চীন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের নতুন পথ খুঁজছে
  2019-02-01 13:36:11  cri

ফেব্রুয়ারি ১: চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্য বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওয়াশিংটনে শেষ হয়। দু'দিনে দু'পক্ষ দু'দেশের শীর্ষ নেতার আর্জেন্টিনা বৈঠকে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যের নির্দেশনায় বাণিজ্যের ভারসাম্যতা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, মেধাস্বত্ব রক্ষা, সেবা শিল্প, কৃষি এবং চীনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

দু'পক্ষ প্রধানত এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আন্তরিক এবং গঠনমূলক আলোচনা করে। আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়। এ ছাড়া দু'পক্ষ পরবর্তী আলোচনার সময়সূচি ও রোডম্যাপও নির্ধারণ করে।

এই ফলাফল অনেক চেষ্টার পর অর্জিত হয়েছে। চীনের প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে পৌঁছার পর পরই হোয়াইট হাউস স্বাগত জানায়। আলোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা প্রতিনিধি দলের প্রধান, চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হ্য-এর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তিনি আশা করেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর সঙ্গে বৈঠক করতে পারবেন। এসব ইঙ্গিত সবাইকে এই বার্তা দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে এই আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারবে। এবারের আলোচনায় উভয়পক্ষ নিজের চাহিদা আন্তরিকভাবে প্রকাশ করে এবং বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এভাবেই পারস্পরিক উপকারিতার এই গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জিত হয়।

এই ফলাফল চীনের সংকটকে সুযোগে পরিণত করার রাজনৈতিক মেধার প্রতিফলন। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৪০ বছরে চীন সঠিকভাবে 'সংকট' এবং 'সুযোগ'-এর সম্পর্ক উপলব্ধি করেছে এবং উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে নিজের ঝুঁকি মোকাবিলার সামর্থ্য জোরদার করেছে।

তাই ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে, সঠিকভাবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সংঘর্ষ মোকাবিলা করা চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নতুন একটি চ্যালেঞ্জ। এবার চীন-যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় পৌঁছানো সমঝোতা অনুযায়ী, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিজাত পণ্য, জ্বালানি পণ্য, শিল্পজাত দ্রব্য এবং সেবামূলক দ্রব্যের আমদানি বিপুল পরিমাণে বাড়াবে। এটি চীনের শিল্পের কাঠামোর রূপান্তরকে ত্বরান্বিতও করবে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক সংঘর্ষ নিয়ে যাই হোক না কেন, চীন সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করবেই। এর সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য করা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত কিছু দাবি আসলে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পরিকল্পনার একই। চীন সক্রিয় সাড়াও দিয়েছে। চীন এই সুযোগে অর্থনীতির উচ্চ মানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারবে।

অনস্বীকার্য, চীন-যুক্তরাষ্ট্র আর্থ-বাণিজ্যিক সংঘর্ষসহ বিভিন্ন উপাদানের কারণে, বর্তমানে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হ্রাসের চাপ বেড়ে যাচ্ছে। তবে 'চীনের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুযোগের পর্যায়ে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন পর্যায়ে থাকবে'। চীনের উচ্চ পর্যায়ের এমন যাচাই করার ভিত্তি হল: যদিও অর্থনীতির বিশ্বায়ন চাপের সম্মুখীন হচ্ছে, তবে এমন বিশ্বায়ন সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, চীনা অর্থনীতির শক্তি, বিশাল বাজার এবং উন্মুক্তকরণের দৃঢ় আস্থা আছে, এজন্য বিশ্বের অন্য কোনো অর্থনৈতিক গোষ্ঠীকে চীনের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। বর্তমানে চীন অর্থনীতির কাঠামো সুসংহতকরণ, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের সামর্থ্য, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ, সবুজ উন্নয়ন দ্রুততর করার জন্য চেষ্টা করছে। এ সবই চীনের আর্থিক সংঘর্ষ মোকাবিলার আস্থার ভিত্তি।

এবারের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের চাহিদার সতর্ক জবাব দেয়ার কথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, দু'দেশের কার্যকর দ্বিপাক্ষিক বাস্তবায়ন ব্যবস্থা স্থাপন খুব প্রয়োজন। আসলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংঘর্ষের সমাধানে, চীন সবসময় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে আলোচনা করে এবং সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে আসছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এর আগে নিজের কথা অস্বীকার করে, যা খুব উদ্বেগের ব্যাপার। সত্যিকার অর্থে দু'দেশের শীর্ষ নেতার ঐকমত্য বাস্তবায়ন করতে চাইলে দু'পক্ষের উচিত পরস্পরকে সম্মান করা এবং নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা।

(শুয়েই/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040