রোববারের আলাপন-200105
  2020-01-05 18:04:19  cri

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন 'রোববারের আলাপন'। আপনাদের সঙ্গে আছি আলিমুল হকর এবং শিয়েনান আকাশ।

আকাশ: শুভ নবর্বষ! সিন নিয়ান হাও!

আলিম: শুভ নববর্ষ। সিন নিয়ান হাও? আমার উচ্চারণ ঠিক আছে, আকাশ?

আকাশ: হ্যাঁ, বড় ভাই। 'সিন' মানে নতুন, 'নিয়ান' মানে বর্ষ, 'হাও' মানে ভাল। একসাথে শুভ নববর্ষ।

আলিম: সিন নিয়ান হাও!

আকাশ: সিন নিয়ান হাও! বন্ধুরা, আমরা কামনা করি, নতুন বছরে আপনাদের সবাার সুস্থ ও সুখী জীবন। আমাদের এ অনুষ্ঠান নতুন বছরে আপনাদের আরো আনন্দ দিতে সক্ষম হবে বলেও আশা করি।

আলিম: আকাশ, তাহলে আজকের অনুষ্ঠানে আমরা কোন কোন বিষয় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করব?

আকাশ: বড় ভাই, আজকের 'রোববারের আলাপন' হচ্ছে নতুন বছরের প্রথম আসর। এজন্য আমরা কিছু অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প শ্রোতাবন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করব।

আলিম: ঠিক আছে। বন্ধুরা, শুরুতে আমরা একজন ক্রীড়াপ্রেমীর গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।

সংগীত

আলিম: ভোর ৫টায় চীনের হ্য পেই প্রদেশের ছাং চৌ শহরের একটি গ্রুপ হাঁটা শুরু করে। প্রতিদিন এই নির্দিষ্ট সময়ে দলটির সদস্যরা শহরের পার্কে আসেন এবং একসাথে হাঁটা শুরু করেন। এটা তাদের প্রতিদিনের রুটিন। দলটিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন হুইলচেয়ারে বসা একটি লোক। তার নাম ওয়াং চিয়ান কুও। তিনি অনেক আশাবাদী, আন্তরিক ও সহৃদয় ব্যক্তি। তিনি সবসময় তার আশপাশের লোকদেরকে উত্সাহিত করেন। এজন্য তার পরিচিত লোকজন সবাই তাঁকে ডাকেন: 'দ্বিতীয় বড় ভাই' বলে।

ওয়াং চিয়ান কুও-র বয়স ৬২। তিনি ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা পছন্দ করেন। মুষ্টিযুদ্ধ, কুস্তি, সাঁতার, ও বাস্কেটবল তার প্রিয়। তিনি খুব ভালো খেলতেও পারতেন। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তার জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে। ১৯৮৩ সালের একদিন। তখন তিনি ছাং চৌ রেলওয়ে স্টেশানে কাজ করতেন। তাঁর একজন সহকর্মীকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনি তার দুটি পা হারান। তিনি পা হারান ট্রেনের নিচে। শুরুর দিকে তিনি ভাবতেন তার জীবনের আর কোনো অর্থ নেই। তখন তিনি প্রায়ই মন-মরা হয়ে থাকতেন এবং তার মেজাজ খারাপ থাকতো। কিন্তু তার ওয়াং ইউ ফেং সবসময় তাকে সঙ্গ দিতেন ও তার যত্ন নিতেন। স্ত্রী তার সঙ্গে সবসময় কথা বলতেন ও তাকে উত্সাহিত করতে থাকতেন। এ প্রসঙ্গে তার স্ত্রী ওয়াং ইউ ফেং বলেন,

আকাশ: "দুঃখের সেই দিনগুলোতে আমি তাঁকে বলতাম, 'আমরা বাস্তবতাকে মোকাবিলা করব; আমাদেরকে সাহসী হতে হবেই। সামনে যে-কোন কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক না কেন, আমি কখনও তোমাকে ছেড়ে যাব না। আমি সবসময় তোমার পাশে থাকব।' আমি কখনই তার সাথে ঝগড়া করিনি। এরকম আস্তে আস্তে আমি তাকে সাহস যোগাতে থাকি। ধীরে ধীরে সে শান্ত হয়ে যায়।"

আলিম: আসলে, স্ত্রীর উত্সাহ ও সঙ্গ পাওয়ায়, ওয়াং চিয়ান কুও ধীরে ধীরে মনের দুঃখকে জয় করেন। ১৯৮৭ সালের অগাস্ট মাসে, ওয়াং চিয়ান কুও টিভিতে দ্বিতীয় প্রতিবন্ধী গেমসের খবর দেখেন। প্রতিবন্ধীদের খেলার মাঠে দৌঁড়ঝাপ করতে দেখে তিনি বিপুলভাবে উত্সাহিত হন। তিনিও গেমসে অংশ নিতে চাইলেন এবং ক্রীড়ার মাধ্যমে নিজের জীবন পরিবর্তন করার আগ্রহ বোধ করলেন।

পরিবার ও বন্ধুদের সমর্থনে, ওয়াং চিয়ান কুও শটপুট, সাঁতার, ও হুইল চেয়ার রেসিং ইভেন্টের প্রতিযোগিতা করা ঠিক করলেন। শুরু হলো তার কঠোর প্রশিক্ষণ। ১৯৯০ সালে তিনি ছাং চৌ শহরের প্রতিবন্ধী গেমসে অংশ নেন। এতে তিনি সাঁতারে জাতীয় রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। ছাং চৌ শহরের সুপারিশে তিনি ২০০০ সালের হ্য পেই প্রদেশের প্রতিবন্ধী গেমসে অংশগ্রহণ করেন। এতে তিনি দু'টি নতুন জাতীয় রেকর্ড সৃষ্টি করেন।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040