উন্নয়নের নতুন কাঠামো- চীনের বাছাই, বিশ্বের সুযোগ: ইএসসিএপি'র প্রতিনিধি খ্য ইয়ো শেং
  2020-09-30 14:45:20  cri
সেপ্টেম্বর ৩০: চলতি বছর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেশ কয়েকটি ইভেন্টে দেশীয় সার্কেলকে প্রাধান্য দিয়ে দেশি-বিদেশি দ্বৈত সার্কেলের নতুন উন্নয়নের কাঠামো গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের প্রতিনিধি খ্য ইয়ো শেং চায়না মিডিয়া গ্রুপে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সি বর্তমানে দেশি-বিদেশি পরিস্থিতিতে চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনাকে সামনে রেখে একটি ইতিবাচক পথ বেছে নিয়েছেন; যা বিশ্বের জন্য নতুন উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

খ্য ইয়ো শেং বলেছেন, চীন দুটি কারণে দেশ-বিদেশের দ্বৈত সার্কেল সহায়ক নতুন উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তুলতে চায়। প্রথমত, এটি হচ্ছে বড় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রকৃত নিয়ম। প্রধান অর্থনীতির বড় দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে দেখা যায়, উন্নয়ন নির্দিষ্ট এক পর্যায়ে পৌঁছানোর পর দেশি-বিদেশি সার্কেলের সমন্বিত উন্নতি করতে হয়। দ্বিতীয়ত, দেশি-বিদেশি দ্বৈত সার্কেলের উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য চীনের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, 'বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে বিশ্ব বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে। সংরক্ষণবাদ ও একতরফবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশ্বায়নবিরোধী আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্যিক ব্যবস্থা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোকে প্রাধান্য দিলে তা চীনের বাজার, শিল্প, জনশক্তি, প্রযুক্তি ও অর্থসহ নানা ক্ষেত্রে সুবিধা কাজে লাগাতে সহায়ক হবে।

খ্য ইয়ো শেং বলেন, দ্বৈত সার্কেলে দেশীয় অবস্থার ভিত্তিতে বিশ্বমুখী যোগাযোগ জোরদারের পাশাপাশি দু'পক্ষের সুবিধা কাজে লাগানো হবে। দেশীয় সার্কেল বেগবান করতে প্রথমত বিজ্ঞান-প্রযুক্তির নব্যতাপ্রবর্তনের মাধ্যমে নতুন উন্নয়নের চালিকাশক্তি যোগানো এবং দ্বিতীয়ত সংস্কার সুগভীর করে নতুন উন্নয়নের প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করা হবে।

খ্য ইয়ো শেং বলেন, 'বর্তমানে নতুন দফা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও শিল্পের বিপ্লব দ্রুততর হচ্ছে। কিছু কিছু দেশ চীনের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির খাতে চীনের খুঁত দেখে তারা এ নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাই চীনের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নব্যতাপ্রবর্তনের ক্ষমতা উন্নত করা খুব জরুরি। আমাদের উচিত নব্যতাপ্রবর্তনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জন করা, নব্যতাপ্রবর্তনের ক্ষমতা উন্নয়ন এবং কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি লাভ করা। এটা হবে দেশীয় সার্কেল গড়ে তোলার চাবিকাঠি। নতুন উন্নয়নের কাঠামো গড়ে তুলতে পুরানো উন্নয়নের কাঠামোর সংস্কার করতে হবে এবং এ ব্যবস্থায় বাধা নির্মূল করা প্রয়োজন। যাতে সম্পদ বিতরণের ক্ষেত্রে বাজার নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশীয় সার্কেলের প্রাধান্য দেওয়া মানে, চীনের উন্মুক্তকরণের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছে কিছু লোক। এ প্রসঙ্গে খ্য ইয়ো শেং বলেন, এটা পুরোপুরি ভুল ধারণা। নতুন উন্নয়নের কাঠামো দ্বাররুদ্ধ করবে না। এটা হবে উন্মুক্ত দেশি-বিদেশি দ্বৈত সার্কেল। ইতিহাস প্রমাণ করে যে, উন্মুক্তকরণ বাধাগ্রস্ত হলে পিছিয়ে পড়বে চীন। চীন নিজের উন্নয়ন সাধনের পাশাপাশি বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক অবদান রেখেছে ও রাখছে।

খ্য ইয়ো শেং বলেন, 'চীন টানা কয়েক বছর ধরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ৩০ শতাংশেও বেশি অবদান রেখেছে। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক সত্ত্বার মধ্যে প্রথম শ্রেণীতে রয়েছে এবং শিগগরই সারা বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তার বাজারে পরিণত হবে। চীনের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চীন বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়বে এবং অন্যান্য দেশকে আরও বিস্তৃত বাজার দেবে। চীন উন্মুক্তকরণের দ্বার বন্ধ করবে না, বরং আরও বাড়াবে। চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ভিত্তিতে গড়ে তোলা নতুন উন্নয়ন কাঠামো বিশ্বের জন্য গণপণ্যে পরিণত হবে, যা বিশ্ব উন্নয়নের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।

(রুবি/তৌহিদ/শিশির)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040