২৯তম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস ৮ আগস্ট রাত ৮টায় চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে শুরু হয়েছে । এ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাক রগে ভাষণ দিয়েছেন । চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এবারের অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন ঘোণণা করেন ।
অলিম্পিক পরিবারের সব ২০৫টি দেশে ও অঞ্চলের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে পেইচিং পৌঁছেছেন এবং আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল । মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ , জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুকুদা ইয়াসুও ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিসহ বিভিন্ন দেশের আশিজনেরও বেশি বিশিষ্ট অতিথিও আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । এক সরকারী হিসাব থেকে জানা গেছে , ১১ হাজারেরও বেশি খেলোয়াড় এ গেমসে অংশ নিচ্ছে এবং এ গেমস সম্পর্কে খবরাখবর পরিবেশনের জন্যে ৩০ হাজারেরও বেশি সাংবাদিক পেইচিংয়ে এসেছেন । এ দুটি সংখ্যা আলাদা আলাদাভাবে অলিম্পিক গেমস ও অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ।
রগে তার ভাষণে পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির কাজকর্ম এবং ব্যাপক অলিম্পিক স্বেচ্ছাসেবকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন । পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান লিউ ছি তার ভাষণে বলেন ,অলিম্পিক গেমস আয়োজনের মধ্য দিয়ে অলিম্পিক চেতনা চীনে ব্যাপক পর্যায়ে প্রচার করা হয়েছে ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের বিখ্যাত পরিচালক চাং ই মৌ পরিচালিত এক ঘন্টাস্থায়ী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় । অনুষ্ঠানের শিরোনাম হচ্ছে : সুন্দর অলিম্পিক । অনুষ্ঠানে চীনা সংস্কৃতির সংগে অলিম্পিক চেতনার সমন্বয় করে বিশ্বের কাছে মৈত্রী ও সম্প্রীতির চেতনা তুলে ধরা হয়েছে ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানশেষ ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক গেমসে ৩টি স্বর্ণপদক জয়কারী , চীনের বিখ্যাত জিমন্যাস্ট লি নিং এবারের গেমসের প্রধান মশাল প্রজ্জ্বলন করেন ।
এবারের গেমসে যুক্তরাষ্ট্র , রাশিয়া ও চীন আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত বৃহত্তম প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে । এই প্রথম অলিম্পিক গেমস লোকসংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম চীনের শহরে এবং তৃতীয়বারের মত এশিয়ার কোনো দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে । পেইচিং অলিম্পিক গেমস এ মাসের ২৪ তারিখে শেষ হবে । আমাদের পরবর্তী অনুষ্ঠানে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে । শোনার জন্যে আপনাদের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমস শুধু চীনা জাতির সভ্যতা প্রদর্শনের মঞ্চ নয় , বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আড়ম্বরপূর্ণ সাংস্কৃতিক মহা সম্মিলনীও। এবারের অলিম্পিক গেমস চলাকালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি প্রথমবারের মতো পেইচিংয়ে অলিম্পিক প্রদর্শনী আয়োজনের প্রস্তাব পেশ করেছে । সুইজাল্যান্ডের লোজান অলিম্পিক যাদুঘরের কিছু মূল্যবান জিনিস পেইচিংয়ে প্রদর্শিত হবে । পেইচিং অলিম্পিক গেমস সাংগঠনিক কমিটির সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিভাগের প্রধান চাও তুংমিং মনে করেন , দেশিবিদেশী প্রদর্শনী এবং ভিন্ন সংস্কৃতির বিনিময় ও মিশ্রণেএকই সাথে অনুষ্ঠান করা অলিম্পিক চেতনার প্রতিফলন ।
আমরা আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে চীনের বৈশিষ্ট্য মেশানোর চেষ্টা করব । শুধু কেন্দ্রীভূত করে চীনের প্রাচীন ইতিহাসের সংস্কৃতি দেখানো হবে তা নয় বরং ব্যাপক আন্তর্জাতিক অংশগ্রহনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকীকরণ ও বহুজাতিক সংস্কৃতির বিনিময় ও মিশ্রণের প্রতিফলন ঘটানো হবে ।
তাছাড়া অলিম্পিক গেমস চলাকালে চীনের নাট্যমঞ্চ বেশ কিছু বিদেশী অভিনয় দলের দৃষ্টিআকর্ষণ করেছে । চীনের বৈদেশিক অভিনয় কোম্পানির উদ্যোগে আয়োজিত "২০০৮ সালের পেইচিং সম্মিলন" নামক সাংস্কৃতিক তত্পরতায় ৩০টিরও বেশি দেশের এক হাজারেরও বেশি শিল্পীর শিল্পকর্ম দেখানো হবে । এ সম্পর্কে কোম্পানিটির প্রধান ব্যাপস্থাপক চাং ইউয়ু বলেন , অলিম্পিক গেমস সারা বিশ্বের উত্সব । আমরা ভিন্ন অঞ্চলের ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের নাচগানকে ৫টি সান্ধ্যকালীন নৃত্য ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছি । সারা বিশ্বের বহু শ্রেষ্ঠ শিল্পী দল ও শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম একত্রিত হয়ে বিশ্ব সংস্কৃতির মহা সম্মিলনীরপরিবেশ গড়ে ওঠে ।
শ্রোতাবন্ধুরা, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ওপরে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শোনার জন্য আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি ।
আপনারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে ম্যাট্রিক্স পরিবেশনার আওয়াজ শুনছেন । পরিচালক চাং ইমৌ বলেন,এই পরিবেশনোয় তিনি সবচেয়ে সন্তুষ্ট ।
যে অংশ আমার সবচেয়ে ভাল লাগে তা হল প্রাচীন চীনের টাইপ রাইটার --কম্পিউটারের কীবোর্ডের মতো ।
ম্যাট্রিক্সপরিবেশনায় চীনের " হ্য" শব্দটির আকার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । শব্দটি দর্শকদের কাছে "সম্প্রীতি"র ধারণা তুলে করেছে যা প্রাচীনকাল থেকেই চীনারা পোষণ করে আসছেন ।
কাগজ তৈরী,মুদ্রণ ,কম্পাস এবং গোলাবারুদ প্রাচীন চীনের চারটি মহা আবিস্কার ।মানবজাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পকলার মাধ্যমে এই চারটি মহা আবিস্কার পুনরায় আবির্ভূতহয়েছে এবং পাশাপাশি " বিজ্ঞানসম্মত অলিম্পিক গেমসের" ধারণায় চীনের প্রাচীনকালের বৈজ্ঞানিক সাফল্য স্বীকৃত হয়েছে।
জাতীয় স্টেডিয়াম"বার্ড নেস্ট" বিরাটাকারের লিক্যুইড ক্রিসটালস্ক্রীন এল ই ডি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জায়গাটি সীমাহীন আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে । প্রধান পরিচালক চাং ইমৌ বলেন, আমরা ৬৪টি কম্পিউটার প্রজেক্টিভ বাতি ব্যবহার করেছি । এটা সবচেয়ে উন্নত মানের কৌশল ।
গোটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালে জাতীয় স্টেডিয়াম"বার্ড নেস্টের"আকাশমন্ডলে উজ্জ্বল রংবেরংয়ের আতশবাজি ফুটানো হয়েছে ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের আতশবাজির আকার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ । এর আওতা অতীত অলিম্পিক গেমসগুলোতে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে । পেইচিং থিয়েন আনমেন মহাচত্বর থেকে "বার্ড নেস্ট"পর্যন্ত পেইচিংয়ের আকাশমন্ডলে২৯টি পদচিহ্ন আকারের আতশবাজি ফুটানো হয়েছে ।এর অর্থ হল ২৯তম অলিম্পিক গেমস চীনে এসেছে । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পবিত্র অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করার পর " বার্ড নেস্ট"এবং চুইয়ুংকুয়ান মহা প্রাচীরে একই আকারের আতশবাজি ফাটানো হয়েছে । এর অর্থ হল , উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিবেশনা" প্রাচীনকাল ও বর্তমানের " এক পদক্ষেপে সময় অতিক্রম করার একটি সংলাপ ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান নকশাকার ছাই কোছিয়াং বলেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের আতশবাজির বেশ কয়েকটি এই প্রথমবারের মতো সৃষ্টি হয়েছে । তিনি বলেন, আতশবাজির গোলার উল্টা ও সোজা অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না । কিন্তু এবার একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে ।
এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে , অলিম্পিক গেমসের প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জটিল সমস্যার সমাধানে চীন পরপর মোট ১০০ বিলিয়ন রেনমিনপি বরাদ্দ করেছে । ৬ বছরের চেষ্টায় ৬২৫টি নতুন প্রকৌশল উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে । অলিম্পিক প্রকল্পগুলোর নির্মানে ৪৬টি নতুন পদ্ধতি , নতুন উপাদান ও নতুন দ্রব্য সৃষ্টি হয়েছে । অলিম্পিক স্টেডিয়ামের নির্মানে এক সঙ্গে এত বেশি নতুন কলাকৌশল ব্যবহার করা অলিম্পিক ইতিহাসে এটা প্রথম ।
চীনের"বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেইলী"পত্রিকার মহা পরিচালক চাং চিংআন বলেন ,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত মানের দিক থেকে পেইচিং অলিম্পিক গেমস অবশ্যই ইতিহাসের একটি সেরা গেমস হবে । বিজ্ঞানসম্মত অলিম্পিক গেমস জনগণের এবং সমাজের জন্য কল্যাণকর ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুজন নভোচারী আকাশ থেকে নেমে আসেন । তারা হালকাভাবে আঙ্গুল চাপ দিয়ে একটি বিরাটাকারের পৃথিবী মডেল " বার্ড নেস্টের মেঝের নিচে থেকে বের করে আনেন ।১৮মিটার ব্যাস ও ১৬ টন ওজনের এই পৃথিবী মডেল ৯টি বৃত্তেবিভক্ত । ৫৮জন শিল্পী এর ভিন্ন জায়গায় চলাফেরা করেন । এতে" আমরা এক পৃথিবীর অধিকারী" ধারণা প্রতিফলিত হয়েছে ।
গত কয়েক বছরে মহাকাশ ক্ষেত্রে চীন আকর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে । সেনচৌ মহাযান ও ছাং এ্য-১-এ দুটি নাম থেকে মহাকাশের প্রতি চীনা মানুষের সম্মান ও প্রত্যাশা বোঝা যায় ।
২০০৩ সালে চীনের প্রথম মানববাহী সেনচৌ-৫ মহাযান মহাকাশে উঠেছে । নভোচারী ইয়াং লিওয়েই মহাকাশ থেকে মানবজাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ।
মহাকাশে কর্মরত সহকর্মীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি । মাতৃভূমির জনগণ , হংকং ও ম্যাকাওয়ের স্বদেশবাসী এবং বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী চীনাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি । বিশ্বব্যাপী জনগনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ।
শ্রোতাবন্ধুরা,পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ওপর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বিশেষ বাংলা অনুষ্ঠান শোনার জন্য আপনাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি ।
( রেকর্ডিং বি ২৩ ) বিশ্বের অনেক মানুষ জানেন , কনফুসিয়াস প্রাচীন চীনের একজন মহান চিন্তাবিদ । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনে কনফুসিয়াসের তখনকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্য ঘুরে ঘুরে পরিদর্শনের দৃশ্য দেখানো হয়েছে । ২০০৮জন শিল্পী কনফুসিয়াসের আমলের পোশাক পরে হাতে বাশের তৈরী বই নিয়ে সংগীতের তালে তালে কনফুসিয়াসের অনেক নামকরা বক্তব্য আবৃত্তি করেন ।
কনফুসিয়াস দু হাজার বছর আগে চীনের একজন বিখ্যাত পন্ডিত । তিনি শিষ্টাচার ও সহৃদয়তা প্রচার করতেন এবং নৈতিক শিক্ষা ও মানুষের চেতনা উন্নত করা ওপর গুরুত্ব দিতেন । রু সম্প্রদায়ের চিন্তাধারা চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির প্রধান অংশ , এ চিন্তাধারা বিশ্বে বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছে । বর্তমানে কনফুসিয়াস ইতোমধ্যে চীন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি সেতুতে পরিণত হয়েছে । ২০০৪ সাল থেকে চীন বিদেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থাপন করতে শুরু করে । চীনা ভাষা পড়ানো ও চীনের সংস্কৃতি প্রচার করা হলো কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের দুটি প্রধান কাজ । এখন বিশ্বের শতাধিক দেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থপন করা হয়েছে । বিশ্বে মোট তিন কোটি মানুষ চীনা ভাষা শিখেছেন বা শিখছেন । ২০০৭ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ও চীনের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদর দপ্তর পরিষদের চেয়ারম্যান ছেন চি লি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন ,
কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সদর দপ্তর বিভিন্ন দেশের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সেবা করবে এবং তার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের চীনা ভাষা ও চীনের সংস্কৃতি অধ্যয়ন ও প্রচারকারীদের সাহায্য দেবে ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের কান সু প্রদেশের লান চৌ অঞ্চলের মশালবাহক রাশিয়ানবাসী ইউরি ই লিউ সিং শুধু চীনা ভাষা জানেন তা নয় , চীনের অনেক বিষয়ে তিনি ভালো করে জানেন । তিনি চীনের ফু আর চা খেতে পছন্দ করেন এবং বিখ্যাত পিকিং অপেরা ' পা ওয়াং পে চি' অর্থাত্ ' রাজার উপপত্নী বিদ্যায়' শুনতে ভালোবাসেন । তিনি বলেন , রাশিয়ায় বেশ কয়েকটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থপন করা হয়েছে । তিনি বলেন ,
এখন রাশিয়ায় চীনা ভাষা শেখার হিড়িজ পড়েছে। অনেকে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেছেন । সারা বিশ্বের অনেক দেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট রয়েছে । এ সব ইন্সটিটিউট বিভিন্ন দেশের মানুষকে চীনা ভাষা শিখতে ও চীনের সংস্কৃতি জানতে উত্সাহ করে । অনেকে , বিশেষ করে অল্পবয়সী যুবকযুবতীরা চীনা ভাষা শিখতে আগ্রহী , তাই এ কথা বলা যায় যে ,বিশ্বে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটগুলোর প্রভাব বিরাট ।
চীনের পাঁচ হাজার বছর দীর্ঘ সংস্কৃতি ডজন খানেক মিনিট স্থায়ী সাংস্কৃতিক পরিবেশনে সার্বিকভাবে দেখানো সহজ ব্যাপার নয় । তবে চীনের কথা বললে চীনা কুংফু উল্লেখ করতে হবে ।
(রেকর্ডিং বি ২৮) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনে ' প্রকৃতি' নামক অধ্যায়ে ২০০৮জন সাও লিন উ শু বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সাদা রংয়ের পোশাক পরে থাই চি ছুয়ান প্রদর্শন করে । থাই চি ছুয়ান চীনের কুংফুর অন্যতম বক্সিং । এ কুংফুর বৈশিষ্ট্য হলো নিস্তব্ধতা ও নম্রতা দিয়ে চঞ্চলতা ও দৃঢতা প্রতিরোধ করা , এতে চীনাদের দার্শনিক চিন্তাধার প্রতিফলিত হয়েছে ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অভিনয় পরিবেশনে জাতীয় স্টেডিয়াম-- বার্ড নেস্টের বড় পর্দায় চীনের বিখ্যাত প্রাচীন কবি লি পাইয়ের কবিতায় বর্ণনা করা দৃশ্য দেখানো হয়েছে । লি পাই তার কবিতায় লিখেছেন , জলপ্রপাতের পানি এক হাজার মিটার উচু থেকে দ্রুত পড়ছে , ঠিক যেন আকাশের স্বর্গগঙ্গা পৃথিবীতে নেমেছে । এই দৃশ্য দেখার পাশাপাশি স্টেডিয়ামে অনেক ছেলেমেয়ে হাতের তুলি দিয়ে চীনের নদী ও পাহাড়ের ছবি আঁকছে । এতে পেইচিংয়ের সবুজ অলিম্পিকের চেতনা প্রতিফলিত হয়েছে । পরিচালক চান ই মৌ বলেন , এ অভিনয়ে পরিবেশ রক্ষার ওপর মাবন জাতির মনোযোগ ও উদ্বেগ ফুটে উঠেছে ।
পরবর্তীকালে পরিবেশ সমস্যা হবে মানব জাতির সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা । এ সমস্যা যুদ্ধ ও বিভিন্ন দেশের সংঘর্ষের চেয়েও গুরুতর । কাজেই আমরা সাংস্কৃতিক উপায়ে আমাদের অভিন্ন মনোযোগ দেখাতে চাই ।
চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতিতে কুংফু বিশ্ববাসীদের প্রিয় উপাদান । এখন কিছু হলিউডের ছায়াছবিতেও চীনা কুংফু সংস্কৃতির ছাপ রয়েছে । এ বছর বিশ্বের বিভিন্নপ্রেক্ষাগৃহে দেখানো হলিউডের ছবি ' কুংফু প্যান্ডা'-তে চীনের সংস্কৃতির দুটি উপাদান--কুংফু ও প্যান্ডাকে সমন্বয় করা হয়েছে ।
ঠিক যেন ছায়াছবি ' কুংফু প্যান্ডার' থীম গানে বলা হয়েছে , সবাইকে কিছু না কিছু কুংফু জানতে হবে । থাই চি ছুয়ান চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় কুংফু । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাই চি ছুয়ানের পরিবেশনা চীন তথা বিশ্ব সংস্কৃতিতে কুংফুর অবস্থান এবং শরীর চর্চায় সক্রিয় অংশ নেয়ার অলিম্পিক চেতনা প্রতিফলিত হয়েছে ।
সাংস্কৃতিক বিনিময় বরাবরই পারস্পরিক । চীনের সংস্কৃতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচারের পাশাপাশি গত কয়েক হাজার বছরে চীনে বিদেশের সংস্কৃতির প্রভাবও বিরাট । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ' সিল্ক রোড' নামক অধ্যায়ে প্রাচীনকালে চীনের বৈদেশিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের দুটি পথ সিল্প রোড ও চেন হোর নৌযাত্রার দৃশ্য চিত্রিত করা হয়েছে ।
প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা , আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিতপেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কিত বিশেষ অনুষ্ঠান শুনছেন ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর চীনের বিখ্যাত গায়ক লিউ হুয়ান ও বৃটেনের নামকরা গায়িকা সারা ব্ল্যামান পেইচিং অলিম্পিক গেমসের থীম গান ' তুমি ও আমি ' করেন । এ গানে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের শ্লোগান 'এক বিশ্ব এক স্বপ্নের মমতা প্রতিফলিত হয়েছে । দুজন নামকরা কণ্ঠশিল্পী এ গান গাওয়ার সময় পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ২০০৮জন স্বেচ্ছাসেবক বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের ছেলেমেয়ের হাসিমুখ সম্বলিত ছাতা খুলে দেন । এর সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্টেডিয়াম-- বার্ড নেস্টের আকাশে দর্শকরা ফটকায় ২০০৮টি বাচ্চার হাসিমুখ দেখতে পাবেন । এ চমত্কার ডিজাইন সম্পর্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিচালক চান ই মৌ বলেন , ( রেকর্ডিং বি ৩৪ ) শিশুদের হাসিমুখ দেখে সবাই মুগ্ধ হবেন । বিশ্বের বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের শিশুদের হাসিমুখ মানবজাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতীক। তাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এই মুহুর্তে অভিন্ন আকাংখা বিশ্ব জনগণের মন এক সাথে গেঁথে দিয়েছে ।
অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুকির কাজ সম্পন্ন করতে তিন বছর সময় লেগেছে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেদশ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন । চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত পরিচালক ও সাংস্কৃতিকউপদেষ্টারা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ডিজাইন ও প্রস্তুতিতে অংশ নিয়েছেন । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চমকপ্রদ পরিবেশনা উপস্থিত সকলের মনে এবং বিশ্ব অলিম্পিক আন্দোলনের ইতিহাসে চিরকাল থাকবে । এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিচালক চান ই মৌ বলেন , ( রেকর্ডিং বি ৩৬ ) আমি মনে করি এ অনুষ্ঠানে মানুষের স্বভাব , মমতা ও সৌন্দর্য দেখাতে হবে , এগুলো মানব জাতির অভিন্ন প্রকৃতি । যারা সৌভাগ্যে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন , তারা এ অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
সি
প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা , আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন ।
সাংস্কৃতিক অভিনয়ের পর বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা স্টেডিয়াম প্রবেশ করেন । পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান লিউ ছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের আন্তরিক স্বাগত জানিয়েছেন ।
পূর্ববর্তী অলিম্পিক গেমসগুলোতে দেশের নামের উচ্চারণ অনুসারে খেলোয়াড়রা স্টেডিয়াম প্রবেশ করেন । এবার পেইচিং অলিম্পিক গেমসে ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি দল নতুন নিয়মে অর্থাত্দেশ ও অঞ্চলের চীনা অক্ষরের টানের সংখ্যা অনুসারে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে । চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এই পদ্ধতি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির অনুমোদন পেয়েছে ।
অলিম্পিক গেমসগুলোতে অলিম্পিক আন্দোলনের জন্মস্থান-- গ্রীসের প্রতিনিধি দল সব সময় প্রথম প্রবেশ করে । বর্তমানে অলিম্পিক গেমসে গ্রীসের ক্রীড়াবিদদের পোশাকের রং সাদা ও হালকা ধুসর । একজন পোশাক ডিজাইনার বলেছেন , পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম প্রবেশকারী গ্রীস দল উপস্থিত সকলকে এক শান্তি সম্প্রীতি ও ঐক্যের তথ্য দিয়েছে ।
সব শেষে স্বাগতিক দেশ --চীনের প্রতিনিধি দল স্টেডিয়াম প্রবেশ করলে দর্শকদের আন্তরিক সম্বর্ধনা পেয়েছে । শত বছরের প্রতীক্ষার পর অলিম্পিক গেমস মহা প্রাচীরের দেশ চীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে । চীনাদের এক শ' বছরে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে । চীনের প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণপদকের বিজয়ী , বিখ্যাত শুটিং খেলোয়াড় সুই হাই ফোং তার ভাষণে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের প্রতি চীনা খেলোয়াড়দের আশির্বাদ প্রকাশ করেছেন ।
আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় পেইচিং অলিম্পিক গেমসে ভালো ফল পাবেন । আমরা এটাও আশা করি যে পেইচিং তাদের মনে ভালো ছাপ ফেলবে ।
অলিম্পিক গেমস এমন এক ধরনের প্ল্যাটফর্ম যার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের স্বপ্ন বাস্তবায়িত এবং অলিম্পিক চেতনা আরো সম্প্রসারিত করা হয় । আধুনিক অলিম্পিকের জনক পিয়েরে দ্য কুবাতিন বলেন , অলিম্পিক চেতনা অনুযায়ী জয়ী হওয়ার চেয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণই বড় ।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়রা হাতে হাত মিলিয়ে যে খেলার মাঠে প্রবেশ করেন , দর্শকরা তাতে প্রাণখোলা করতালিতে মুখর হয়ে ওঠেন । জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন ,
অলিম্পিক গেমস এমন একটি মঞ্চে পরিণত হওয়া উচিত যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা , সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সমঝোতা বাস্তবায়িত করা যায় ।
যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন পর্বে আফগানিস্তান ও ইরাকও যার যার ক্রীড়া প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে । ইরাক বাধা-বিঘ্ন কাটিয়ে উঠে পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার অধিকার ফিরে পেয়েছে । এবার ইরাক ৭ সদস্যের বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে । ইরাকের জাতীয় অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তাফা বলেন ,
অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে পেরে তারা খুব গর্বিত । ইরাক আন্তর্জাতিক পরিবারের একটি অংশ হিসেবে অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবে । এবারের গেমসে ইরাকী খেলোয়াড়রা সফল হবেন এবং সেরা নৈপুণ্য দেখাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাক রগে বলেন , ক্রীড়া অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে যোগাযোগের সেতু গড়ে তোলা যায় যার মাধ্যমে যাতে মানবজাতি শান্তি ও সম্প্রীতি অর্জন করতে পারে ।
বর্ণ , সংস্কৃতি, ভাষা , রাজনীতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস হোক যাই না কেন , মানবজাতির জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক গেমসের ২০৫টি সদস্যের সম্প্রীতি , সহাবস্থান ও সংহতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
খেলোয়াড়রা ছাড়া বিভিন্ন দেশের ৮০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানও এ অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । এ অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অলিম্পিক ইতিহাসের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে । এ সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিও বুশ , জাপানের প্রধান মন্ত্রী ফুকুদা ইয়াসুও , ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজ , কাজাকস্তানের প্রেসিডেন্ট নাজারবায়েভ ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড প্রমুখও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন । কেভিন রাড বলেন,
তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার উদ্দেশ্য হলো অস্ট্রেলিয়া দলকে উত্সাহিত করা । এটা চীনের প্রেসিডেন্টের আন্তর্জাতিক আমন্ত্রণের প্রতি সাড়াও বটে ।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির ৮৮ বছর বয়স্ক সম্মানসূচক চেয়ারম্যান সামারাঞ্চও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । চীনের জনগণের মনে সামারাঞ্চের নাম পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে । তিনি চীনের জনগণের পুরনো বন্ধু । ২০০১ সালে মস্কোতে তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমস'২০০৮-এর স্বাগতিক দেশ হিসেবে চীনের নাম বলে ঘোষণা করেছিলেন । তিনি বলেন ,
অলিম্পিক গেমস'২০০৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে তিনি খুব খুশি । চীনের জনগণ একটি অলিম্পিক গেমস আয়োজনের জন্য আকুল প্রত্যাশা প্রকাশ করেছে এবং এর জন্য যে বিরাট চেষ্টা চালিয়েছে , সেটা তিনি ভালোভাবে উপলব্ধি করেছেন । এ অলিম্পিক গেমস চিত্তাকর্ষক ও সফল হবে এবং বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অলিম্পিক গেমসে পরিণত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন । তিনি পেইচিংয়ে যা উপলব্ধি করেছেন , তা ৭ বছর আগের প্রত্যাশার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ ।
এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৪ লাখ পর্যটকও পেইচিং ভ্রমণে এসেছেন । এতে পেইচিং অলিম্পিক গেমস বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পরিণত হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।
( পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিবেদনের একটি অংশ )
শ্রোতাবন্ধুরা, পেইচিং অলিম্পিক গেমস সংক্রান্ত সিআরআই-এর বিশেষ প্রতিবেদন শোনার জন্য আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমস এমন একটি সুযোগ যার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে চীনকে আরো বেশি প্রদর্শন করা যাবে এবং বিশ্বের সঙ্গে চীনের ব্যবধান আরো কমানো যায় । আন্তরিকতার রাজ্য বলে পরিচিত চীন উদ্দীপনার সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছে । আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান রগে বারবার পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি কাজের বিশেষ প্রশংসা করেছেন এবং তার সফলতা নিয়ে তিনি আশাবাদী ।
তিনি বলেন , পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্টেডিয়াম ও ইনডোর স্টেডিয়ামগুলো খুবই ভালো । সাংগঠনিক কমিটির প্রস্তুতি কাজও খুব সফল । সেজন্য তিনি এ অলিম্পিক গেমসের সফলতা নিয়ে আশাবাদী ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসে সাংবাদিকতা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৩০ হাজারেরও বেশি সংবাদদাতা পেইচিংয়ে এসেছেন । এসব পেইচিং অলিম্পক গেমসে সংবাদদাতাদের জন্য ইন্টরনেটের সেবা যোগানো হচ্ছে । এটা অলিম্পিকের ইতিহাসে অভূতপূর্ব । ইন্টারনেটের মাধ্যমে অলিম্পিক গেমসের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে যোগাযোগের সেতু তৈরি করা হচ্ছে। বেতার ও টেলিভিশন সংবাদাতাদের সাক্ষাত্কারের সুবিধের জন্য ৮টি গুরুত্বপূর্ণ স্টেডিয়াম ও ইনডোর স্টেডিয়ামে বিশেষ পরিসেবা দেওয়া হচ্ছে এবং খেলোয়াড় ও সংবাদদাতাদের সুযোগ সুবিধার জন্য বিনাপয়সায় সাইবার ক্যাফেসহ বিভিন্ন ধরনের পরিসেবা সরবরাহ করা হচ্ছে । সাংগঠনিক কমিটি সংবাদদাতাদের জন্য যে চেষ্টা চালিয়েছে , আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান হেন ভারব্রুগেন তার প্রশংসা করেছেন ।
প্রধান তথ্য কেন্দ্র যেমন সংবাদদাতাদের কাজের স্থান , তেমনি তাও তাদের দ্বিতীয় বাড়িও । তারা রাত দিন এখানে কাজ করছেন , শ্রোতা ও দর্শকদের জন্য অলিম্পিক গেমস সংক্রান্ত বৈচিত্র্যময় খবরাখবর দিচ্ছেন । সংবাদদাতাদের এ সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার জন্য সংগঠনিক কমিটিকে ধন্যবাদ । সাংগঠনিক কমিটির সূক্ষ্ম ও আন্তরিক ব্যবস্থায় শুধু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ জায়গা বিশ্বের যাবতীয় সংবাদ মাধ্যমের পরিবারে পরিণত হয়েছে ।
শ্রোতাবন্ধুরাঃ পেইচিং অলিম্পিক গেমস সংক্রান্ত সিআরআইয়ের বিশেষ প্রতিবেদন অব্যাহতভাবে শোনার জন্য আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি ।
সকল খেলোয়াড়ের পক্ষ থেকে খেলোয়াড় প্রতিনিধি সংকল্প ঘোষণা করেছেন যে , অলিম্পিক চেতনা ও খেলোয়াড়দের মর্যাদা সম্প্রসারিত করার জন্য তারা পবিত্র ক্রীড়া মনোবল নিয়ে এ অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবেন এবং খেলার বিভিন্ন নিয়মকানুন মেনে চলবেন ।
সকল রেফারী ও কর্মীর তরফ থেকে রেফারী প্রতিনিধি শপথ গ্রহণ করেছেন যে , এ অলিম্পিক গেমসে তারা অলিম্পিকের সকল নিয়মকানুন মেনে চলবেন এবং যুক্তিযুক্ত ও নিরপেক্ষভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন ।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসে বিশ্ববাসীর কাছে চীন সংক্রান্ত একটি কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে । এ কাহিনীতে দুঃখ-দুর্দশা এবং সফলতা ও আনন্দ তুলে ধরা হয়েছে । চীনের প্রাক্তন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় , পেইচিং অলিম্পিক পল্লীর উপপ্রধান তেং ইয়া পিং বলেন ,
অলিম্পিক গেমসে খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতার মনোবল বিশ্বের প্রত্যেককেই উত্সাহ দিচ্ছে । (থান ইয়াও খাং)
এটা হল চীনের বিখ্যাত নায়ক লিও হুওয়ার " এক দিন কম গাড়ী চালুক" তত্পরতার জন্যে তোলা গণক্যাণ বিজ্ঞপ্তি। সবুজ অলিম্পিক গেমসের উদ্যোগে শুধু যে পেইচিংয়ের আকাশ আরও নীল, পানি আরও পরিছন্ন তাই নয় পরিবেশ সংরক্ষণের ধারণা মানুষের মনে প্রবেশ করেছে। এটা পেইচিং অলিম্পিক গেমসের বয়ে আনা একটি বড় সাফল্য বলে গণ্য করা যায়।
অলিম্পিক গেমসের বয়ে আনা আরেকটি বড় সাফল্য হল পেইচিংয়ে নির্মিত প্রতিযোগিতার ভেন্যুগুলো। অলিম্পিক গেমসের পর এসব ভেন্যুকে যে ভালোভাবে কাজে লাগানো হয় সে জন্যে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পর পেইচিং শহর অলিম্পিক গেমসের প্রতিযোগিতার ভেন্যুগুলোর নির্মানের আকার, বিন্যাস্ত , পুঁজিবিনিয়োগ ইত্যাদি প্রকল্প পুনরায় মূল্যায়ন করেছে এবং দু'বার অপেক্ষাকৃত বড় আকারের পুনর্বিন্যাস করেছে। বতর্মানে সকল প্রতিযোগিতার ভেন্যুর নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ভেন্যুগুলোর নির্মান কাজ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির ২৯তম অলিম্পিক গেমসের সমন্বয় কমিশনের চেয়ারম্যান হেইন ভেরব্রুগেন বিষয়টির মুল্যায়ন করে বলেন,
"পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজ চমত্কার। কারণ পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির কাজ কার্যকর ও ভেন্যুগুলোর নির্মান কাজের অগ্রগতি দ্রুত। তাছাড়া স্থাপত্যগুলো মহিমাময় ।
অলিম্পিক গেমস কেবল ষোল দিনের ব্যাপার নয়, অলিম্পিক গেমস পরবর্তীকালে ভেন্যুগুলোর ব্যবহার বিভিন্ন পক্ষের মনোযোগের ব্যাপার। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ভেন্যুগুলো ডিজাইন করার সময়ে এসব ভেন্যু পরবর্তী ব্যবহার ও উন্নয়ন বিবেচিত হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় সাঁতার কেন্দ্র " ওয়াটার কিউবের" ডিজাইন পরিকল্পনা থেকে বোঁঝা যায় , অলিম্পিক গেমসের পর এটা জনসাধারণের জন্যে পেইচিংয়ের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে সম্পূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র হবে । সুনই অলিম্পিক ওয়াটার পার্ক অলিম্পিক গেমস পরবর্তীকালে পেইচিংয়ের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পযর্টন বিনোদন এলাকায় পরিণত হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বাজার উন্নয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান গেরহারড হেইবেরগ বিষয়টির মূল্যায়ন করে বলেন,
"অলিম্পিক গেমসের পর চীন অনেক পযর্টককে আকর্ষণ করবে। এছাড়া অর্থনীতি ও শিল্পে সমৃদ্ধি ও উন্নতি অর্জিত হবে। সুদূর দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে গেছে, শুধু পেইচিং নয় গোটা চীন এতে উপকৃত হবে।
সুদূর থেকে আসা বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের জন্য পেইচিং অলিম্পিক গেমস একটি দুষ্প্রাপ্য সুযোগ। তারা যেমন স্বয়ং চীনের গল্প শুনতে পারবেন তেমনি স্বচক্ষে চীনকে দেখতে পারবেন এবং স্বশরীরে চীনকে অনুভব করতে পারবেন। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে চীনের যোগাযোগ আরও নিবিড়। এছাড়া বিশ্বের প্রতি চীনের উপলব্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি চীনের প্রতি বিশ্বের উপলব্ধিও বেড়েছে। এটা হল বিশ্ব জনগণের জন্য পেইচিং অলিম্পিক গেমসের বয়ে আনা আরেকটি বড় সাফল্য।
শ্রোতা বন্ধুরা, পেইচিং অলিম্পিক গেমস সম্পর্কিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের প্রচারিত বিশেষ প্রতিবেদন শুনতে স্বাগত জানাছি।
এটা হল ফুওয়া নি নিকে বর্ণনা করার একটি সংগীত । নি নি আকাশ থেকে এসেছে । এটা একটি উড়ন্ত সোয়লো।এতে এক ধরনের উন্মুক্ত ও উদা চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়েছে। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় " উন্মুক্ত আলোকে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের " নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। ইউরোপের পার্লামেন্ডের স্পীকার পোর্তুরলিন এ বিষয়ের মূল্যায়ন করে বলেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস হচ্ছে বিশ্ব ঐক্য ও উন্মুক্তকরণের প্রতীক:
" তথ্য মাধ্যমের প্রচারের মাধ্যমে সারা বিশ্ব অলিম্পিক গেমস সম্পর্কে আরও বেশী তথ্য পেয়েছে এবং চীন সম্পর্কে আরও বেশী জানতে পেয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি, পেইচিং অলিম্পিক গেমস একটি প্রতীক। এটা হল এই বিশ্বের ঐক্য ও উন্মুক্ততার প্রতীক"।
অলিম্পিক গেমসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে চীনে আরও উন্মুক্ত লাভ করার প্রক্রিয়া। গত সাত বছরে চীন ডাব্লিও টিওতে যোগ দিয়েছে, বৈদেশিক প্রচার মাধ্যমের ব্যবস্থাপনা বিধান সংশোধন করেছে , সরকারের তথ্য আরও উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ। " এক বিশ্ব, এক স্বপ্ন" অলিম্পিক গেমসের স্লোগান। এতে পুরোপুরি অলিম্পিক চেতনার প্রতি চীনের উপলব্ধি ব্যক্ত করা হয়েছে।
মহামহিময় রাষ্ট্রীয় স্টেডিয়াম "বার্ড নেস্ট", সুন্দর রাষ্ট্রীয় সাঁতার কেন্দ্র " ওয়াটার কিউব" ও আধুনিক উ খো সন বাস্কিডবল ভবন সহ বিভিন্ন ভেন্যু সবই দেশি-বিদেশী বড় ডিজাইনারদের যৌথ উদ্যোগে তৈরি পাত্র। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রতীক , মঙ্গল প্রাণী, ক্রীড়া চিহৃ , মশাল সহ সকল ডিজাইনে বেশী কিছু দেশি-বিদেশি শিল্পীর প্রয়াস প্রতিফলিত হয়েছে।
পেইচিং অলিম্পিক গেমস চলাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ হাজার সংবাদদাতা পেইচিং হাজির হবেন । পেইচিং তাদের আসার প্রতীক্ষায় আছে। ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারী , চীন সরকার " পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রস্তুতি ও চলাকালীণ বিদেশী সংবাদদাতাদের জন্য সাক্ষাত্কার নীতিমালা " প্রকাশ ও কার্যকর করেছে। নীতিমালাটিতে চীনে বিদেশী সংবাদদাতাদের সাক্ষাত্কারের জন্য পুরাতন বিধান বাতিল করা হয়েছে। নীতিমালাটির ষষ্ঠ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, বিদেশী সংবাদদাতারা কেবল সংশ্লিষ্ট ইউনিট ও ব্যক্তিগত অনুমোদন পেলে চীনে সাক্ষাত্কার নিতে পারেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিও জিয়েন চাও এ বিষয় ব্যাখ্যার করার সময় জোর দিয়ে বলেন,
"চীনের তাদের সাক্ষাত্কার যাতে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে সে জন্য আমরা অব্যাহতবাবে চেষ্টা চালাবো। এটা হল আমাদের দৃঢ়সংকল্প । আমি বিশ্বাস করি এটা হল সকলের আকাংক্ষা।"
ফুওয়া নি নি একটি সোয়লো। সে সরল নির্দোষ , আনন্দ । সে বসন্ত ও আনন্দ মানুষের জন্য বয়ে আনায়। সে যেখানে উড়ে যায় সেখানে সে " আপনার মঙ্গলের কামনা " করে। দীর্ঘকালের প্রচেষ্টায় চীন অবশেষে আধুনিক অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক দেশে পরিণত হয়েছে । বিশ্বও চীনের জন্য সবচেয়ে সুন্দর কামনা দিয়েছে।
চীনে ট্যানজানিয়ার রাষ্ট্রদূত ওমার মাপুরি আবেগের সঙ্গে বললেন,
আমি পেইচিং অলিম্পিক গেমের সাফল্যের পতীক্ষায় রয়েছে। পেইচিং আসার পর আমি অলিম্পিক গেমসের জন্য চীনের প্রস্তুতি কাজ লক্ষ্য করেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পেইচিং অলিম্পিক অলিম্পিক ইতিহাসে একটি সবচেয়ে সফল ক্রীড়া সমাবেশ হবে।
ব্রাজিলের অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান নুজমান একই কামনা জানিয়েছেন।
"প্রথমে আমি পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটিকে অভিনন্দন জানাছি।এবারের অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি ও সাংগঠনতিক কাজ অত্যন্ত ভাল। আমি নিশ্চিত করতে পরি যে, পেইচিং অবশ্যই ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর অলিম্পিক গেমস আয়োজন করতে পারে।
একদি চীনে ব্যবসা করা জার্মান ব্যবসায়ী মিছেল জুমবেরট পেইচি অলিম্পিক গেমসে আরও আশাবাদী।
আমি মনে করি, চীন এবার সবচেয়ে ভাল অলিম্পিক গেমস আয়োজন করতে পারবে। আমি যে সব ভেন্যু দেখেছি সে সব ভেন্যু চমত্কার । পরিসেবা ও সংগঠন উভয়ই ভাল। চীনা মানুষের কাজকর্মের স্টাইল আমি খুব পছন্দ করি। তারা সবচেয়ে সন্দর কাজের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন।
শ্রোতা বন্ধুরা, পেইচিং অলিম্পিক গেমস সম্পর্কিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের প্রচারিত বিশেষ প্রতিবেদন শোনার স্বাগত জানাছি।
আজ রাত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর , আকামীকাল ৯ আগস্ট অলিম্পিক গেমসের প্রথম দিনের প্রতিযোগিতা শুরু হবে। বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য পেইচিং অলিম্পিক গেমসে ভাল সাফল্য পাওয়া তাদের সাভাবিক আকাংক্ষা।
নাইজেরিয়ার নারী ক্রীড়াবিদ গ্রাস ডানিয়েল প্রথম বার অলিম্পিক গেমসের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। তার লক্ষ্য কী?
আমি জানি, এখানে অনেক সেরা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। যেহেতু আমি অলিম্পিক গেমসে অংশ নেওয়ার সিদ্ধন্ত নিয়েছি সেহেতু আমি কাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবো তা কিছু খেয়াল করবো না । আমি কেবল ভালভাবে খেলতে চাই। আফ্রিকা মহা দেশ আমার জন্য গর্ব বোধ করবে।
৪২ বছর বয়স্ক অষ্ট্রেলিয়ার ইয়াটিং খেলোয়াড় জামস টোমকিনস ষষ্ঠ বার অলিম্পিক গেমসে অংশ নিচ্ছেন। ৩তম অলিম্পিক গেমসের স্বর্ণপদক বিজয়ী ও ৯তম বিশ্ব প্রতিযোগিতার চ্যাম্পীয়ন হিসেবে তাকে অষ্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে মহান ইয়াটিং খেলোয়াড় বলে গণ্য করা হয়। তিনি বলেন, পেইচিং ভ্রমণ তার জন্য তাত্পর্যসম্পন্ন। |