পেইচিংয়ে একজন নেপালী রয়েছেন। তাকে কখনো ছাত্র বলা হয়। কারণ তিনি চীন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। কখনো শিক্ষক বলা হয়। কারণ তিনি চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেপাল বিভাগের একজন বিদেশী শিক্ষক। কখন কখন সাংবাদিক বলা হয়। কারণ তিনি পেইচিংয়ে নেপালের জাতীয় বার্তা সংস্থার একজন সাংবাদিক। এখন তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসের খবর পাঠাচ্ছেন। এতো বেশি পদমর্যাদার লোকটি হচ্ছেন নেপালের দ্রুবা পুতেল।
দ্রুবার পেইচিংয়ে থাকার কারণ হলো চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
তিনি বলেন, ২০০০ সালে আমি প্রথম বারের মত চীনে এসেছিলাম। ২০০০ সাল ছিল চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নেপাল বিভাগ প্রতিষ্ঠার ২৪তম বার্ষিকী। চীন আন্তর্জাতিক বেতারের আমন্ত্রণে আমি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের শ্রোতা ক্লাবের জাতীয় কমিটির প্রধান সদস্য হিসেবে অন্য একজন নেপালীর সঙ্গে পেইচিংয়ে এসেছিলাম।
১৫ দিনব্যাপী ভ্রমণে দ্রুবা মহা প্রাচীর,থিয়েন আন মেন মহাচত্বর ও সামার প্যালেসসহ বিভিন্ন বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থান ও দৃশ্যবলী পরিদর্শন করেছেন। চীনের দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি ও সুন্দর দর্শনীয়স্থান তাঁকে প্রভাব ফেলেছে। তিনি আরো বলেছেন, আরেকটি কাজ তাঁর মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। এটি হচ্ছে চীনাদের ক্রীড়ার প্রতি ভালোবাসা এবং শরীর চর্চা মাধ্যমে সুস্থ থাকার চেতনা।
আমার নৈশভোজের পর সড়ক পথে হাটতে ভাল লাগে। একই মহাচত্বরে দাদা ও দাদীদের সঙ্গে গান গাইতে ও নাচতে খুব আনন্দ লাগে। তাদের সঙ্গে সংলাপের সময় তারা তাঁদের সুখি জীবন সম্পর্কে আমাদেরকে ব্যাখ্যা করেছেন। এ দৃশ্য আমি নেপালে কখনও দেখি নি।
পেইচিংয়ে ভ্রমণের পর দ্রুবা পেইচিংয়ে আবার ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি চীনকে বিশেষ করে পেইচিংকে গুরুত্ব দেন।
ছয় বছর পর দ্রুবার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি চীন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিদেশী ছাত্রে পরিণত হয়েছেন। এবার পেইচিংয়ে গিয়ে পেইচিংয়ের ব্যাপক পরিবর্তনে তিনি অত্যন্ত বিস্মিত বোধ করেন।
তিনি বলেছেন, ২০০০ সালের পেইচিং'র চেয়ে ২০০৬ সালের পেইচিং অনেক বেশি পরিবর্তিত । অলিম্পিক গেমস সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবার জন্য পেইচিং অনেক উন্নত হয়েছে। আমি দেখি যে, বহু লোক ইংরেজী শিখছে, ভালোভাবে পরিবেশ উন্নয়ন করা হচ্ছে এবং অনেক স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো।
ভাষার কারণে প্রথম দিকে পেইচিংয়ে আসা বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। এ কারণে দ্রুবার সবচেয়ে কঠিন সমস্যা হলো কী খাবার খাবেন তা তিনি জানেন না। একটি রেস্তোরায় মেনুতে ইংরেজী তালিকা রয়েছে। এটি বিদেশীদের জন্য সুবিধাজনক।
৮ আগস্ট পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান টেলিভিশনের মাধ্যমে দ্রুবা দেখেছেন। তিনি অনুষ্ঠানটির প্রশংসা করে বলেছেন, আমি মনে করি, এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান খুবই সুন্দর হয়েছে। আগে আমি এতো ভালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখি নি। এ অনুষ্ঠান আমার অনেকদিন মনে থাকবে। (লিলু) |