v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-30 20:26:04    
দেশে দেশে রুদ্ধশ্বাস অলিম্পিক প্রস্তুতি(ছবি)

cri

চীনের অলিম্পিক প্রতিনিধি দল

    ২৫ জুলাই চীনের অলিম্পিক প্রতিনিধি দলের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি হচ্ছে অলিম্পিক ইতিহাসে চীনের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি দল। তারা সবগুলো প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। প্রতিনিধি দলের উপ-প্রধান তুয়েন শি চিয়ে বলেন, '১০৯৯ সদস্যের চীন প্রতিনিধি দল পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ২৮টি বড় ইভেন্টের সবগুলোর মোট ৩৮টি প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। প্রতিনিধি দলে ৬৩৯ জন খেলোয়াড় আছেন। এর মধ্যে ডাইভার কুও চিং চিং, শুটার থান জো লিয়াং এবং বাস্কেটবল খেলোয়াড় লি নান এর আগে চীনের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে পর পর তিন বার আটলান্টা, সিডনি ও এথেন্স অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। ৪৬৯ জন খেলোয়াড় প্রথম বারের মতো অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবেন।'

    যদিও চীনের প্রতিনিধি দল কতগুলো স্বর্ণপদক জয় করবে সে সম্পর্কে কোনো প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয় নি। তবে বহির্বিশ্বের ধারণা, চীনের ক্রীড়া প্রতিনিধি দলের ডাইভিং, ভারোত্তলন, শ্যুটিং, জিমন্যাস্টিকস ও টেবিল টেনিসসহ অনেক ইভেন্টে সোনা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

    স্বাগতিক দেশকে মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন দেশের অলিম্পিক প্রতিনিধি দল ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নিয়েছে।  

তৌফিক হিদায়েত

   ব্যাডমিন্টন হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইভেন্ট। ব্যাডমিন্টনে শক্তিশালী ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া সবাই সেরা খেলোয়াড় পাঠাবে। 'ব্যাডমিন্টন রাজ্য' নামে খ্যাত ইন্দোনেশিয়ার ১১ জন খেলোয়াড় পুরুষ ও নারী একক, দ্বৈত এবং মিশ্র প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। এর মধ্যে এথেন্স অলিম্পিক গেমসের পুরুষ একক ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন তৌফিক হিদায়েতকে ঘিরে বড় প্রত্যাশা রয়েছে। তৌফিক ছাড়া, সোনি দুয়ি কুংকোরো হচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার আরেক শক্তিশালী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। তাঁর বিশ্বরেংকিং পঞ্চম।

    সম্প্রতি মার্কিন অলিম্পিক কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক প্রতিনিধি দলের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় তারকা হচ্ছেন সাঁতারু মাইকেল ফেলপস। তাঁর লক্ষ্য পেইচিং অলিম্পিকে ৮টি স্বর্ণপদক পাওয়া এবং অলিম্পিক ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করা। মজার বিষয় হচ্ছে মার্কিন অলিম্পিক প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে পরস্পরের অনেক আত্বীয়স্বজন আছেন। এর মধ্যে টেনিস খেলোয়াড় ভেনাস উইলিয়ামস ও সেরেনা উইলিয়ামস সবচেয়ে খ্যাতিমান। টাইকোন্ডো দলে লোপেজ পরিবারের চার জন সদস্য রয়েছেন। মার্ক, ডায়ানা ও স্টিভেন লোপেজ এই তিন বোন একসাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। কোচ হচ্ছেন তাঁদের বড় ভাই। মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা চার্লস লি বলেন, 'প্রতিটি দল নির্ধারিত কর্মসূচী অনুসারে প্রশিক্ষণ করছে। তারা পেইচিং পৌঁছানোর পর পেইচিংয়ের নরমাল বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে। আমি জুন মাসে স্টেডিয়ামটি পরিদর্শন করেছি। তখন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। সেখানকার অবস্থা খুব ভালো।'

ভেনাস উইলিয়ামস ও সেরেনা উইলিয়ামস

    শক্তিশালী জার্মান অলিম্পিক প্রতিনিধি দলে ৪৪০ জন খেলোয়াড় আছেন। পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে জার্মান দলটিই সবচেয়ে বড়। জার্মান খেলোয়াড়দের রেসিং বোট, নারী ফুটবল, অ্যাথলেটিকস, জিমন্যাস্টিকস, জুডো ও টেবিল টেনিসসহ নানা ইভেন্টে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিক গেমসের ৭০ কিলোগ্রাম শ্রেণী নারী জুডোতে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া অ্যানেট বমের পেইচিংয়ে আরেকটি পদকের স্বপ্ন আছে। তিনি বলেন, 'আমার কাছে ক্রীড়া ও রাজনীতি পৃথক দুটি জুতার মতো। আমি বিশ্বাস করি, পেইচিং অলিম্পিক গেমস উজ্জ্বল হবে। এথেন্স অলিম্পিক গেমসে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা সুন্দর অলিম্পিক গ্রামে একত্রিত হয়েছিলেন। সবাই অভিন্ন লক্ষ্যে প্রতিযোগিতার জন্য উত্তেজনা বোধ করতো। আমি বিশ্বাস করি, পেইচিং অলিম্পিক গেমসে আবার এমন মনোরম পরিবেশ অনুভব করবো।'

    মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত পেইচিং অলিম্পিক গেমসে আট জন খেলোয়াড় পাঠাবে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন নারী জুডোর রাজকুমারী শেখা মেথা ও টু ওয়ে ফ্লাইং ডিস্ক ইভেন্টের খেলোয়াড় রাজকুমার মোঃ বিন রশিদ আল মাখথুম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব ইব্রাহিম আব্দুল আল-মালেক বলেন, 'আমরা শুটিং প্রতিযোগিতায় পদক অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। এথেন্স অলিম্পিক গেমসে আমরা টু ওয়ে ফ্লাইং ডিস্ক-এ স্বর্ণপদক পেয়েছিলাম। সেই স্বর্ণপদক বিজয়ী আহমেদ আল মাখতুম এবারের অলিম্পিক গেমসেও অংশ নেবেন। পেইচিংয়ে আবার আমাদের পদক পাওয়ার বড় সম্ভাবনা আছে। তা ছাড়া টাইকোন্ডো ও অশ্বারোহণ ইভেন্টেও ভালো ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।'

    এ সব টান টান উত্তেজনাময় খবর ছাড়াও গত সপ্তাহে কিছু দুঃখের ঘটনাও ঘটেছে। যেমন ইরাক অবশেষে পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করে নি। আরো কয়েকজন সেরা খেলোয়াড় আহত হওয়ায় পেইচিং অলিম্পিক গেমস আসতে পারবেন না।

    আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ২৪ জুলাই ইরাককে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ গ্রহণের যোগ্যতা বাতিল ঘোষণা করে। জানা গেছে, এ বছরের মে মাসে ইরাক সরকার ইরাকী অলিম্পিক কমিটি ভেঙ্গে দেয়া এবং ক্রীড়া ও যুব মন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী কমিটিকে পূর্বের অলিম্পিক কমিটির স্থলাভিষিক্ত করে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির নির্বাহী কমিটি ৪ জুন ঘোষণা করে, ইরাক সরকার নিজ দেশের ক্রীড়ার ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করার কারণে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ইরাকের অলিম্পিক কমিটির বিরুদ্ধে সাময়িকভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ইরাকের খেলোয়াড়রা পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার সুযোগ হারিয়েছেন।

    শ্রেষ্ঠ বেশ ক'জন খেলোয়াড়ের অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে না পারার কারণ শারীরিকভাবে আহত হওয়া। পুরুষদের ৫০ কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতার বিশ্ব রেকর্ডধারী, অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড় নাথান ডিকস ২১ জুলাই শারীরিকভাবে চোট পাওয়ার কারণে পেইচিং অলিম্পিক গেমস থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে ধারণা ছিল যে, ডিকস হচ্ছেন পেইচিং অলিম্পিক গেমসে ৫০ কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতার র্স্বণপদকের অন্যতম দাবীদার। তিনি ২০০৭ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে এই ইভেন্টে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। জানা গেছে, গত সপ্তাহে সুইজাল্যান্ডে প্রশিক্ষণের সময় ডিকসের পায়ের আবারো চোট পাওয়ায় অস্ত্রোপচার করতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর সেরে উঠতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস সময় লাগবে। ফলে অবধারিতভাবেই তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসে আসতে পারবেন না। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)