তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের সম্পর্ক নষ্ট করার মার্কিন রাজনীতিকের অপপ্রয়াস ব্যর্থ হবে
  2020-10-29 15:57:29  cri
অক্টোবর ২৯: গত সপ্তাহে চীনের তাইওয়ান প্রদেশে তিন ধরনের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা অনুমোদন দেয়ার পর মার্কিন সরকার সম্প্রতি আবারও তাইওয়ানকে শত সেট জাহাজ-বিধ্বংসী হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। এর মোট মূল্য ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছরে যুক্তরাষ্ট্র 'তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি'র মাধ্যমে তাইওয়ান প্রণালীর দু'তীরের সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়; চীনের বিরুদ্ধে শক্ত মনোভাব দেখানোর মাধ্যমে নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে অন্য দেশের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। এর মূল উদ্দেশ্য চীনের উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রতিরোধ করা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অপপ্রচেষ্টা একদম ভুল। চীন সম্প্রতি পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশের ঐক্য প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারী যে-কোনো অপপ্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করবে চীন।

সবাই জানে, 'এক চীন নীতি' হল চীন-মার্কিন সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি। তাইওয়ান সমস্যা চীনের কেন্দ্রীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা চীন-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়। তবে এই মেয়াদের মার্কিন সরকার শপথ গ্রহণের পর কিছু মার্কিন রাজনীতিক বার বার এই 'রেড-লাইন'-এ পা রাখেন; তাইওয়ানের ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি ও 'স্বাধীন তাইওয়ানপন্থিদের' সমর্থন করেন। এর ফলে তাইওয়ান প্রণালীর পরিস্থিতি আরো উত্তেজনাময় হয়। বিশেষ করে সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান ইস্যুতে আরো বেশি হস্তক্ষেপ করছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের তাইওয়ান সফর থেকে শুরু করে মার্কিন সামরিক জাহাজের তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম এবং পাশাপাশি ঘন ঘন তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ। কিছু মার্কিন রাজনীতিক এসব কাজের মাধ্যমে চীনকে ভয় দেখাতে চায় এবং বিনিময় আদায় করতে চায়।

তারা অবশ্যই স্পষ্টভাবে জানে যে, তাইওয়ান ইস্যু কত স্পর্শকাতর। এখন কেন তারা বার বার 'স্বাধীন তাইওয়ানপন্থি'-দের সঙ্গে সহযোগিতা করে? এর সবচেয়ে বাস্তব কারণ হল: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য। আরো হাস্যকর বিষয় হল, তারা তাইওয়ান ইস্যু ও দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যাকে তথাকথিত 'ভারত-প্যাসিফিক কৌশলের' সঙ্গে যুক্ত করতে চায়। এর উদ্দেশ্য চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধা দেওয়া। কিন্তু এটি যুক্তরাষ্ট্রের দিবাস্বপ্ন, যা পূরণ হবার নয়।

চীনা জনগণ শান্তিপ্রেমী। তবে নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ক্ষয়ক্ষতিকে অনুমোদন দেবে না তারা। বর্তমানে চীন ঘোষণা করেছে যে, যেসব মার্কিন শিল্প প্রতিষ্ঠান তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত ও এই ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এ উদ্যোগ চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখন্ডতাকে রক্ষার প্রচেষ্টা। যদি যুক্তরাষ্ট্র ভুল আচরণ বন্ধ না করে এবং তাইওয়ান প্রণালীর দু'তীরের সম্পর্ক নষ্টের পায়তারা বন্ধ না করে, তাহলে চীন আরো বেশি পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে কোনো আপস নেই।

সম্প্রতি তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক কৌশল সমিতি এবং তাইওয়ান আন্তর্জাতিক গবেষণা সমিতির যৌথভাবে আয়োজিত 'তাইওয়ান প্রণালীর নিরাপত্তা' শীর্ষক জরিপ থেকে জানা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৪ শতাংশই আশা করে প্রণালীর দু'তীর শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে। ৮০ শতাংশ মানুষ প্রণালীর দু'তীরের বিনিময়কে সমর্থন করে। মার্কিন রাজনীতিক বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রণালীর দু'তীরের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইছেন। আর তাইওয়ানের ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি সামরিক শক্তি বাড়িয়ে তথাকথিত স্বাধীন তাইওয়ান বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রণালীর দু'তীরের একীকরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না।

চীন যুক্তরাষ্ট্রকে জানাতে চায়, অবিলম্বে তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে; তাইওয়ান প্রদেশের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে। ১৪০ কোটি চীনা জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করে যাবে। (শুয়েই/আলিম/জিনিয়া)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040