v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-28 16:43:32    
সিরিজ বোমা পররর্তী ভারতের রাজনীতি

cri
    ২৭ জুলাই ভারতের পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিম ভারতের আদমেদাবাদে ২৬ জুলাই রাতে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ৪০জনের বেশি নিহত এবং ১৬০ জন আহত হয়েছেন। এর আগের দিন অর্থাত্ ২৫ জুলাই দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোরে পরপর ৭টি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

    গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ এবং কর্নাটক রাজ্যের রাজধানী ব্যাঙ্গালোর থেকে দু'টি রাজ্যের প্রশাসন পরিচালিত হয়। এ দু'টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। ভারতের এ দু'টি রাজ্যে অর্থনীতি উন্নয়নের গতি সবচেয়ে দ্রুত। গত কয়েক দিনে গুরুতর সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের পর গুজরাটের একজন কর্মকর্তা সাক্ষাত্কারে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ঘটনা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবেলা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে বর্তমানের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি স্থিতিশাল করা যায়। তিনি বলেন

    "এটি একটি গুরুতর ঘটনা। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এটি কঠোর মোকাবিলা করা। এ ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেওয়া জন্য আমি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।

    ভারতের পুলিশ জানিয়েছে, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামের একটি জঙ্গী সংগঠনের কিছু ব্যক্তি ই'মেলের মাধ্যমে এ ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তারা অন্যান্য স্থানেও অব্যাহতভাবে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোরহুমকি দিয়েছে। ভারতের পুলিশ তাদের ওপর গভীরভাবে নজর রাখছে।

    ভারতের প্রেসিডেণ্ট প্রতিভা পাতিল ও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২৬ জুলাই এক বিবৃতিতে এ সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। ২৮ জুলাই মনমোহন সিংয়ের আদমেদাবাদের ঘটনাস্থান পরিদর্শন এবং করার কথা।

    ২৫ ও ২৬ জুলাই ভারতে দু'টি বড় শহরে সংঘটিত ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ সম্পর্কে চীনের সমাজ ও বিজ্ঞান একাডেমীর এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইয়ে হাই লিন মনে করেন, কোন সংস্থা সংগঠন কোন লক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা বলা খুব জটিল। কিন্তু এ থেকে উপলদ্ধি করা যায় যে, কিছু সংগঠন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মির সমস্যা সমাধানে বৈঠক ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টা বিঘ্নিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তিনি বলেন,

    "আমরা দেখছি ভারতে ঘন ঘন সন্ত্রাসী তত্পরতা ঘটছে। ইসলামি চরমপন্থী সংগঠন ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য অঞ্চলেও ঘন ঘন সন্ত্রাসী তত্পরতা চালায়। তাদের লক্ষ্য দু'টি। প্রথমতঃ কাশ্মির সমস্যা। দ্বিতীয়তঃ উপনিবেশ আমল থেকে ভারতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ। গত কয়েক বছরে কাশ্মিরে তত্পর সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো ধারে ধীরে ভারতে সম্প্রসারিত হয়েছে। কাশ্মির সমস্যায় ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি ক্ষুদ্ধ কিছু সংগঠন সন্ত্রাসী তত্পরতা চালিয়ে দু'দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছে। ভারত ও পাকিস্তান যখন শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য চালিয়ে যাচ্ছে এমনির একটি গুরুত্বপূর্ন সময়ে সন্ত্রাসী সংস্থাগুলো আরও সক্রিয় তত্পরতা চালিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া বানচাল করার চেষ্টা চালাবে।

    ভারতে প্রেসিডেণ্ট প্রতিভা পাতিল ও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ নেতৃবৃন্দ তাঁদের বিবৃতিতে জনগণের প্রতি সংযম বজায় রাখা এবং শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সম্পর্কে ইয়ে হাই লিন বলেন, এটি একটি ইতিবাচক সংকেত। এতে কাশ্মির সমস্যা সমাধানে বৈঠক ত্বরান্বিত করার পক্ষে ভারত সরকারের দৃঢ় অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন,

    "এবারের সন্ত্রাসী হামলা ও কয়েক দিন আগে ঘটা হামলার পর ভারত বরাবরের মতো তদন্তের আগেই বা তদন্তের ফলফলের আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তা নয়। এটি একটি ভালো দিক। দু'পক্ষের যৌথভাবে সন্ত্রাস দমনের জন্যেও এটি অনুকূল। সম্প্রতি আফগানিস্তানে ভারতের দূতাবাসও সন্ত্রাসী হামলার মুখ পড়ে। তা নিয়ে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধ অভিযোগ করে নি। এ সব লক্ষণ থেকে পরিস্কার যে, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, যা দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতির জন্য কল্যাণকর হবে।

    ভারত অভ্যন্তরে ও কূটনীতিতে এ বোমা বিস্ফোরণের প্রভাব নিয়ে ইয়ে হাই লিন মনে করেন, ভারত সরকারের ওপরে কিছু চাপ পড়বেই। এর মধ্যে পাকিস্তানের প্রতি দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার দাবিও জানানো হবে। কিন্ত মনমোহন সরকার এ চাপ কাটিয়ে উঠতে পারবে এবং সরকারের নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ ও কূটনৈতিক নীতি বদলাবে না। তিনি বলেন

    পাকিস্তান ও কাশ্মিরের প্রতি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের জন্য মনমোহন সরকারের ওপরে সম্ভবত রাজনৈতিক চাপও আসতে পারে। এ চাপ লাঘব করার জন্য সরকারের সহজ জবাব হচ্ছে, এ হামলাগুলোর পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকলে যুদ্ধবাজরা কোনো অজুহাত খুঁজে পাবে না। মনমোহন সরকার নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ এমনকি দক্ষিণ এশিয়া তার নির্ধারিত নীতিমালা বদলাবে না।"

    বর্তমানে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিশেষজ্ঞ দল আহমেদাবাদে পাঠিয়েছে।সেখানে বোমা বিস্ফোরণের তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের পুলিশ এ ঘটনার তথ্য দিলে ২ হাজার ৪শো মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তাছাড়া, পুলিশের তল্লাশি অভিযানে ৩০জন সন্দেহভাজন গ্রফতার হয়েছে এবং দু'টি বোমা উদ্ধার হয়েছে।