চীন সরকার সবসময় তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কাজের ওপর গুরুত্ব দেয়। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার পর যথাক্রমে ৬ বার তিব্বত বিষয়ক কর্মসভা আয়োজন করেছে। এবারের আলোচনাসভা হল ২০১৫ সালে সিপিসির তিব্বত কর্ম ইতিহাসের পর আরেকটি মাইলফলক। পাঁচ বছর ধরে চীনের তিব্বত পরিচালনা কৌশল অব্যাহতভাবে সুসংহত হচ্ছে।
পাঁচ বছর আগে ষষ্ঠ তিব্বত কর্মসভায় সি চিন পিং বলেছিলেন যে, তিব্বতে কাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশের ঐক্য রক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য রক্ষা। এবারের সভায় প্রেসিডেন্ট সি আবারও একই কথা বলেছেন।
২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তিব্বতের লুংজি জেলার পশুপালক দোলকার ও ইয়াংজোম বোনদের জবাবি চিঠিতে বলেছিলেন, দেশ থাকলে বাসা থাকবে।
লুংজি জেলা হিমালয় পাহাড়ের দক্ষিণে অবস্থিত। সেখানের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ ছিল। এটি চীনের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার একটি গ্রাম। গত শতাব্দীর দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ইয়ু মাই গ্রামে শুধু দোলকার ও ইয়াংজোম পরিবার রয়ে গেছে। তারা বংশ পরম্পরায় চীনের সীমান্ত রক্ষা করে আসছে। তাদের চিঠির জবাবে সি চিন পিং বলেছেন, দেশপ্রেম এবং সীমান্ত রক্ষার চেতনায় আরো বেশি পশুপালককে পবিত্র ভূখণ্ড রক্ষাকারী হওয়া এবং সুখী জীবন গঠনের ক্ষেত্রে উত্সাহ দেওয়া উচিত।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, চীন সরকারের ধারাবাহিক তিব্বত বিষয়ক কর্মসভা আয়োজনের পর, সারা দেশের জনগণের যৌথ চেষ্টায়, তিব্বতের বিভিন্ন জাতির জনগণের কঠোর পরিশ্রমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগে যেসব কাজের পরিকল্পনা করা হয়েছিল এখন তা সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের কাজের ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
চীন সরকার তিব্বতে বিভিন্ন সুবিধাজনক নীতি চালু করেছে। ২০১৬ সালে তিব্বতে চীন সরকার ১৮৯টি প্রকল্পের জন্য ৬৫৭ বিলিয়ন ইউয়ানের বরাদ্দ করেছে। জনগণের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন, প্রাকৃতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অবকাঠামো ব্যবস্থা সুসংহত করা, সমাজের স্থিতশীলতার ভিত্তি সুসংবদ্ধ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। যা তিব্বতের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন ও নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শক্তিশালী সমর্থন দিয়েছে।
বর্তমানে তিব্বতে প্রি স্কুল (pre-school), বাধ্যতামূলক শিক্ষা, উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, পেশাদার শিক্ষা এবং বিশেষ শিক্ষাকে কেন্দ্র করে আধুনিক জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তিব্বত সারা দেশে সাবার আগে ১৫ বছরে বিনাখরচে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এ ছাড়া শহর ও গ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করে চারটি পর্যায়ে চিকিত্সা ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে। তিব্বতে চিকিত্সা সংস্থার সংখ্যা পাঁচ বছরের আগের তুলনায় এখন ৩০ শতাংশ বেশি। তিব্বতের সব অনাথকে লালন করা হয়। এ ছাড়া শহর ও গ্রামের নাগরিকদের মৌলিক চিকিত্সাবিমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গড় আয়ু আগের ৩৫.৫ বছর থেকে বর্তমানের ৭০.৬ বছরে উন্নীত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরো বলেছেন, জনগণের জীবনযাপনের মান উন্নত করা এবং ঐক্যবদ্ধ করাকে অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের সূচনা হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। উন্নয়নের নতুন চিন্তাধারা অনুসারে উন্নয়নের ভারসাম্যহীন সমস্যাকে সমাধান করে উচ্চ মানের উন্নয়ন দ্রুততর করতে হয়।
সার্বিকভাবে নতুন যুগে চীনের তিব্বত পরিচালনা কৌশল বাস্তবায়ন করার সঙ্গে সঙ্গে চীনের তিব্বতি জনগণ সারা দেশের জনগণের সঙ্গে সুখের জীবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।