বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালায়ের বিদেশি বিনিয়োগ বিভাগের পরিচালক চোং ছাং ছিং বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পরিবহন ও লজিস্টিক অবরুদ্ধ নয়, মানবসম্পদ অভাব, কাঁচামাল ও সহযোগিতা কোম্পানির কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লেগেছে। এসব কারণে কোম্পানির পুনরায় উৎপাদন শুরু করতেও কিছু দেরি হয়। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনেক পদক্ষেপ নিয়ে শিল্প চেইন পুনরায় সচল করেছে। পুনরায় উৎপাদন শুরুর প্রক্রিয়ায় বিদেশি কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
চোং ছাং ছিং বলেন, শাংহাই সরকার ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শাংহাইয়ের ৭২০টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি কোম্পানি পরিদর্শন করবে ও তাদের উৎপাদন সমস্যা সমাধান করবে। কুয়াংতোং প্রদেশের গভর্নর সরাসরি 'আন্তর্জাতিক কোম্পানির যোগাযোগ ব্যবস্থার' ভূমিকা পালন করছে; লজিস্টিক, শ্রমিক, কাঁচামাল, মহামারী প্রতিরোধসংক্রান্ত সামগ্রী এই চারটি দিক থেকে সমন্বয় ও সেবা জোরদার করেছে; বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও বাণিজ্যিক চেম্বারের সমস্যা সমাধান করেছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি বিনিয়োগ প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে।
চোং ছাং ছিং বলেন, দীর্ঘমেয়াদী ও সামগ্রিক দিক বিবেচনায় সরবরাহ চেইন ও শিল্প চেইনের ওপর মহামারীর প্রভাব স্বল্পমেয়াদী। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ও শিল্প চেইনে চীনের ভূমিকা মহামারীর জন্য পরিবর্তন হবে না। সেই সঙ্গে সরবরাহ চেইন ও শিল্প চেইন বিদেশে স্থানান্তর করা হয়নি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ পরিকল্পনা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী, সার্বিক ও কৌশলগত। মহামারীর প্রভাব অস্থায়ী এবং সীমিত। তবে তাদের জরুরি কর্ম বিন্যাসের সম্ভাবনা আছে। সম্প্রতি চীনে যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সের জরিপ অনুসারে, ৫৫ শতাংশ কোম্পানি মনে করে, এখন ৩ থেকে ৫ বছরের ব্যবসায়িক পরিকল্পনার ওপর মহামারীর প্রভাব হবে দ্রুত; ৩৪ শতাংশ কোম্পানি মনে করে- কোনও প্রভাব পড়বে না। চীনের অন্যান্য জরিপ থেকে দেখা যায়, চীনা অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ভালো উন্নয়ন প্রবণতার কোনও পরিবর্তন হবে না, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রতিযোগিতামূলক প্রাধান্য পরিবর্তন হবে না, অধিকাংশ বিদেশি কোম্পানি চীনে বিনিয়োগের কৌশল ও আস্থা পরিবর্তন করে নি। চীনে বাজার উন্নয়নের ভবিষ্যত সম্পর্কে আশাবাদী অনেক বিদেশি কোম্পানি চীনে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।
বর্তমানে নতুন চীন ও অবাধ বাণিজ্য এলাকার বিদেশি বিনিয়োগের নেতিবাচক তালিকার সংশোধন-কাজ শুরু হয়েছে এবং শিগগিরি তা প্রকাশিত হবে। এতে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে।
চোং ছাং ছিং বলেন, পরে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পূর্বশর্ত হিসেবে কোম্পানিগুলোকে সেবা ও সমর্থন জোরদার করা হবে। তিনি বলেন, সরকার বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে গুরুত্বপূর্ণ ও শীর্ষস্থানীয় বিদেশি কোম্পানি ও এর সংশ্লিষ্ট কোম্পানি পুনরায় উৎপাদন শুরু করায় অগ্রাধিকার দেবে, গাড়ি, ইলেকট্রনিক ইত্যাদি শিল্পের বিদেশি কোম্পানি একসঙ্গে উৎপাদন শুরুর কাজ সমন্বয় করবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারের 'সমর্থন নীতি' চীনা ও বিদেশি কোম্পানি- সবার জন্যই কল্যাণকর হবে। তা ছাড়া, চীন অব্যাহতভাবে উন্মুক্ত নীতি প্রকাশ করবে, চীনা বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ বাড়াবে এবং চীনে বিদেশি কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে আস্থা বাড়াবে। (তুহিনা/তৌহিদ/ছাই)