'চীনা ভাষার আকর্ষণ' প্রতিযোগিতা শুরু
  2018-07-30 15:30:41  cri

 


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন? সুদূর বেইজিং থেকে আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান, আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও টুটুল।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে 'চীনা ভাষার আকর্ষণ' সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা-সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি ও প্রতিযোগিতার প্রবন্ধ তুলে ধরবো। মনোযোগ দিয়ে শুনলে বা পড়লে এখানেই পেয়ে যাবেন প্রতিযোগিতার প্রশ্নোত্তর।

শুরুতে‌ই জানাবো প্রতিযোগিতার বিজ্ঞপ্তি-সম্পর্কিত তথ্য। চীন-বাংলাদেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে চীনা ভাষার প্রতি আগ্রহও বাড়ছে বাংলাদেশের মানুষের। এমন প্রেক্ষাপটে 'সিআরআই' এবং বাংলাদেশের 'আমাদের সময়' পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে 'চীনা ভাষার আকর্ষণ' শীর্ষক সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে ৩০ জুলাই এবং ১০ অগাস্টের আগে প্রতিযোগিতা-সম্পর্কিত ৬টি প্রবন্ধ প্রকাশ হবে আমাদের অনুষ্ঠান, ওয়েবসাইট ও ফেইসবুকে।

প্রতিটি প্রবন্ধের সঙ্গে ১টি বা ২টি প্রশ্ন থাকবে। ১০টি প্রশ্নের উত্তর টিক চিহ্নের মাধ্যমে এবং ১১ নং প্রশ্নটির উত্তর লিখে পাঠাতে হবে। উত্তর পাঠানোর শেষ তারিখ ৩১ অগাস্ট ২০১৮। সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে বিজয়ীদের বেছে নেওয়া হবে। প্রতিযোগিতার বিষয়ে 'সিআরআই' ও 'আমাদের সময়' কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। উত্তর পাঠানোর ইমেইল ঠিকানা: ben@cri.com.cn, ইমেইলের ক্ষেত্রে ফাইলের নাম দিতে হবে china quiz.

প্রথম প্রবন্ধ 'চীনের সরকারি বৃত্তি'

চীনা জনগণ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের পারষ্পরিক সমঝোতা, মৈত্রী বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও বিভিন্ন দেশের বিনিময় ও সহযোগিতা বিকাশ করার উদ্দেশ্যে চীন সরকার নানা ধরনের বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। এভাবে বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও গবেষকদের চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে লেখাপড়া বা গবেষণা করতে সহায়তা দিচ্ছে চীনের সরকার।

চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে জাতীয় বৃত্তি পরিষদ সরকারি বৃত্তি-সম্পর্কিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বহন করে। শিক্ষার্থীর ধরণ হিসেব চীনের সরকারি বৃত্তিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেমন, স্নাতক বৃত্তি, স্নাতকোত্তর বৃত্তি, ডক্টরেট বৃত্তি, চীনা ভাষা শিক্ষার্থী বৃত্তি, সাধারণ বৃত্তি ও উন্নত মানের শিক্ষার্থী বৃত্তি। প্রকল্পের ধরণ হিসেবে চীনের সরকারি বৃত্তিকে ভাগ করা হয়েছে মহাপ্রাচীর বৃত্তি, সেরা ছাত্র বৃত্তি, এইচএসকে পুরস্কার বিজয়ীদের বৃত্তি, বিদেশি চীনা ভাষা শিক্ষকদের জন্য স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ বৃত্তি ও চীনা সংস্কৃতি গবেষণা প্রকল্প ইত্যাদি ভাগে।

চীনের সরকারি বৃত্তি পেলে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা চীনা ভাষায় লেখাপড়া করেন। ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা স্নাতক কোর্স শুরু হওয়ার আগে চীনে এক বছর চীনা ভাষা ও ভাষা-সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান শেখেন এবং পরীক্ষায় পাশ করার পর স্নাতক কোর্স পড়তে শুরু করতে পারেন। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হলে বাধ্যতামূলকভাবে চীনা ভাষা শেখার প্রয়োজন পড়ে না।

এখন চীনের ২৭৯টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বৃত্তি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, কৃষিবিদ্যা, ঔষধ, অর্থনীতি, আইন, ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন ও শিল্পকলাসহ নানা বিষয় রয়েছে। বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে http://www.csc.edu.cn/laihua অথবা http://www.campuschina.org ক্লিক করুন।

বিশ্বব্যাপী চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি প্রচার, কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় সমর্থন, যোগ্যতাসম্পন্ন চীনা ভাষার শিক্ষক ও চীনা ভাষার প্রতিভাবান ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশ্যে চীনের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সদরদপ্তর (হানবান) বিদেশি শিক্ষার্থী, পণ্ডিত ও চীনা ভাষার শিক্ষকদের চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানোর জন্য বৃত্তির প্রচলন করেছে।

এখন চীনের ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের বৃত্তি কোর্স আছে। প্রশিক্ষণ কোর্সের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে চীনা ভাষার আন্তর্জাতিক শিক্ষাদান, চীনা সাহিত্য, চীনের ইতিহাস, চীনের দর্শনশাস্ত্র, চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা, চীনা সংগীত, চীনা নৃত্য ইত্যাদি। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের বৃত্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে শিক্ষার ফি, বাসস্থান খরচ ও চিকিত্সা বিমা ফি। সংশ্লিষ্ট তথ্য জানতে চাইলে আপনি http://cis.chinese.cn ক্লিক করুন।

তাছাড়া, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্প্রসারণ এবং এ দেশগুলোতে চীনা ভাষার শিক্ষকদের জন্য চীনের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সদরদপ্তর বিশেষ করে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের এশীয় দেশগুলোর শিক্ষকদের কোর্স প্রকল্প চালু করেছে।

আপনি যদি চীনে গিয়ে লেখাপড়া করতে আগ্রহী হন তাহলে বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস, বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট ও সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন। যাতে সময়মতো উপরোক্ত সরকারি বৃত্তির তথ্য জানতে পারেন এবং আবেদন করতে পারেন।

চীনের সরকারি বৃত্তির সাহায্যে আপনার চীনে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করুন।

প্রশ্ন:

১। চীনের কতটি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বৃত্তি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত?

ক. ১৫০ খ. ২৭৯ গ. ৩৫০

২। চীনের সরকারি বৃত্তি পেলে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা কোন্ ভাষায় লেখাপড়া করেন?

ক. চীনা খ. ইংরেজি গ. বাংলা

দ্বিতীয় প্রবন্ধ 'চীনা ভাষার সেতু' বিষয়ক প্রতিযোগিতা

বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে চীনের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সদরদপ্তর (চীনের হানবান) ২০০২ সাল থেকে 'চীনা ভাষার সেতু' নামে ধারাবাহিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।

প্রতি বছর 'চীনা ভাষার সেতু' নামে বিদেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা, বিদেশি মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা ও চীনে বিদেশিদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

'চীনা ভাষার সেতু' ধারাবাহিক প্রতিযোগিতায় দুটি অংশ অন্তর্ভুক্ত, একটি হলো বাছাই প্রতিযোগিতা ও অন্যটি চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন দেশে চীনা দূতাবাসের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটগুলো এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে।

'চীনা ভাষার সেতু' বিষয়ক বিদেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতার বাছাই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর জুন মাসের আগে সম্পন্ন হয়। চীনে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা আয়োজনের সময় হচ্ছে জুলাই থেকে অগাস্ট মাস। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত। বিদেশে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, (মাতৃভাষা চীনা নয়, চীনা নাগরিক নয়) এমন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পারেন।

'চীনা ভাষার সেতু' বিষয়ক বিদেশি মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতার বাছাই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের আগে সম্পন্ন হয়। চীনে এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত। বিদেশে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, (মাতৃভাষা চীনা নয়, চীনা নাগরিক নয়) এমন মাধ্যমিক স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পারেন।

প্রতিযোগিতায় লিখিত পরীক্ষা, বক্তৃতা, প্রতিভা প্রদর্শন ও প্রশ্নোত্তর অন্তর্ভুক্ত থাকে। যারা এর আগে বিজয়ী হয়ে চীনে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, তারা পর পর দু'বার একই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন না।

'চীনা ভাষার সেতু' বিষয়ক বিদেশিদের সম্মেলনের বাছাই প্রতিযোগিতা প্রতি বছর জুন মাসের আগে সম্পন্ন হয়, চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা জুন থেকে জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশে জন্ম ও বেড়ে ওঠা (মাতৃভাষা চীনা নয়, চীনা নাগরিক নয়) এমন নাগরিকরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন।

'চীনা ভাষার সেতু' প্রতিযোগিতায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, গ্রুপ মহাদেশ চ্যাম্পিয়ন, ব্যক্তিগত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার, একক পুরস্কার, সেরা পুরস্কার এবং সেরা শিক্ষক পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

২০১৬ সাল পর্যন্ত ১১০টিরও বেশি দেশের কয়েক লাখ শিক্ষার্থী 'চীনা ভাষার সেতু' প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এ প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময় ক্ষেত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্র্যান্ড এবং চীনকে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করার 'সাংস্কৃতিক, মৈত্রী ও মনের সেতুতে' পরিণত হয়েছে।

এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা শেখা ও চীনকে জানার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীরা চীনে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

প্রতিযোগিতাটি টানা ১৭ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যারা 'চীনা ভাষার সেতু' প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো চীনে অধ্যয়ন করছেন, কেউ কেউ চীনে চাকরি করছেন। তাদের ত্বকের রং ভিন্ন, চোখের রং ভিন্ন, তবে সবাই চীনা ভাষা ভালোবাসেন, পছন্দ করেন চীনা সংস্কৃতি। সবাই সুন্দর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য পরিশ্রম করছেন।

প্রশ্ন:

১। 'চীনা ভাষার সেতু' নামে ধারাবাহিক প্রতিযোগিতা কোন সাল থেকে শুরু হয়?

ক. ২০০২ সাল খ. ২০০৫ সাল গ. ২০১৫ সাল

২। চীনের কোন সংস্থা 'চীনা ভাষার সেতু' প্রতিযোগিতা আয়োজন করে?

ক. কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সদরদপ্তর খ. শিক্ষা মন্ত্রণালয়

গ. চীনা দূতাবাস

চীনের সাথে অংশীদারিমূলক সম্পর্ক উন্নত করতে ইচ্ছুক ইউনেস্কোর মহাপরিচালক

সম্প্রতি চীন সফর করেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে অজুলে। যদিও তিনি এর আগে কয়েক বার চীন সফর করেছেন, তবে এবারের সফরের বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। তিনি বলেন,

'এবার আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সফর। কারণ বহুপক্ষবাদের সমর্থক ও অংশগ্রহণকারী চীন। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ ইউনেস্কোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় বেইজিং। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংও ইউনেস্কো'র সদরদপ্তর পরিদর্শন করেছেন। আমি চীনের কয়েকটি এলাকা সফর করেছি। ইউনেস্কো ও চীনের ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আমি কিছু পরিকল্পনা তৈরি করবো।'

তিনি আরো বলেন, চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের সঙ্গে ইউনেস্কোর কার্যক্রমের অনেক মিল রয়েছে। গত কয়েক দশক বছরের মধ্যে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে চীন এবং এমন অভিজ্ঞতা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য তাত্পর্যপূর্ণ। তিনি বলেন,

'বহুমুখী বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির কারণে উচ্চ শিক্ষা উন্নয়নের মাধ্যমে শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে চীন। গত কয়েক দশক বছরের মধ্যে চীন অতুলনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সংস্কার সম্পন্ন করেছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনের অভিজ্ঞতা অন্য দেশকে সাহায্য দিতে সক্ষম। আফ্রিকায় ইউনেস্কোর শিক্ষা ও সংস্কৃতি ব্যবস্থার উন্নয়নে সমর্থন করে বেইজিং।'

চীনের সফল অভিজ্ঞতা নিয়ে নারীদের শিক্ষাগ্রহণ, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অংশীদারি সম্পর্ক, হাই টেক প্রযুক্তি ও এআইসহ চীন ও ইউনেস্কোর সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক উন্নত করা হবে বলে আশা করেন তিনি।

আফ্রিকা-চীন সাংস্কৃতিক বিনিময় আরো গভীরতর হবে বলে আফ্রিকান মেয়ে রুকাদোর প্রত্যাশা

ব্রিক্সভুক্ত দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় দিন দিন বাড়ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় কর্মরত আফ্রিকান মেয়ে ওয়াদেইসোর রুকাদো ২০১৭ সালে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। আজকের অনুষ্ঠানে তাঁর গল্প শোনাবো।

২৫ বছর বয়সী ওয়াদেইসোর রুকাদোর চীনা নাম ওয়াইউহুয়া। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ানচিং ক্লাসের চার জন আফ্রিকান শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনি একজন। ২০১৭ সালের জুন মাসে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ইয়ানচিং ক্লাসের কারণে রুকাদো আফ্রিকা থেকে চীনে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছেন এবং গভীরভাবে চীনকে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন,

'ইয়ানচিং ক্লাসের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন দেশে চীনের সাথে যোগাযোগের জন্য দক্ষ ব্যক্তি প্রশিক্ষণ দেওয়া। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি আফ্রিকার উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার একজন শিক্ষার্থী হিসেবে চীনকে সঠিকভাবে গবেষণা ও বোঝা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রশিক্ষণ কোর্সের কারণে আমি দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদানে নিজের অবদান রাখতে সক্ষম।'

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির ভিত্তিতে চীন ও আফ্রিকান দেশের সাথে সাংস্কৃতিক বিনিময় গভীরতর করা অতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে রুকাদো। তিনি বলেন,

'চীন ও আফ্রিকান দেশের উচিত সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া। জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা না থাকলে তা দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে প্রভাব ফেলে।'

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ইউরোপ ও আমেরিকার তুলনায় আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীদের কাছে চীন আরো বেশি আকর্ষণীয়। আরো বেশি আফ্রিকান শিক্ষার্থী চীনে এসে লেখাপড়া করতে চায়। এ সম্পর্কে রুকাদো বলেন,

'আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনে লেখাপড়ার কোনো নতুন বিষয় নেই, কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে তাদের অনেক মিল রয়েছে। তবে চীনে লেখাপড়া ও জীবন কাটানোর সঙ্গে আমাদের সাধারণ জীবনযাপনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। এমন অভিজ্ঞতা অতি শ্রেষ্ঠ।'

শিক্ষার্থী রুকাদোর চোখে চীন ও আফ্রিকার সম্পর্ক দিন দিন গভীরতর হচ্ছে এবং উন্নয়ন হয়ে উঠছে বহুমুখী। অবকাঠামো নির্মাণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতের সহযোগিতাও জোরদার হচ্ছে। ব্রিক্স ব্যবস্থা ও চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে মনে করেন তিনি।

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, আমাদের অনুষ্ঠানও তাড়াতাড়ি শেষ হবে। নতুন কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য স্বাগত জানাই। এ বিষয়ে নিয়মিত চোখ রাখুন আমাদের এ অনুষ্ঠানে। আগামী সপ্তাহের অনুষ্ঠানে জানবেন আরো নতুন বিষয় ও নতুন প্রশ্নের উত্তর।

প্রিয় শ্রোতা, এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের কাছে চিঠি লিখবেন। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn, caoyanhua@cri.com.cn

রেডিও'র মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে একই দিনে একই সময় আবার কথা হবে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040