ক্রীড়া নৈপুন্য দেখিয়েছেন । স্পেনের জাতীয় বেতার কেন্দ্রের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান জুয়ান ইয়েরেগুই বলেন , আমি মনে করি পেইচিং অলিম্পিক গেমস সফল হয়েছে । প্রতিটি প্রতিযোগিতায় দশর্কদের ভীড় ছিল , তারা বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের উত্সাহ দিয়েছেন । এ গেমসে মাইকেল ফিলপস ,উসেইন বোল্ট ও ইয়েলেনা ইসিনবাইয়েভা , চীনা খেলোয়াড় ও যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল দলের পারফর্ম ৪০ তথা ৮০ বছর পরও বিশ্ববাসীদের মনে থাকবে ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমস শেষ হয়েছে । গত এক মাস ধরে বিদেশী সাংবাদিকরা পেইচিংয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশ ও চীনাদের আতিথেয়তা অনুভব করেছেন । বিদেশী সাংবাদিকরা চীনাদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন এবং চীনের সুন্দর সুন্দর দৃশ্যের ছবি তুলেছেন । আলজেরিয়ার সাংবাদিক আবদেল হামিদ গারবি বলেন , চীনে আসতে পেরে আমি খুব খুশি। পেইচিং এক সুন্দর শহর । বিশেষ আনন্দের ব্যাপার হলো এখানে এসে কাজে আমি কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হই নি , আমি ভালোভাবে আমার কাজ সম্পন্ন করেছি ।
যুক্তরাষ্ট্রের জেটি ইমেজ কোম্পানির ফোটোগ্রাফার জনাথন ফেরি বলেন আমি পেইচিংয়ে একমাস কাটিয়েছি । স্বাগতিক দেশ চীনের সহকর্মীরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন । আমি মনে করি , গত এক মাসের অভিজ্ঞতা স্মরণীয় । পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির কাজ নিখুঁত বলা যায়।
বিদেশী সাংবাদিকরা তাদের লেখা প্রবন্ধ ও তোলা ছবি দিয়ে পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রচার করেছেন । এতে বিশ্ববাসীরা একটি অকপট চীন দেখেছেন । জাপানের সাংবাদিক মুরায়ামা জুন যেমন বলেছেন , পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে বিদেশীরা নিজের চোখে আধুনিক চীন দেখেছেন । তাদের মনে চীনের ভাবমূর্তি আরো ভালো হয়েছে । পেইচিং অলিম্পিক গেমস চীনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উত্তম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । গেমসের পর আরো বেশি বিদেশী বন্ধু চীনাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আদান-প্রদান করবেন । (ফাং সিউ ছিয়েন) |