প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা এবার শুনুন সিয়াও খ্যর সৃষ্টি করা গান 'তোমার প্রেমের অপেক্ষায় আছি আমি'। গেয়েছেন চেন মিং। এ গানটি সিয়াও খ্যর তিনটি বিখ্যাত গীতিনাট্যের অন্যতম একটির থিম সং।
সিয়াও খ্য গীতিনাট্য অভিনয় করেন
সিয়াও খ্য খুব লাজুক স্বভাবের ছেলে ছিলেন। অপরিচিত কোনো মেয়ের সামনে দাঁড়ালে কথা বলতে পারতেন না। মঞ্চে গান গাওয়ার সময় তার বুক দুরদুর করতো। কিন্তু গীতিনাট্য পরিচালনা ও অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পান। তিনি পপ সংগীত ও গীতিনাট্য সৃষ্টি করার পাশাপাশি সিমফনিতে নানা সুর সৃষ্টির চেষ্টা করেন।
তিনি বলেছেন, 'যদি তুমি টাকা আয় করতে চাও তাহলে মঞ্চ নাটক করো না। থিয়েটার থেকে দূরে থাকো'। কিন্তু তিনি গীতিনাট্য পছন্দ করেন। এ কারণে অনেক সময় ব্যয় করেছেন এবং নিজের থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বিশ বছর ধরে সংগীত জগতে কাজ করছেন। তিনি মনে করেন, গীতিনাট্যের প্রাণ হচ্ছে সংগীত। কোনো সংগীত দর্শকদের মন জয় করতে পারবে কিনা তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিয় শ্রোতা, আপনারা টেলিভিশন নাটক 'রক্তের বন্ধন'এর থিম সং শুনছেন। সিয়াও খ্য এ গানের কথা লিখেছেন এবং সুর করেছেন। তিনি এবং গায়িকা থিয়েন চেন এ গানটি গেয়েছেন। এ গানে বলা হয়েছে, 'তুমি বলো, আমি আরো কত দিন অপেক্ষা করবো। আমার পুরো জীবন তোমাকে দিলে হবে কি? আমাকে বলো, তুমি কত দিনের জন্য চলে যাচ্ছো? আমি পুরো জীবন অপেক্ষা করলে হবে কি? "
সিয়াও খ্য গীতিনাট্য পরিচালনা করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছেন, ইউরোপ ও আমেরিকান দেশগুলো, এমন কী চীনের তাইওয়ান ও হংকংয়ের প্রাথমিক স্কুলেও নাটক বিষয়ে অভিনয়ের ক্লাস আছে। এমন কি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এ বিষয়ে পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু চীনের মূলভূভাগের ছেলেমেয়েদের অভিনয় শেখার সুযোগ খুব কম। তখন তিনি ভাবেন, এ ব্যাপারে কিছু কাজ করা দরকার। সিয়াও খ্য মনে করেন, সঠিক শিক্ষাদানের ধারণা না থাকাই গীতিনাট্য শিক্ষার অভাবের মূল কারণ। ফলে তিনি বৃটেনের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধারণা ও প্রযুক্তি অনুসরণ করে চীনের শিশু গীতিনাট্য সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তিনি গীতিনাট্য বিষয়ক গ্রীষ্মশিবির সংগঠন তৈরি করেন। এ কাজগুলো করে সিয়াও খ্য প্রকৃত আনন্দ পান।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন 'আমরা মনে হয় কোথায় দেখেছি' নামের একটি গান। এ গান হলো 'আমরা বিয়ে করো' নামে টেলিভিশন নাটকের সমাপনী গান। এ গানটি প্রেম কাহিনীর একটি আয়নার মতো। এ গান আমাদের মনে করিয়ে দেয়, বর্তমানে আমাদের কাছে সুখি জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গেয়েছেন ইয়াং চোং ওয়েই এবং ইয়ে পেই।
সিয়াও খ্য ১৯৯৫ সালে বেইজিং রেড স্টার সংগীত ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এরপর তিনি এ কোম্পানির গায়ক গায়িকাদের জন্য অনেক গান তৈরি করেন। তার গানগুলো চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। এখনো কারাওকে সবচেয়ে বেশি গাওয়া গান বলা যায় তার গানগুলোকে।
২০১০ সালে সিয়াও খ্য জ্যাকি চ্যানের 'বড় সৈনিক ও ছোট জেনারেল' নামে সিনেমার সমাপনী গান রচনা করেন। এ গানের নাম 'ক্যানোলা ফুল'। জ্যাকি চ্যান নিজেই এ গান গেয়েছেন। শুনুন গানটি।
সিয়াও খ্য মনে করেন, তার ভাগ্য ভালো। তার আশেপাশের বন্ধুরা সবসময় তাকে সহযোগিতা করেন। তার জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে তার বন্ধুরা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার সহকর্মীরা সকলেই তার ভালো বন্ধু।
সিয়াও খ্য ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, 'ভ্রমণ এবং জীবনের একই নিয়ম। খুব আরামদায়ক ভ্রমণ হলে তা মনে থাকে না। যদি আমি বিমানে করে কোথায় যাই এবং ভালো জায়গায় থাকি, ভালো খাবার খাই, তাহলে এটা ভ্রমণ বলে মনে হয় না। মনে হয় পরিবেশনের জন্য কোথাও যাচ্ছি। এমন ভ্রমণ আমার ভালো লাগে না।
সিয়াও খ্য আর গায়ক মান চিয়াং
এই হলো সিয়াও খ্য। সবসময় নিজের মতো কাজ করেন, নিজের মত থাকেন। সবসময় পছন্দের কাজ করেন। সবসময় সুন্দর সুর সৃষ্টি করেন।
বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষে শুনুন সিয়াও খ্য'র আরেকটি গান। এ গানের নাম 'বিস্ময়'। গেয়েছেন মান চিয়াং।
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এ পর্বের 'সুর ও বাণী' আসরে চীনের বিখ্যাত সুরকার সিয়াও খ্যর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়েছি। তার কয়েকটি গান শুনিয়েছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। (ইয়ু/মান্না)